News update
  • Vested quarter fuelling chaos to impose new fascism: Fakhrul     |     
  • Hadi’s namaz-e-janaza at 2:30pm Saturday     |     
  • Jashore’s Gadkhali blooms with hope; flowers may fetch Tk4 bn      |     
  • Dhaka’s air quality 6th worst in the world this morning     |     
  • Body of Osman Hadi Returns to Dhaka From Singapore Late     |     

তীব্র শীতে রংপুরে ৬ দিনে ১৬ শিশুর মৃত্যু

গ্রীণওয়াচ ডেস্ক রোগবালাই 2024-01-14, 12:29am

image-151515000-600x337-94898a1ee53ee5a45a61d00f2a9d97521705170548.jpg




গত ছয় দিনে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ১৬ শিশুর মৃত্যু হয়েছে। একই সময়ে মারা গেছেন বয়স্ক ছয় জন। ডায়রিয়া, নিউমোনিয়া, ব্রঙ্কিওলাইটিস, অ্যাজমা ও শ্বাসকষ্টসহ শ্বাসতন্ত্রের বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যা স্বাভাবিক চেয়ে দুই-তিনগুণ বেড়েছে।

শনিবার (১৩ জানুয়ারি) রংপুরে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আবার শৈত্যপ্রবাহের সঙ্গে পড়ছে ঘন কুয়াশা ও ঠাণ্ডা বাতাস।

তবে হাসপাতালের শিশু বিভাগের রেজিস্টার খাতায় ঠান্ডাজনিত রোগে মৃত্যুর কোনও তথ্য নেই। হাসপাতালের পরিচালক বলেছেন, এটি হাসপাতালে স্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনা।

শিশু বিভাগের দুটি ওয়ার্ডের সূত্রের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, হাসপাতালের তিনতলার ৯ ও ১০ নম্বর শিশু ওয়ার্ডে ৮০ শয্যার বিপরীতে শনিবার (১৩ জানুয়ারি) বিকাল পর্যন্ত ভর্তি আছে তিন শতাধিক শিশু। কোনও কোনও বেডে তিন থেকে চার জন শিশু রোগীকে রাখা হয়েছে। শয্যা সংকটের কারণে অনেক শিশুকে হাসপাতালের মেঝে ও বারান্দায় রেখে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। ডায়রিয়া রোগীদের আলাদা রাখার জন্য ১০টি শয্যা বরাদ্দ আছে। এর বিপরীতে রোগী ভর্তি আছে ৪০ জনের বেশি। দুটি ওয়ার্ডের বেশিরভাগ শিশু জ্বর-সর্দি, ডায়রিয়া, নিউমোনিয়া ও শ্বাসকষ্টসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত। এসব ওয়ার্ডে গত ছয় দিনে ১৬ শিশুর মৃত্যু হয়েছে। তাদের অধিকাংশই মারা গেছে ঠান্ডাজনিত রোগে। পাশাপাশি মেডিসিন ওয়ার্ডে ছয় বয়স্ক ব্যক্তি শ্বাসকষ্টজনিত রোগে মারা গেছেন।

দেখা গেছে, মেডিসিন, শিশু ওয়ার্ডসহ সব কটি ওয়ার্ড রোগীতে পরিপূর্ণ। এর মধ্যে শিশু ওয়ার্ডে শয্যা না পেয়ে অধিকাংশ রোগী মেঝেতে চিকিৎসা নিচ্ছেন। একইভাবে হাসপাতালের বহির্বিভাগে রোগীদের ভিড় দেখা গেছে। তাদের মধ্যে বেশিরভাগই শিশু ও বয়স্ক ব্যক্তি।

হাসপাতাল সূত্র জানায়, আন্তবিভাগ ছাড়াও বহির্বিভাগে প্রতিদিন চিকিৎসা নিচ্ছে গড়ে তিন শতাধিক শিশু। শিশু ওয়ার্ডে জায়গা না থাকায় মেঝেতে চিকিৎসা নিতে হচ্ছে রোগীদের। শীতজনিত রোগে আক্রান্ত শত শত শিশুকে নিয়ে তাদের অভিভাবকরা হাসপাতালের বহির্বিভাগে দীর্ঘ লাইন ধরে অপেক্ষা করছেন।

বহির্বিভাগের কর্তব্যরত দুজন চিকিৎসক জানিয়েছেন, হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে শয্যা সংকট থাকায় গুরুতর অসুস্থ ছাড়া অন্যদের ব্যবস্থাপত্র দিয়ে ফিরিয়ে দিচ্ছেন।

বহির্বিভাগের সামনে লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা একাধিক রোগীর স্বজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আক্রান্ত শিশুদের বেশিরভাগই জ্বর-সর্দি, ডায়রিয়া, নিউমোনিয়া ও শ্বাসকষ্টসহ বিভিন্ন রোগে ভুগছে। গত কয়েকদিন ধরে গুরুতর অসুস্থ হওয়ায় তাদের চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নিয়ে এসেছেন স্বজনরা।

শিশু বিভাগে দিনে কত শিশুর মৃত্যু হচ্ছে জানতে চাইলে ৯ এবং ১০ নম্বর শিশু ওয়ার্ডের কর্তব্যরত দুই চিকিৎসক জানিয়েছেন, হাসপাতালের পরিচালকের অনুমতি ছাড়া কোনও তথ্য সাংবাদিকদের দিতে পারবেন না তারা। এ নিয়ে পরিচালকের সঙ্গে কথা বলার অনুরোধ জানিয়েছেন এই দুই চিকিৎসক।

শীতজনিত রোগে গত ছয় দিনে ১৬ শিশুর মৃত্যু হয়েছে কিনা জানতে চাইলে হাসপাতালের পরিচালক ডা. মোহাম্মদ ইউনুস আলী বলেন, প্রতিদিন হাসপাতালে বিভিন্ন রোগে ২০ থেকে ২৫ জন রোগী চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। এগুলো স্বাভাবিক মৃত্যু। মেডিসিন ওয়ার্ডের মৃত্যুগুলোও স্বাভাবিক। শীতজনিত রোগে ছয় দিনে ১৬ শিশুর মৃত্যু হয়েছে, এটি নির্দিষ্ট করে বলার সুযোগ নেই। এসব মৃত্যুর তথ্য সংরক্ষণ করা হয় না, এজন্য আমাদের কাছে সুনির্দিষ্ট তথ্যও নেই।

ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে দিনে শত শত শিশু রোগী হাসপাতালে আসছে জানিয়ে ডা. মোহাম্মদ ইউনুস আলী বলেন, এর মধ্যে বেশিরভাগ রোগীকে বহির্বিভাগে চিকিৎসা দিয়ে বাড়িতে পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে। যাদের অবস্থা গুরুতর তাদের ভর্তি নেওয়া হচ্ছে। শিশু ওয়ার্ডগুলোতে শয্যার চেয়ে রোগী বেশি হওয়ায় এখন ভর্তি নেওয়া যাচ্ছে না। এর মধ্যে অনেকে সুস্থ হয়ে উঠেছে। এই সময়ে যে কেউ ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত হতে পারে। এসব রোগ থেকে রেহাই পেতে গরম কাপড় ব্যবহার, যতটা সম্ভব ঠান্ডা পরিবেশ এড়িয়ে চলা জরুরি। শিশুদের ঠান্ডা বাতাস থেকে দূরে রাখা, সেইসঙ্গে ধুলাবালু থেকে যতটা সম্ভব দূরে রাখতে হবে। শৈত্যপ্রবাহ চলাকালে শিশুদের ঘর থেকে কম বের করতে হবে। ঘরের মধ্যে ঠান্ডা বাতাস যেন না ঢোকে, সেদিকেও লক্ষ রাখতে হবে।

আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, গত কয়েক দিন ধরেই উত্তরাঞ্চলের জেলাগুলোতে তীব্র শীত ও ঠাণ্ডা বাতাস বইছে। গত চার দিন ধরে অধিকাংশ সময়ই আকাশ থাকছে মেঘাচ্ছন্ন। একই সঙ্গে নামছে তুষারের মতো কুয়াশা। দেখা নেই সূর্যের। ঠাণ্ডায় কাহিল হয়ে পড়েছে রংপুরের মানুষ। শীতের এমন অবস্থা জানুয়ারি মাসজুড়েই থাকবে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।

আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, আকাশ কিছুটা মেঘলা থাকলেও আগামী তিন দিন আবহাওয়া শুষ্ক থাকতে পারে। এ সময় মধ্যরাত থেকে সকাল পর্যন্ত সারা দেশে মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা পড়তে পারে, যা দুপুর পর্যন্তও থাকতে পারে। সারা দেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রার হ্রাস-বৃদ্ধিসহ দেশের কোথাও কোথাও দিনে ঠাণ্ডা পরিস্থিতি থাকতে পারে বলেও জানানো হয়েছে।

রংপুর অফিসের আবহাওয়াবিদ মো. মোস্তাফিজার রহমান জানান, গত কয়েক দিন ধরে তীব্র শীত পড়ছে রংপুরসহ উত্তরাঞ্চলে। শনিবার রংপুরে তাপমাত্রা এই সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১০ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আবার বইছে শৈত্যপ্রবাহের সঙ্গে পড়ছে ঘন কুয়াশা ও ঠাণ্ডা বাতাস। তবে কয়েক দিনের মধ্যে ঠাণ্ডা কমে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তথ্য সূত্র আরটিভি নিউজ।