দেশের বাজারে চলতি বছরের প্রথম ৩ মাসে ১৭ বার স্বর্ণের দাম সমন্বয় করেছে বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাজুস)। যার মধ্যে ১৩ বারই বেড়েছে দাম। আর গতবছরের একই সময়ে দাম সমন্বয় করা হয়েছিল মাত্র ৫ বার।
সবশেষ গত ২৮ মার্চ সন্ধ্যায় এক বিজ্ঞপ্তিতে স্বর্ণের দাম বাড়িয়েছে বাজুস। সেদিন স্বর্ণের ২২ ক্যারেটের এক ভরিতে ১ হাজার ৭৭৩ টাকা বাড়িয়েছে সংগঠনটি। নতুন দাম অনুযায়ী, দেশের বাজারে প্রতি ভরি (১১.৬৬৪ গ্রাম) ২২ ক্যারেটের স্বর্ণের দাম পড়বে ১ লাখ ৫৭ হাজার ৮৭২ টাকা। যা দেশের ইতিহাসের সর্বোচ্চে।
এছাড়া ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি ১ লাখ ৫০ হাজার ৬৯৯ টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি ১ লাখ ২৯ হাজার ১৬৭ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম ১ লাখ ৬ হাজার ৫৩৯ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
মূলত চলতি বছরের শুরু থেকেই ঊর্ধ্বমুখী দেশ ও বিশ্ববাজারে স্বর্ণের দাম। এই প্রবণতায় ইতিমধ্যে দেশ ও বিশ্ববাজারে রেকর্ড গড়েছে স্বর্ণের দাম। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নতুন শুল্ক পরিকল্পনার ফলে বিশ্বব্যাপী বাণিজ্য যুদ্ধ আরও তীব্র হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে, যার ফলে বিনিয়োগকারীরা নিরাপদ আশ্রয়স্থল হিসেবে বিবেচিত মূল্যবান ধাতুটির প্রতি আস্থা রাখতে শুরু করেছেন। এতে স্বর্ণের দাম রেকর্ড উচ্চতায় পৌঁছেছে।
ক্যাপিটাল ডটকমের আর্থিক বাজার বিশ্লেষক কাইল রোডা বলেন, মার্কিন বাণিজ্য-রাজস্ব নীতি, ফেডের সুদের হার কমানোর সম্ভাবনা ও চলমান ভূরাজনৈতিক উত্তেজনার কারণে বাড়ছে স্বর্ণের দাম। খুব শিগগিরই এটি ৩ হাজার ১০০ ডলার প্রতি আউন্স ছাড়িয়ে যেতে পারে।
বিশ্ববাজারে স্বর্ণের ঊর্ধ্বমুখী দামের প্রভাব পড়ছে দেশের বাজারেও। ইতোমধ্যেই দেশে স্বর্ণের দাম পৌঁছেছে ইতিহাসের সর্বোচ্চে। এতে চলতি বছরের প্রথম ৩ মাসেই ১৭ বার দেশের বাজারে সমন্বয় করা হয়েছে স্বর্ণের দাম। যেখানে দাম বাড়ানো হয়েছে ১৩ বার, আর কমেছে মাত্র ৪ বার। আর ২০২৪ সালে দেশের বাজারে মোট ৬২ বার স্বর্ণের দাম সমন্বয় করা হয়েছিল। যেখানে ৩৫ বার দাম বাড়ানো হয়েছিল, আর কমানো হয়েছিল ২৭ বার।
স্বর্ণের দামের এই ঊর্ধ্বমুখীতায় বেচকেনা কমে গেছে বলে জানিয়েছেন জুয়েলারি ব্যবসায়ীরা। পুরান ঢাকার তাঁতিবাজারের স্বর্ণ ব্যবসায়ী সুরঞ্জন বলেন, ‘ব্র্যান্ডের বড় বড় দোকানগুলোর বিক্রিও সাম্প্রতিক সময়ে অনেক কমে গেছে। আর মাঝারি ও ছোট ব্যবসায়ীদের অবস্থা তো আরও করুণ। ঊর্ধ্বমুখী এই দাম পুরো স্বর্ণ ব্যবসার জন্যই ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে। বিশ্ববাজার টালমাটাল থাকলে, চলতি বছর সর্বোচ্চ সংখ্যক বার দাম সমন্বয় হতে পারে। তথ্য সূত্র সময়।