News update
  • Govt to amend CrPC to protect rights during arrest, quizzing     |     
  • Freedom of Information Under International Pressure      |     
  • Dhaka becomes 1st in South Asia to join UN Water Convention     |     
  • UNRWA made an objective of the war: Philippe Lazzarini     |     
  • Guterres Urges Iran, Israel to Fully Respect Fragile Ceasefire     |     

ইউনিলিভার বাংলাদেশ ও অরেঞ্জ কর্নারস বাংলাদেশ-এর ‘ইকোসিস্টেম ইন অ্যাকশন’ আয়োজন

গ্রীণওয়াচ ডেস্ক ব্যবসায় 2025-06-25, 7:41pm

img_20250625_194014-67a2641b845bdffddce553c0f5fb69161750858916.jpg




ইউনিলিভার বাংলাদেশ লিমিটেড (ইউবিএল) এবং অরেঞ্জ কর্নারস বাংলাদেশ (ওসিবি) যৌথভাবে “ইকোসিস্টেম ইন অ্যাকশন: পাওয়ারিং ফিউচার বিল্ডারস” শীর্ষক একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে। এতে অরেঞ্জ কর্নারস বাংলাদেশ-এর সহায়তা পাওয়া তরুণ উদ্যোক্তারা, বেসরকারি খাত, সরকার, দূতাবাস এবং উন্নয়ন সংস্থার প্রতিনিধিরা তরুণদের উদ্ভাবনী উদ্যোগ ও ব্যবসায় আরও সহায়তা ও সম্পৃক্ততা নিশ্চিত করার উদ্দেশ্যে একত্রিত হন।

ঢাকার ওয়েস্টিন হোটেলে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে তরুণ উদ্যোক্তারা বিনিয়োগকারী, কর্পোরেট নেতৃত্ব এবং উদ্যোক্তা সহায়তাকারী বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সরাসরি কথা বলার সুযোগ পান। এতে করে তারা ভবিষ্যতে বিনিয়োগ, পরামর্শ ও বাজারে প্রবেশের জন্য প্রয়োজনীয় যোগাযোগ গড়ে তুলতে পেরেছেন।

অনুষ্ঠানের মূল আকর্ষণ ছিল একটি আলোচনা পর্ব, যেখানে অংশ নেন বিকাশ-এর প্রতিষ্ঠাতা ও সিইও কামাল কাদীর এবং ইউনিলিভার বাংলাদেশ-এর চেয়ারম্যান ও ম্যানেজিং ডিরেক্টর জাভেদ আখতার। আলোচনাটি সঞ্চালনা করেন সাজিদা ফাউন্ডেশন-এর ইমপ্যাক্ট পার্টনার্স বিভাগের প্রধান সারা ইকবাল।

আলোচনায় উঠে আসে নেতৃত্ব, ব্যবসার প্রবৃদ্ধি এবং বাংলাদেশে উদ্যোক্তা হিসেবে টিকে থাকার বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ। কীভাবে বড় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, নিয়ন্ত্রক সংস্থা ও অংশীদারদের সঙ্গে আস্থা গড়ে তোলা যায়, অনিশ্চয়তা সামলে পথ খুঁজে নেওয়া যায় এবং কীভাবে বেসরকারি খাতের সহযোগিতায় একটি ইতিবাচক প্রভাব তৈরিকারী ব্যবসাকে বৃহৎ পরিসরে এগিয়ে নেওয়া সম্ভব- এসব বিষয়ে বক্তারা বিস্তারিত আলোচনা করেন।

অনুষ্ঠানের একটি উল্লেখযোগ্য আকর্ষণ ছিল “ট্রেইলব্লেজার গ্যালারি”, যেখানে অরেঞ্জ কর্নারস-এর পোর্টফোলিওভুক্ত পাঁচটি উদ্ভাবনী স্টার্টআপ- বিডি রিসাইকেল টেকনোলজিস, ড্রিপ ইরিগেশন বিডি, পলকা ফ্লেক্স, অ্যাকোয়ালিংক বাংলাদেশ এবং ওয়াট মোটরস তাদের অসাধারণ ও নতুন ধরনের সমাধান উপস্থাপন করে। এই উদ্যোগগুলো জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলা, কৃষি প্রযুক্তি, পরিবেশবান্ধব যাতায়াত এবং বৃত্তাকার অর্থনীতির মতো গুরুত্বপূর্ণ খাতে কাজ করছে। অন-ডিমান্ড রিসাইক্লিং সেবা, সৌরচালিত সেচ ব্যবস্থা, সহজে পচনশীল ফ্লেক্স ব্যানার, পরিবেশ পর্যবেক্ষণের যন্ত্র এবং হালকা ইলেকট্রিক যানবাহনের মতো নানা উদ্ভাবনী সমাধানের মাধ্যমে এই তরুণ উদ্যোক্তারা সৃজনশীলতা ও দায়িত্বশীলতার মাধ্যমে জরুরি সমস্যাগুলোর টেকসই সমাধান খুঁজে বের করার চেষ্টা করছেন।

অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি বাংলাদেশ অন্তবর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার আন্তর্জাতিক বিষয়ক বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী সমাজের উপকারে আসে এবং দেশের অর্থনীতিকে শক্তিশালী করে- এমন সমাধান তৈরি করার জন্য অরেঞ্জ কর্নারস-এর উদ্যোক্তাদের আন্তরিক অভিনন্দন জানান। তিনি তাদের নিষ্ঠা ও উদ্যোগকে প্রশংসা করেন।

দেশের টেকসই উন্নয়ন ও উদ্ভাবনের ক্ষেত্রে তরুণ উদ্যোক্তাদের ভূমিকা সরকার গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করে উল্লেখ করে তিনি জানান, অরেঞ্জ কর্নারস-এর মতো উদ্যোগগুলো দেশের সামগ্রিক অর্থনৈতিক লক্ষ্য ও তরুণ উন্নয়ন পরিকল্পনার সঙ্গে মানানসই।

তিনি বিভিন্ন খাতের মধ্যে আরও ঘনিষ্ঠ সহযোগিতার আহ্বান জানিয়ে বলেন, সরকার, বেসরকারি খাত, উদ্যোক্তা ও উদ্যোক্তা সহায়ক সংগঠনগুলোর একসঙ্গে কাজ করাই বাংলাদেশকে তার পূর্ণ সম্ভাবনায় পৌঁছাতে সাহায্য করবে।

বাংলাদেশে নিযুক্ত নেদারল্যান্ডসের রাষ্ট্রদূত আন্দ্রে কারস্টেন্স বলেন, “বাংলাদেশের তরুণরা নতুন ভাবনায় ভরপুর, প্রযুক্তি-বান্ধব এবং সামাজিক সমস্যা সমাধানের আগ্রহে এগিয়ে আসছে, যা দেশের উন্নয়নে বড় ভূমিকা রাখতে পারে। তবে শুধু মেধা আর আগ্রহই যথেষ্ট নয়। স্টার্টআপগুলো একা একা বড় হতে পারে না, তাদের বিকাশের জন্য একটি উপযুক্ত পরিবেশ বা ইকোসিস্টেম প্রয়োজন। নেদারল্যান্ডস অরেঞ্জ কর্নারস কর্মসূচি চালু করেছে, যাতে বেসরকারি খাতকে সঙ্গে নিয়ে এমন একটি সহায়ক পরিবেশ গড়ে তোলা যায়, যেখানে প্রাথমিক পর্যায়ের উদ্যোক্তারা বেড়ে উঠতে পারে। বেসরকারি খাতের অংশগ্রহণ এখানে খুবই গুরুত্বপূর্ণ, কারণ প্রতিষ্ঠিত ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোর রয়েছে অভিজ্ঞতা, পুঁজি, নেটওয়ার্ক এবং সাপ্লাই চেইনের মতো প্রয়োজনীয় উপাদান। তাছাড়া তারা এই নতুন উদ্যোগগুলোর প্রথম ক্রেতাও হতে পারে, যার ফলে পুরো প্রক্রিয়াটি সবার জন্য লাভজনক এক পরিস্থিতিতে পরিণত হতে পারে।”

ইউনিলিভার বাংলাদেশ-এর চেয়ারম্যান ও ম্যানেজিং ডিরেক্টর জাভেদ আখতার বলেন, “ইউনিলিভারে আমরা বিশ্বাস করি, বাংলাদেশের তরুণদের পুরো সম্ভাবনা কাজে লাগিয়ে একটি আরও টেকসই, অন্তর্ভুক্তিমূলক ও সহনশীল ভবিষ্যৎ গঠনে তাদের নেতৃত্ব নিশ্চিত করা জরুরি। অরেঞ্জ কর্নারস-এর সঙ্গে আমাদের এই অংশীদারিত্ব একটি কৌশলগত বিনিয়োগ, যা উদ্দেশ্যনির্ভর উদ্যোক্তাদের সহায়তা উদ্ভাবন ও সহযোগিতার মাধ্যমে বাস্তব সমস্যার সমাধান খুঁজে বের করছে। এই অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়া ব্যবসাগুলো তরুণদের উদ্ভাবনী চিন্তা ও দৃঢ় মনোভাবের বাস্তব উদাহরণ, যা দীর্ঘমেয়াদি পরিবর্তনের জন্য প্রয়োজন। আমরা বিশ্বাস করি, এই উদ্যোগগুলোর পেছনে বেসরকারি খাতের সক্রিয় ভূমিকা থাকা জরুরি, আর ইউনিলিভার সেই ভবিষ্যৎ নেতৃত্বের পাশে থাকতে প্রস্তুত, যারা বাংলাদেশ এবং তার বাইরেও আগামী প্রজন্মের জন্য ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে সক্ষম।”

এক অর্থবহ নেটওয়ার্কিং সেশনের মাধ্যমে অনুষ্ঠানটি শেষ হয়, যেখানে উদ্যোক্তারা সম্ভাব্য অংশীদার, ক্লায়েন্ট, বিনিয়োগকারী ও সহযোগীদের সঙ্গে সরাসরি মতবিনিময়ের সুযোগ পান। এর মাধ্যমে ভবিষ্যতের অংশীদারিত্ব গড়ে তোলার সম্ভাবনা তৈরি হয়, পাশাপাশি দেশীয় ও আন্তর্জাতিক উদ্যোক্তা পরিমণ্ডলে তাদের উপস্থিতি আরও দৃশ্যমান হয়ে ওঠে। বেসরকারি খাতের জন্য এটি ছিল একটি বিশেষ সুযোগ, তারা এমন সব প্রাথমিক পর্যায়ের উদীয়মান স্টার্টআপের সঙ্গে যুক্ত হতে পেরেছে, যারা দেশের গুরুত্বপূর্ণ খাতগুলোতে বাজারের জন্য প্রস্তুত এবং কার্যকর ও প্রভাবশালী সমাধান নিয়ে কাজ করছে।