
Nabinpur canal under threat of extinction due to pollution and grabbing.
পটুয়াখালী: পটুয়াখালীর কুয়াকাটায় একসময়ের খরস্রোতা নবীনপুর খালটি দখল, দূষণে এখন অস্তিত্ব সংকটে পড়েছে। কুয়াকাটা পৌরসভার প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত এই খালটি শহরের পানি নিষ্কাশনের একটি গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম। এছাড়া পরিবেশ ও প্রতিবেশের ভারসাম্য রক্ষার খালটির ভূমিকা ছিল অনস্বীকার্য।
কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে দখল ও দূষণে খালটি বর্তমানে অস্তিত্ব সংকটে পড়েছে। খালের দুই পাশে গড়ে উঠেছে অসংখ্য অবৈধ স্থাপনা, পাশাপাশি পৌর বর্জ্য, হোটেল ও মাছ বাজারের আবর্জনা ফেলায় এটি এখন প্রায় নর্দমায় পরিণত হয়েছে। এতে একদিকে ছড়াচ্ছে তীব্র দুর্গন্ধ, অন্যদিকে বর্ষাকালে পানি নিষ্কাশন ব্যাহত হয়ে সৃষ্টি হচ্ছে জলাবদ্ধতা। যা কুয়াকাটার পর্যটন শিল্পের জন্য বড় হুমকি। এই গুরুত্বপূর্ণ খালটি দখল করে ১১ তলা বিশিষ্ট একটি আবাসিক হোটেল নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে।
সরজমিনে দেখা যায়, কুয়াকাটা পৌরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ডের কচ্ছপখালী-নবীনপুর খালের ভিতরে বহুতল হোটেল নির্মাণের জন্য মাটি ভরাটের পাঁয়তারা চালাচ্ছে হোটেল কর্তৃপক্ষ।
স্থানীয় বাসিন্দা শহিদুল বলেন, এই খাল দিয়াই একসময় পানি যেতো। এখন দুই পাশে দোকান, ঘর আর বর্জ্য ফেলার কারণে খালটাই বুঝা যায় না। এখন আবার এর উপর হোটেল তুলতেছে। খাল দখল বন্ধ না করলে বর্ষায় পানি উঠে ঘরে ঢুইকা যাবে।
কুয়াকাটা হোটেল-মোটেল অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আব্দুল মোতালেব শরীফ বলেন, কচ্ছপখালি খালটি মরা খালে পরিণত হইছে দখলের কারণে। অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদ করে খালটি পূন:খননের মাধ্যমে পর্যটকদের জন্য দৃষ্টিনন্দন করা হলে সরকার একদিকে রাজস্ব পাবে, অন্যদিকে দখল মুক্ত হবে। আমরা চাই অতি তাড়াতাড়ি খালটি তার নিজস্ব রূপ ফিরে পাক।
পরিবেশবাদী সংগঠন ধরিত্রী রক্ষায় আমরা (ধরা)-এর আহ্বায়ক মেজবাহ উদ্দিন মান্নু বলেন, ধরিত্রী রক্ষায় আমরা (ধরা) ও ওয়াটার কিপার্স বাংলাদেশ এর পক্ষ থেকে বারংবার দাবি করে আসছি, কুয়াকাটার কচ্ছপখালীর লেকসহ নবীন পুর খালের আগে সীমানা চিন্হিত করা হোক। অবৈধ দখলদার উচ্ছেদ করা হোক। কিন্তু তা উপেক্ষা করে বিগত সরকারের আমলে নামকাওয়াস্তে খননের নামে কয়েক কোটি টাকা লুটে নিয়েছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। বর্তমানে খালটি আবার দখল করে দুই দিকে স্থাপনা তোলার কাজ চলছে। কুয়াকাটা পর্যটন এলাকার টেকসই উন্নয়ন করতে খাল, জলাশয়, পুকুর, খাসজমি উদ্ধার করতে হবে। নইলে কুয়াকাটার প্রকৃত উন্নয়ন সম্ভব নয়। এমনকি এই খালটির সীমানা চিন্হিত করে উদ্ধার না করলে পরিবেশ ও প্রতিবেশ হুমকির মুখে পড়বে। - গোফরান পলাশ