News update
  • Four Rare Snow Leopards Spotted on Pakistan’s Northern Peaks     |     
  • Gold becomes pricier than ever in Bangladesh      |     
  • Bangladesh mourns Pope Francis’ death; Yunus pays tribute     |     
  • Bangladesh Railway hospitals to open doors to general public     |     
  • US-Bangla launches direct flights from Dhaka to Riyadh     |     

পাহাড়ে শুরু হলো বর্ষবরণের বর্ণাঢ্য আয়োজন ‘বৈসাবি’

গ্রীণওয়াচ ডেস্ক শিল্প-কারুশিল্প 2025-04-12, 2:09pm

dferwrqw-8c0def24a6fa2dbdf6756fd5933ff55f1744445347.jpg




সবেমাত্র পূর্ব আকাশে সূর্য উঠেছে। আর এরই মধ্যে রাঙ্গামাটির কেরানী পাহাড় এলাকায় কাপ্তাই হ্রদের তীরে হাজির হয়েছেন শত-শত পাহাড়ি তরুণ-তরুণী। ঐতিহ্যবাহী পিনন-হাদির পোশাকে তরুণী এবং ধুতি-পাঞ্জাবি গায়ে দিয়ে হাতে ফুল, পাতা নিয়ে তরুণরা ছুটে চলছে কাপ্তাই হ্রদের তীরে। তীরে গঙ্গা মায়ের উদ্দেশ্যে ফুল উৎসর্গ করে কলা পত্র করে সেই ফুল পানিতে ভাসিয়ে দিচ্ছেন তারা।

ফুল ভাসিয়ে বৈসাবি’র আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়েছে পাহাড়ে। আনন্দ, উচ্ছ্বাস ও সম্প্রীতির বার্তা নিয়ে রাঙামাটিতে কাপ্তাই হ্রদের জলে ভাসানো হলো বিজুর ফুল। আর এই ফুল ভাসানোর মধ্য দিয়ে শনিবার (১২ এপ্রিল) সকালে শুরু হলো তিন দিনব্যাপী পাহাড়ের ক্ষুদ্র-নৃগোষ্ঠীদের সবচেয়ে বড় সামাজিক অনুষ্ঠান বৈসাবির মূল আনুষ্ঠানিকতা।

এ সময় কাপ্তাই হ্রদের পানিতে ফুল ভাসিয়ে নতুন বছরের জন্য শুভকামনা জানিয়ে গঙ্গা দেবীর নিকট প্রার্থনা করে পাহাড়ি তরুণ-তরুণীরা।

শুধু কেরানী পাহাড়ে নয়; জেলার বিভিন্ন স্থানে পাহাড়িরা ফুল ভাসিয়ে দিনটি শুরু করেছেন। পানিতে ফুল ভাসিয়ে নিজ পরিবার এবং দেশ তথা সমগ্র জীবের মুক্তির জন্য গঙ্গা দেবীর নিকট প্রার্থনা করা হয়। পানিতে ফুল ভাসিয়ে পুরনো বছরের দুঃখ বেদনাই যেনো ভাসিয়ে দিয়ে নতুন দিনের সম্ভাবনার আলো জ্বালান পাহাড়ের বাসিন্দারা। পানিতে ফুল ভাসিয়ে পুরনো দিনের বেদনা ভুলে নতুন দিনের প্রত্যয়ের কথা জানায় ফুল ভাসাতে আসা পাহাড়ি তরুণ-তরুণীরা।

সাবেক সংসদ সদস্য ঊষাতন তালুকদার বলেন, কাল বছরের শেষ দিন চৈত্র সংক্রান্তিতে পাঁজন আতিথেয়তা এবং পরের দিন নববর্ষে বিহারে বিহারে প্রার্থনা অনুষ্ঠিত হবে। এছাড়া বছরের প্রথম দিন জলকেলির মাধ্যমে মারমারা সাংগ্রাই উৎসব উদযাপন করবে। বৈসাবি উপলক্ষে গত দশ দিন ধরে চলছে মেলা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, ঐতিহ্যবাহী খেলাধুলাসহ আরো নানান আয়োজন। যা আরও এক সপ্তাহ পর্যন্ত চলবে বলে জানান তিনি।

উৎসবে আসা সিদ্ধার্থ চাকমা নামে একজন বলেন, অতীতের ভুলভ্রান্তির জন্য জলবুদ্ধর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করে আগামী বছর সুখে শান্তিতে থাকার প্রার্থনা জানিয়ে ফুলবিজু উদ্যাপন করেছি।

মিনতি চাকমা নামের আরেকজন বলেন, ভোরে উঠে বিভিন্ন স্থান থেকে ফুল সংগ্রহ করে নদীতে জলবুদ্ধ ও মা গঙ্গার উদ্দেশ্য ফুল নিবেদন করে অতীতে ভুল করে থাকলে ক্ষমা প্রার্থনা করে এবং আগামী বছর সুখে শান্তিতে থাকার জন্য আশীর্বাদ চেয়ে আজকে ফুলবিজুর আয়োজনে অংশ নিয়েছি। প্রতিবছর এভাবেই নদীতে এসে বিজু উৎসব শুরু হয়।

উৎসবে অংশ নেওয়া নাজিব তঞ্চঙ্গ্যা নামের একজন বলেন, বান্দরবানে বসবাসরত চাকমা ও তঞ্চঙ্গ্যা সম্প্রদায় প্রতিবছরের ন্যায় এ বছরও সাঙ্গু নদীতে ফুল দিয়ে বিজু-ফুল বিষু উদ্যাপন করছেন।

বান্দরবান, রাঙ্গামাটি ও খাগড়াছড়ি—এই তিন পার্বত্য জেলায় বসবাসরত ১১টি জাতিগোষ্ঠীর (চাকমা, মারমা, ত্রিপুরা, তঞ্চঙ্গ্যা, চাক, ম্রো, খুমী, খেয়াং প্রমুখ) মধ্যে এটি সবচেয়ে বড় সামাজিক উৎসব। উৎসবকে কেন্দ্র করে পাহাড়ি জনপদে বইছে আনন্দের হাওয়া।

এ ছাড়াও বান্দরবানের সাত উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন ও গ্রামে সপ্তাহব্যাপী নানা আয়োজনে মুখর থাকবে পার্বত্য চট্টগ্রামের পাহাড়ি জনপদ।আরটিভি