
নন-লাইফ বীমা খাতে আর কোনো ব্যক্তি বীমা এজেন্ট থাকবে না বলে জানিয়েছে বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ)। সেই সঙ্গে এই খাতে শৃঙ্খলা জোরদার, স্বচ্ছতা বৃদ্ধি ও পেশাদারিত্ব নিশ্চিত করতে উন্নয়ন কর্মকর্তাদের নির্ধারিত পে-স্কেল অনুযায়ী বেতন দিতে সার্কুলার জারি করেছে আইডিআরএ।
মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) আইডিআরএ’র নির্বাহী পরিচালক (নন-লাইফ) মনিরা বেগম স্বাক্ষরিত সার্কুলারটি এ সংক্রান্ত একটি সার্কুলার জারি করা হয়। যা আগামী ১ জানুয়ারি ২০২৬ থেকে কার্যকর হবে।
সার্কুলারে বলা হয়েছে, নন-লাইফ বীমা খাতে ব্যক্তি বীমা এজেন্টদের লাইসেন্স স্থগিত করা হয়েছে। ফলে ২০২৬ সালের ১ জানুয়ারি থেকে নন-লাইফ বীমা ব্যবসায় কোনো ব্যক্তি এজেন্টের মাধ্যমে পলিসি বিক্রি করা যাবে না। বাংলাদেশ ইন্স্যুরেন্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিআইএ) সুপারিশ, নন-লাইফ বীমা কোম্পানিগুলোর সঙ্গে অনুষ্ঠিত সভার সিদ্ধান্ত এবং ব্যক্তি এজেন্ট লাইসেন্স স্থগিতের প্রস্তাবের ভিত্তিতে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
আইডিআরএ জানিয়েছে, যেহেতু ব্যক্তি এজেন্টদের কোনো বৈধ লাইসেন্স কার্যকর থাকবে না, তাই কোনো নন-লাইফ বীমা কম্পানি ব্যক্তি এজেন্টকে কমিশন দিতে পারবে না।
একই সঙ্গে বীমা আইন, ২০১০-এর ৫৮(১) ধারা অনুযায়ী, বীমা এজেন্ট ছাড়া অন্য কাউকেও কমিশন বা অন্য কোনো নামে পারিশ্রমিক কিংবা পারিতোষিক দেওয়া যাবে না।
নতুন সার্কুলারে উন্নয়ন কর্মকর্তাদের বেতন-ভাতা প্রদানের ক্ষেত্রেও কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, উন্নয়ন কর্মকর্তাদের বেতন, ভাতা ও অন্যান্য সুবিধা সংগৃহীত প্রিমিয়ামের শতকরা হারে নির্ধারণ বা প্রদান করা যাবে না। চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ ছাড়া অন্যান্য সব উন্নয়ন কর্মকর্তাকে সংশ্লিষ্ট বীমা প্রতিষ্ঠানের নির্ধারিত পে স্কেল অনুযায়ী নিয়োগপত্র দিতে হবে এবং সে অনুযায়ী নিয়মিত বেতন পরিশোধ করতে হবে।
এ ছাড়া, সব পর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা ও অন্যান্য সুবিধা আইডিআরএ’র পূর্বে জারি করা সার্কুলার (নন-লাইফ: ৬৪/২০১৯) অনুযায়ী ব্যবস্থাপনা ব্যয়ের জন্য নির্ধারিত ব্যাংক হিসাব থেকে সরাসরি নিজ নিজ ব্যাংক হিসাবে স্থানান্তর বা একাউন্ট পে-চেকের মাধ্যমে পরিশোধ করতে হবে।
উন্নয়ন কর্মকর্তাদের বেতন-ভাতা ও সুবিধা সংক্রান্ত বিস্তারিত তথ্য সংবলিত ত্রৈমাসিক প্রতিবেদন নিয়মিতভাবে আইডিআরএ’র কাছে জমা দেওয়ার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে। ২০২৬ সালের জানুয়ারি মাস থেকে (অক্টোবর–ডিসেম্বর ২০২৫ ত্রৈমাসিক প্রতিবেদনসহ) প্রতি ত্রৈমাসিক শেষ হওয়ার ১০ দিনের মধ্যে নির্ধারিত ছকে এই প্রতিবেদন জমা দিতে হবে।
তবে এসব বিধিনিষেধ ব্যাংকাসুরেন্স পরিচালনাকারী ব্যাংক ও ইন্স্যুরটেক পরিচালনাকারীদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে না বলে সার্কুলারে উল্লেখ করা হয়েছে। একই সঙ্গে এ বিষয়ে পূর্বে জারি করা কয়েকটি সার্কুলার ও স্মারকের নির্দেশনা বাতিল করা হয়েছে।
আইডিআরএ বলছে, নন-লাইফ বীমা গ্রাহকদের স্বার্থ সংরক্ষণ, বীমা কোম্পানিগুলোর আর্থিক ভিত্তি শক্তিশালী করা এবং সামগ্রিকভাবে বীমা খাতের বৃহত্তর স্বার্থ রক্ষার লক্ষ্যেই এ নতুন নির্দেশনা জারি করা হয়েছে।