
দেশের জাহাজ নির্মাতা ও রফতানিকারক প্রতিষ্ঠান ওয়েস্টার্ন মেরিন শিপইয়ার্ডে তৈরি তিনটি ল্যান্ডিং ক্রাফট রফতানি হচ্ছে সংযুক্ত আরব আমিরাতে (ইউএই)।
বৃহস্পতিবার (২০ নভেম্বর) দুপুরে চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদীতে নবনির্মিত ল্যান্ডিং ক্রাফট মায়াতে আয়োজিত অনুষ্ঠানে আমিরাতের কোম্পানি মারওয়ান শিপিং লিমিটেডের কাছে জাহাজ তিনটি হস্তান্তর করা হয়।
তেল, গ্যাস ফিল্ডে ভারি যন্ত্রপাতি পরিবহনে এ তিনটি জাহাজ ব্যবহৃত হবে বলে জানান ওয়েস্টার্ন মেরিন শিপ ইয়ার্ডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক।
জানা যায়, বাংলাদেশের রফতানিমুখী জাহাজ নির্মাণ শিল্পের প্রতিষ্ঠান ওয়েস্টার্ন মেরিন শিপইয়ার্ড লিমিটেড চলতি মাসেই সংযুক্ত আরব আমিরাতে তিনটি ল্যান্ডিং ক্রাফট জাহাজ মায়া, এমি, মুনা রফতানি করতে যাচ্ছে। সংযুক্ত আরব আমিরাত ভিত্তিক প্রতিষ্ঠান মারওয়ান শিপিং লিমিটেডের কাছে বৃহস্পতিবার সকালে জাহাজ তিনটি হস্তান্তর অনুষ্ঠান হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন: বাংলাদেশে নিযুক্ত সংযুক্ত আরব আমিরাতের রাষ্ট্রদূত আব্দুল্লাহ আলী আব্দুল্লাহ আলহমৌদি এবং বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব আব্দুর রহিম খান।
২০২৩ সালে ওয়েস্টার্ন মেরিন সংযুক্ত আরব আমিরাত ভিত্তিক প্রতিষ্ঠান মারওয়ান শিপিং লিমিটেডের সঙ্গে আটটি জাহাজ নির্মাণের চুক্তি করে; যার মধ্যে রয়েছে দুটি টাগবোট, চারটি ল্যান্ডিং ক্রাফট ও দুটি ট্যাংকার।
এর মধ্যে চলতি বছরের জানুয়ারিতে প্রথম ল্যান্ডিং ক্রাফট রায়ান এবং জুলাই মাসে দুটি টাগবোট খালিদ ও ঘায়া সফলভাবে রফতানি করা হয়।
ল্যান্ডিং ক্রাফটগুলো সাগরের জ্বালানি ক্ষেত্রে যন্ত্র পরিবহনের কাজে ব্যবহার করা হবে বলে অনুষ্ঠানে জানানো হয়।
এ বিষয়ে ওয়েস্টার্ন মেরিন শিপইয়ার্ড লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ক্যাপ্টেন সোহেল হাসান বলেন, ‘আমাদের আছে এই খাতের দক্ষ জনবল। বিশ্বব্যাপী নতুন জাহাজের চাহিদা বাড়ছে। অনেক দেশের এই খাতে জনশক্তি সংকট আছে। দেশে এই শিল্পের বিকাশের জন্য প্রয়োজন দীর্ঘমেয়াদি পুঁজি বরাদ্দ। এটা পেলেই বিশ্বব্যাপী ক্রমবর্ধমান চাহিদা মেটাতে এবং দেশের রফতানি বৃদ্ধিতে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখা সম্ভব হবে।’
এ বিষয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ও এফবিসিসিআইয়ের প্রশাসক আব্দুর রহিম খান বলেন, ‘ওয়েস্টার্ন মেরিন শিপইয়ার্ড দীর্ঘদিন ধরে জাহাজ নির্মাণ শিল্পে ভূমিকা রাখছে, যা বাংলাদেশের রফতানি বহুমুখীকরণের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। সামনের দিনে এর থেকে বড় শিপ তৈরি করে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে রফতানি করা সম্ভব হবে বলে মনে করেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে সংযুক্ত আরব আমিরাতের রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘দুই দেশের প্রতিষ্ঠানের মধ্যে বাণিজ্যিক সম্পর্ক অর্থনৈতিক নতুন দিগন্তের পথ তৈরি করবে বলে আশাবাদী তিনি। দুই দেশের দুই প্রতিষ্ঠানের মধ্যে এই বাণিজ্যিক সম্পর্ক আমাদের মধ্যকার বন্ধুত্বকে আরও সুদৃঢ় করবে। আশা করি, ভবিষ্যতে বাংলাদেশ থেকে আরও জাহাজ আমিরাতে রফতানি হবে।’
এ পর্যন্ত প্রতিষ্ঠানটি ১১টি দেশে ৩৬টি জাহাজ রফতানি করেছে; যার বাজারমূল্য ১৩৮ মিলিয়ন মার্কিন ডলারেরও বেশি।