
বিশ্বের দীর্ঘতম রেলপথের মালিকানায় রয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন পরিবহন বিভাগ এবং আমেরিকান রেলরোড অ্যাসোসিয়েশনের তথ্য অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রের রেললাইন প্রায় ২ লাখ ২০ হাজার কিলোমিটার দীর্ঘ। এই বিশাল নেটওয়ার্ক দিয়ে পৃথিবীকে পাঁচবারের বেশি ঘুরে আসা সম্ভব।
মার্কিন রেলপথ শুধু দৈর্ঘ্যে বড়ই নয়, এটি দেশের শিল্প, কৃষি, বন্দর, এবং অর্থনীতির মূল চালিকা শক্তি হিসেবে কাজ করে। মালবাহী ট্রেন কয়লা, শস্য, গাড়ি, তেল থেকে শুরু করে ইলেকট্রনিক্স পর্যন্ত বহন করে হাজার হাজার কিলোমিটার পাড়ি দেয়। রেল পরিবহন সড়কপথের তুলনায় অনেক বেশি জ্বালানি সাশ্রয়ী এবং পরিবেশবান্ধব, যা মার্কিন অর্থনীতির একটি শক্ত ভিত্তি হিসেবে বিবেচিত।
১৯শ শতকের মাঝামাঝি থেকে শুরু হওয়া এই রেলযাত্রা ১৮৬৯ সালে প্রথম আন্তঃমহাদেশীয় রেলপথ চালু হওয়ার পর দ্রুত বিস্তৃত হয়। মার্কিন রেল সিস্টেমের বড় অংশ বেসরকারি মালিকানাধীন, বিশেষ করে পণ্য পরিবহনের ক্ষেত্রে, যা উন্নতির প্রধান কারণ।
চলুন জেনে নেই কিছু মজার তথ্য-
.মার্কিন রেলপথে ৬,০০০-এরও বেশি অপারেটর রয়েছে।
.সবচেয়ে দীর্ঘ সরল রেললাইনটি প্রায় ৫০০ কিলোমিটার দীর্ঘ।
.কিছু রেল সেতু ও সুড়ঙ্গ ১৫০ বছরেরও বেশি পুরনো, কিন্তু এখনও ব্যবহৃত হয়।
.মালবাহী ট্রেনগুলো প্রায় ৩ কিলোমিটার দীর্ঘ হতে পারে, যা বিশ্বের দীর্ঘতম ট্রেনগুলোর মধ্যে অন্যতম।
.যাত্রীবাহী ট্রেনের গতি ঘণ্টায় ২৪০ কিলোমিটার, যা ইউরোপ ও জাপানের তুলনায় কম।
একটি মাত্র মালবাহী ট্রেন সড়কে থাকা ২৮০টি ট্রাকের সমান পণ্য বহন করতে পারে এবং একটি গ্যালন জ্বালানির সমতুল্য শক্তিতে ৪৮০ মাইলের বেশি দূরত্ব পণ্য পরিবহন সম্ভব। তাই রেলপথ পরিবেশ সংরক্ষণ এবং জ্বালানি সাশ্রয়ের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
বিশ্বের দীর্ঘতম এবং সবচেয়ে বিস্তৃত রেল নেটওয়ার্ক যুক্তরাষ্ট্রের। এটি দেশটির শিল্প-অর্থনীতির একটি মূল ভিত্তি, যা শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে অব্যাহত রয়েছে। রেলপথ মালবাহী পণ্যের পরিবহনে এগিয়ে থাকলেও, যাত্রীবাহী ক্ষেত্রে দ্রুতগতির ট্রেনের দিক থেকে পিছিয়ে। এর দীর্ঘ ইতিহাস, বিস্তৃত নেটওয়ার্ক, এবং পরিবেশবান্ধব পরিবহনের কারণে মার্কিন রেল ব্যবস্থা বিশ্বে একটি অনন্য উদাহরণ। আরটিভি