Kalapara Pourashabha.
পটুয়াখালী: পটুয়াখালীর কলাপাড়া পৌরসভার রাজস্ব আয় নিয়ে শঙ্কা দেখা দিয়েছে। হাট বাজার, খেয়াঘাট, বাস স্ট্যান্ড, পশু জবেহ খানা সহ রাজস্ব আদায় খাতের ইজারা বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর দরপত্র বিক্রি হলেও কোন দরপত্র জমা না পড়ায় খাস কালেকশনে নিতে একটি প্রভাবশালী মহলের বিরুদ্ধে দরপত্র গুছের অভিযোগ উঠেছে। এতে পৌরসভার রাজস্ব আয় আশংকা জনক হারে হ্রাস পাওয়ার বিষয়টি স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। তবে পৌর প্রশাসক বলেছেন খাস কালেকশনে পৌর কর্তৃপক্ষ ইজারা আদায় করছেন। অথচ বাস্তবতায় হাট বাজারের ইজারা নিয়ন্ত্রণ করছেন একটি প্রভাবশালী মহল।
এর আগে ৫ আগস্ট আ'লীগ সরকার পতনের পর পৌরসভার রাজস্ব আদায় কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়ে। একটি প্রভাবশালী মহল রাজস্ব আদায় কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণ করায় বাস স্ট্যান্ডের এক দেড় মাসের রাজস্ব জমা পড়েনি পৌরসভার ব্যাংক হিসাবে।
সূত্র জানায়, ২০২১-২২ অর্থ বছরে হাট-বাজার খাতে পৌরসভার রাজস্ব আয় ছিল ৬৩ লক্ষ ৯৩ হাজার টাকা, খেয়াঘাট থেকে ৮ লক্ষ ৭৬ হাজার ৮০০ টাকা, বাস স্ট্যান্ড থেকে ১৫ লক্ষ ৪০ হাজার, পশু জবেহ খানা থেকে ৯৫ হাজার, গন শৌচাগার থেকে ১ লক্ষ ২৫ হাজার টাকা। এরপর ২০২২-২৩ অর্থ বছরে হাট-বাজার খাতে আয় ৪১ লক্ষ ৮৩ হাজার ৭৫০ টাকা, খেয়াঘাট থেকে ৫ লক্ষ ২৩ হাজার ৮৭০ টাকা, বাস স্ট্যান্ড থেকে ১৬ লক্ষ ২০ হাজার, পশু জবেহ খানা থেকে ১ লক্ষ ৩৩ হাজার, গন শৌচাগার থেকে ৫ লক্ষ ৬০ হাজার টাকা। ২০২৩-২৪ অর্থ বছরে হাট-বাজার খাতে আয় হয় ৪৮ লক্ষ ২৮ হাজার ৫৫০ টাকা, খেয়াঘাট থেকে ৭ লক্ষ ৪৩ হাজার টাকা, বাস স্ট্যান্ড থেকে ১৫ লক্ষ ১ হাজার ৯০০ টাকা, পশু জবেহ খানা থেকে ৯২ হাজার টাকা, গন শৌচাগার থেকে ৪ লক্ষ ৫৮ হাজার টাকা।
সূত্রটি আরও জানায়, ২০২৪-২৫ অর্থ বছরে পৌরসভা রাজস্ব খাতের ইজারা দরপত্র বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫। এরপর বিভিন্ন খাতে ৬৬টি দরপত্র ক্রয় করে আগ্রহী ব্যবসায়ীরা। কিন্তু নির্ধারিত সময়ের মধ্যে একটি দরপত্রও জমা না পড়ায় ফের ২রা মার্চ, ১২ মার্চ ও ২৭মার্চ পুনঃ দরপত্র প্রকাশ করে পৌরসভা। এরপর আরও ২টি দরপত্র বিক্রি হলেও বাদুরতলি খেয়াঘাটের ১টি দরপত্র জমা পড়ে এবং উক্ত খেয়াঘাট ৫০ হাজার টাকা দরপত্রে ইজারা দেয়া হয়। এতে ২০২৪-২৫ অর্থ বছরে পৌরসভার রাজস্ব আয় নিয়ে শঙ্কা দেখা দিয়েছে। যাতে স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের ৩৯ জন নিয়মিত কর্মকর্তা, কর্মচারী ও ৪৪ জন মাষ্টার রোলে কর্মরত স্টাফের প্রতি মাসে ২২ লাখ টাকা বেতন ভাতাদি পরিশোধ করা দুরূহ হয়ে পড়তে পারে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
পৌরসভার নির্বাহী কর্মকর্তা কাব্য লাল চক্রবর্তী বলেন, 'চার বার হাট বাজারের দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে একটি খেয়াঘাটের দরপত্র জমা পড়েছে এবং সেটি ইজারা দেয়া হয়েছে। বাকী সব গুলো হাট বাজার, খেয়াঘাটে খাস কালেকশনে যাবে। এতে পৌরসভা আর্থিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে কিনা? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।'
কলাপাড়া পৌরসভার প্রশাসক ও কলাপাড়া ইউএনও মো. রবিউল ইসলাম বলেন, 'পরপর তিনবার ইজারা বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পরও দরপত্র জমা না পাড়ায় চতুর্থবার বিজ্ঞপ্তি দিয়ে ইজারা দরপত্র আহ্বান করা হয়। এরপরও দরপত্র জমা না পড়ায় পৌর কর্তৃপক্ষ বর্তমানে খাস আদায় করছে। দু'একদিনের মধ্যে খাস আদায় কমিটির সভায় এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।' - গোফরান পলাশ