নিলামের ঘোষণায় অতিরিক্ত শুল্ক পরিশোধের পাশাপাশি জরিমানা দিয়ে মাত্র এক সপ্তাহে ৩৬টি গাড়ি ছাড় করে নিয়েছেন আমদানিকারকরা। এতে সরকার রাজস্ব পেয়েছে ১০ কোটি টাকার বেশি। এছাড়া আরও ১৪টি গাড়ি ছাড় করানোর আবেদন জমা পড়েছে কাস্টমসের কাছে। অথচ বছরের পর বছর এসব গাড়ি ছাড় না করে বন্দরের শেডে ফেলে রেখেছিলেন সেই আমদানিকারকরাই।
কয়েক বছর ধরে চট্টগ্রাম বন্দরের কার শেডে পড়ে থাকা গাড়ির মধ্যে ১০০টি নিলামে বিক্রির চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়ে সমস্ত প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেছিল চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউজ। কিন্তু নিলাম শুরুর ঠিক আগ মুহূর্তে অতিরিক্ত শুল্ক ও জরিমানা দিয়ে ৩৬টি গাড়ি ছাড় করে নিয়েছেন আমদানিকারকরা।
চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউজের সহকারী কমিশনার (নিলাম) মোহাম্মদ সাকিব হোসেন বলেন, মালিকরা দ্রুত ট্যাক্স পরিশোধ করে গাড়ি খালাস করে নিয়ে যাচ্ছে। নিলামে বিক্রি করলে রাজস্ব কম আসতো, তবে মালিকরা গাড়ি নিয়ে যাওয়ায় সরকার রাজস্ব বেশি পাচ্ছে।
বিদেশ থেকে আমদানি করা গাড়ি ছাড় না করে চট্টগ্রাম বন্দরের কার শেডকে আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান শো রুম হিসেবে ব্যবহার করেন বলে অভিযোগ দীর্ঘদিনের। এক্ষেত্রে আমদানিকারক সরাসরি গাড়ি ছাড় করালে বন্দর কর্তৃপক্ষ যে রাজস্ব আদায় করার সুযোগ পায়, নিলামের ক্ষেত্রে তা পায় না।
তবে এবার বন্দর কর্তৃপক্ষের চাপের মুখে কাস্টমস হাউজ নিলাম প্রক্রিয়া শুরু করলে গাড়ি ছাড় করাতে তোড়জোড় শুরু করে আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানগুলো।
চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সচিব মোহাম্মদ ওমর ফারুক বলেন, প্রকৃত মালিক গাড়ি ছাড় করালে শুল্ক কর পরিশোধ করেন। এতে রাজস্ব বেশি পাওয়া যায়। তবে নিলামে বিক্রি হলে শুধু বিড ভ্যালুটাই পাওয়া যায়।
চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউজের উপ কমিশনার মোহাম্মদ সাইদুল ইসলাম বলেন, টেন্ডার বা ই-অকশনে গাড়িগুলো চলে গেলে আমদানিকারক আর গাড়িগুলো জরিমানা দিয়েও খালাসের সুযোগ পাবেন না। তখন নিলামে সর্বোচ্চ দরদাতাই গাড়িগুলো নিতে পারবেন।
ছাড় করা গাড়ির মধ্যে রয়েছে ১৬টি হাইব্রিড কার, ১১টি মাইক্রোবাস, ৮টি দামি জিপ এবং ১টি ডাবল কেবিন পিকআপ। এতে রাজস্ব আদায় হয়েছে অন্তত ১০ কোটি টাকা। এছাড়া কাস্টমস হাউজ ২৪ লাখ টাকা জরিমানা আদায় করে। এর বাইরে ১৩ হ্যাবাল ব্র্যান্ডের প্রাইভেট কারসহ মোট ১৪টি গাড়ি ছাড় করাতে কাস্টমস হাউজের কাছে আবেদন জানিয়েছেন আমদানিকারক।
বারভিডার সহ সভাপতি গিয়াস উদ্দিন চৌধুরী বলেন, আমদানি খরচের সঙ্গে শুল্ক-কর যোগ করলে গাড়ির দাম অনেক বেড়ে যায়। তাই আমদানিকারকরা লোকসান হলেও গাড়িগুলো খালাস করে না। পরে গাড়িগুলো বিক্রির জন্য নিলামে তোলে কাস্টমস।
উল্লেখ্য, আমদানির ৩০ দিনের মধ্যে গাড়ি ছাড় করা না হলেও নিলামে বিক্রির জন্য কাস্টমসের কাছে বাই পেপার হস্তান্তর করে বন্দর কর্তৃপক্ষ।