
মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে দেশবাসী ও প্রবাসীদের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। একই সঙ্গে তিনি মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও গণতন্ত্রের পুনরুজ্জীবনের প্রত্যাশা ব্যক্ত করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে একটি বিশেষ স্ট্যাটাস দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘মাতৃভূমি শত্রুমুক্ত হলেও চক্রান্তকারীদের নীলনকশা এখনও চলমান।’
ফেসবুক স্ট্যাটাসের শুরুতে তারেক রহমান বলেন, ‘৯ মাস মুক্তিযুদ্ধের পরে জাতি ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর বিজয় অর্জন করে। আমি এদিনে দেশবাসীসহ প্রবাসী বাংলাদেশীদের জানাই শুভেচ্ছা। সুখ, শান্তি, সমৃদ্ধি ও কল্যাণে ভরে উঠুক তাদের জীবন। এই দিনে ৯ মাসব্যাপী স্বাধীনতাযুদ্ধের সমাপ্তি ঘটে এবং বাংলাদেশ নামের একটি স্বাধীন রাষ্ট্রের সৃষ্টি হয়। বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধে যারা শহীদ হয়েছেন সেই সব বীর মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদদের জানাই গভীর শ্রদ্ধাঞ্জলি।’
তারেক রহমান স্বাধীনতাযুদ্ধের বীর শহীদদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন এবং বিদেশি শৃঙ্খল থেকে মুক্ত করতে যেসব মা-বোন সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকার করেছেন, তাঁদের প্রতি সশ্রদ্ধ সালাম জানান। তিনি উল্লেখ করেন, ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ স্বাধীনতার ঘোষক প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের ডাকে শুরু হওয়া স্বাধীনতাযুদ্ধ ওই বছর ১৬ ডিসেম্বর বিজয় অর্জিত হয় পাক হানাদার বাহিনীকে পরাজিত করার মাধ্যমে।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তাঁর বার্তায় বলেন, শোষণমুক্ত ও সামাজিক ন্যায়বিচার ভিত্তিক গণতান্ত্রিক নীতিমালার ওপর বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার প্রত্যয় ছিল নতুন রাষ্ট্রের মর্মমূলে। কিন্তু 'অমানবিক ফ্যাসিস্ট গোষ্ঠী' সেই প্রত্যয়কে মাটিচাপা দিয়ে সর্বনাশা দুঃশাসন জনগণের ওপর চাপিয়ে দেয় এবং বহুদলীয় গণতন্ত্রের অগ্রযাত্রা থামিয়ে দেয়। তিনি বলেন, ‘১৯৭১-এ আমাদের প্রিয় মাতৃভূমি শত্রুমুক্ত হলেও চক্রান্তকারীদের নীলনকশা এখনও চলমান। আগ্রাসী শক্তি আমাদের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব অবজ্ঞা করার ঔদ্ধত্য দেখায়। ওই অপশক্তির এদেশীয় এজেন্টরা আমাদের অর্জিত স্বাধীনতা বিপন্ন করার চক্রান্তজাল বুনে চলেছে।’
তারেক রহমান বলেন, ক্ষমতা জবরদখলকারীরা জনগণের ওপর নৃশংস আক্রমণ চালিয়ে অসংখ্য মানুষকে হত্যা ও অদৃশ্য করে এবং লাখ লাখ মানুষকে মিথ্যা মামলায় কারারুদ্ধ করে। তিনি সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার অন্যায়ভাবে কারাবন্দী থাকার বিষয়টিও তুলে ধরেন।
ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, ‘ফ্যাসিস্টদের হাত থেকে প্রিয় মাতৃভূমির স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষা এবং গণতন্ত্রকে বিপদমুক্ত করতে মহান বিজয় দিবসের প্রেরণায় বলীয়ান হয়ে আমাদের জাতীয় ঐক্য গড়ে ওঠে এবং ২৪ এর জুলাই-আগস্টের ছাত্র-জনতার দুনিয়া-কাঁপানো আন্দোলনে তারা পরাজিত হয়। পতন হয় ইতিহাসের এক নিষ্ঠুরতম একনায়কের। তিনি বলেন, ‘দেশে আবার স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের সুরক্ষা ও বহুদলীয় গণতন্ত্রের পুনরুজ্জীবনের প্রত্যাশা জেগে উঠে।’
তারেক রহমান তাঁর বার্তায় একটি বৈষম্যহীন বাংলাদেশের জন্য এই বিজয়ের দিনে সবার প্রতি আহ্বান জানান। তিনি বলেন, এই মুহূর্তে নির্বিঘ্নে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে জনকল্যাণমুখী জবাবদিহিমূলক সরকার গঠনের পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে। সবশেষে তিনি বলেন, আমাদের অঙ্গীকার হোক—আমরা বিভাজন ভুলে, হিংসা ভুলে মানুষ হিসেবে মানুষের পাশে থাকব। মহান বিজয় দিবসে আমি দেশবাসী সবার প্রতি সেই আহ্বান জানাই। বিজয় দিবস উপলক্ষে আমি সব কর্মসূচির সাফল্য কামনা করছি। আল্লাহ্ হাফেজ, বাংলাদশ জিন্দাবাদ।