
গাজীপুরের টঙ্গী পূর্ব থানার টিঅ্যান্ডটি বাজার জামে মসজিদের খতিব মুফতি মুহিব্বুল্লাহ মিয়াজীর বাসা থেকে পালানোর চেষ্টার একটি ভিডিও এবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।
সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, মুফতি মুহিব্বুল্লাহ মিয়াজী হঠাৎ করে বাসা থেকে দৌড়ে বের হয়ে পালানোর চেষ্টা করছেন। এ সময় পেছন থেকে আরেক ব্যক্তি তাকে ধাওয়া করে ধরে ফেলেন। মুহূর্তের মধ্যেই ঘটনাস্থলে স্থানীয়রা জড়ো হন এবং শেষ পর্যন্ত তার পালানোর চেষ্টা ব্যর্থ হয়।
এর আগে মুফতি মিয়াজী ‘অপহরণ নাটক’ সাজানোর অভিযোগে দেশজুড়ে সমালোচনার মুখে পড়েছিলেন। পঞ্চগড় থেকে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় উদ্ধার হওয়ার পর তিনি স্বীকার করেছিলেন যে নিজেই সেখানকার উদ্দেশে গিয়েছিলেন এবং ঘটনার সময় ‘মানসিকভাবে স্বাভাবিক ছিলেন না’।
মুফতি মিয়াজী গণমাধ্যমকে বলেছিলেন, ‘আমি হাঁটতে বের হয়েছিলাম। হঠাৎ মনে হলো, চলতে থাকি কোথায় যাচ্ছি বুঝতে পারছিলাম না। একসময় অটো, তারপর বাসে উঠে পঞ্চগড়ে পৌঁছে যাই।’
তিনি আরও বলেন, ‘একপর্যায়ে দেখি পঞ্চগড় জেলা প্রশাসকের কার্যালয়, পুলিশ লাইনস এগুলো হেঁটে পার হয়ে গেছি। পথে একটি শিকল কুড়িয়ে পেলাম। এরপর হঠাৎ জামা-পায়জামা খুলে ফেলি, ঠাণ্ডায় আর পরতে পারিনি। শেষে গাছের সঙ্গে নিজেই পা শিকল দিয়ে বেঁধে শুয়ে পড়ি। কেন এমন করছিলাম, সেটাও তখন বুঝতে পারিনি।’
গত ২৩ অক্টোবর সকালে পঞ্চগড় সদর থানার হেলিপ্যাড বাজার এলাকা থেকে অজ্ঞান অবস্থায় গাছের সঙ্গে লোহার শিকল দিয়ে বাঁধা অবস্থায় মুফতি মিয়াজীকে উদ্ধার করে পুলিশ। পরে তাকে স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
এদিকে গাজীপুরের টঙ্গী পূর্ব থানাধীন টিএনটি বাজার জামে মসজিদের খতিব মুফতি মহিবুল্লাহ মিয়াজীকে (৬০) অপহরণ করা হয়নি, তিনি নিজেই গা ঢাকা দিয়েছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ।
মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের (জিএমপি) অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ তাহেরুল হক চৌহান এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, ইমাম মুহিবুল্লাহ অপহরণের পেছনে ইসকন জড়িত থাকার অভিযোগ করা হয়েছিল। তবে পুলিশের তদন্তে উঠে এসেছে তিনি নিজে শ্যামলী পরিবহনের বাসের টিকিট কেটে পঞ্চগড় গেছেন। পরে তথ্য-প্রযুক্তির সহায়তায় চাঞ্চল্যকর এই মামলার রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ।
তাহেরুল হক চৌহান বলেন, এ ঘটনায় ইমাম মুহিবুল্লাহর বাসের সহযাত্রী এবং বাসের সুপারভাইজারও পুলিশের হেফাজতে আছে। ইতোমধ্যে ইমাম মুহিবউল্লাহ পুলিশের কাছে প্রকৃত ঘটনা স্বীকার করেছেন।
সংবাদ সম্মেলনের আগে পুলিশের এক শীর্ষ কর্মকর্তা জানান, খতিব মহিবুল্লাহ নিজেই অপহরণের নাটক সাজিয়েছেন। তিনি নিজেই নিজের পায়ে শিকল লাগিয়ে শুয়ে ছিলেন—এসব কিছুই তার নিজের পরিকল্পিত কাজ। তাকে পঞ্চগড়ে কেউ নিয়ে যায়নি।আরটিভি