দেশে গড় তাপমাত্রা সবচেয়ে বেশি থাকে এপ্রিল মাসে। তাপপ্রবাহ নিয়ে শুরু হওয়া এপ্রিল জুড়ে কেবল মৃদু নয়, মাঝারি ও তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে চলারও আভাস এসেছে। সেই সঙ্গে নিম্নচাপ অথবা ঘূর্ণিঝড় এবং কালবৈশাখী ঝড়ের শঙ্কার কথা জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
মঙ্গলবার (১ এপ্রিল) এপ্রিল মাসের দীর্ঘমেয়াদী পূর্বাভাসে এমন আভাস দিয়েছে আবহাওয়া অফিস।
বলা হয়েছে, এপ্রিলের শুরুর দিন দেশের বিভিন্ন এলাকায় বয়ে যাচ্ছে মৃদু তাপপ্রবাহ। আগামী তিন থেকে চার দিন তাপপ্রবাহ থাকতে পারে বিভিন্ন স্থানে। আর এ মাসে এক থেকে দুটি তাপপ্রবাহের আশঙ্কার কথা বলছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। এ মাসে আবার একটি নিম্নচাপ, আর সেখান থেকে ঘূর্ণিঝড়ের পূর্বাভাসও আছে। এসব পূর্বাভাস উঠে এসেছে আবহাওয়া অধিদপ্তরের দেওয়া চলতি এপ্রিল মাসের দীর্ঘমেয়াদি পূর্বাভাসে। প্রতি মাসেই আবহাওয়া অধিদপ্তর এ পূর্বাভাস দেয়। এপ্রিল মাসের গড় স্বাভাবিক তাপমাত্রা ৩৩ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এরপরই আছে মে মাস, গড় তাপমাত্রা থাকে ৩২ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ মো. ওমর ফারুক বলেন, মাসের মাঝামাঝি সময়ে একটি নিম্নচাপ হওয়ার আশঙ্কা আছে। তবে এটি ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নেবে কি না, তা নিশ্চিত নয় এখনো। যে তীব্র তাপপ্রবাহের কথা বলা হচ্ছে, তা এ মাসের শেষ দিকে হতে পারে। এ মাসে স্বাভাবিকের চেয়ে কম বৃষ্টি হতে পারে।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের দেওয়া পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, এ মাসে তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি থাকতে পারে। এ মাসে দুই থেকে চারটি মৃদু থেকে মাঝারি এবং এক থেকে দুটি তীব্র তাপপ্রবাহ হতে পারে।
যদি কোনো এলাকায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৬ থেকে ৩৭ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস হয়, তবে সেখানে মৃদু তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে ধরা হয়। তাপমাত্রা ৩৮ থেকে ৩৯ দশমিক ৯ হলে তা মাঝারি তাপপ্রবাহ। তীব্র তাপপ্রবাহ তখন ধরা হয়, যখন তাপমাত্রা ৪০ থেকে ৪১ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস হয়। তাপমাত্রা ৪২–এর বেশি হলে তা অতি তীব্র তাপপ্রবাহ বলে গণ্য হয়।
ইতোমধ্যে দেশের কয়েকটি স্থানে কালবৈশাখী হয়েছে। এ মাসে পাঁচ থেকে সাত দিন বজ্র, শিলাবৃষ্টিসহ হালকা ও মাঝারি ধরনের এবং এক থেকে তিন দিন তীব্র কালবৈশাখীর আশঙ্কা আছে। এ মাসে বঙ্গোপসাগরে এক থেকে দুটি লঘুচাপ সৃষ্টি হতে পারে। এর মধ্যে একটি নিম্নচাপ বা ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হতে পারে।
গত বছর দেশে তাপমাত্রা যা ছিল, তা ৭৬ বছরের মধ্যে ছিল সর্বোচ্চ। এপ্রিল থেকে মে মাস পর্যন্ত টানা ৩৫ দিন তাপপ্রবাহ ছিল। শুধু বাংলাদেশ নয়, গত বছর ইতিহাসের সর্বোচ্চ উষ্ণ বছর ছিল। চলতি বছরের জানুয়ারি মাস যতটা উষ্ণ ছিল, তা–ও বিশ্বের ইতিহাসে বিরল।
উল্লেখ্য, গত বছর এপ্রিল ও মে মাসে এই অস্বাভাবিক ও টানা তাপপ্রবাহের কারণে কালবৈশাখীর সংখ্যা ছিল একেবারেই কম। সাধারণত এপ্রিল মাসে ৯ দিন এবং মে মাসে ১৩ দিন কালবৈশাখী হয়। কিন্তু গত বছর এপ্রিল মাত্র দুই এবং মে মাসে চারটি কালবৈশাখী হয়েছিল।আরটিভি