ঈদে খাওয়া দাওয়া একটু বেশি পরিমাণে করেন কম বেশি সবাই। আর বেশি খাবার খাওয়ার পর অনেকেই খেতে পছন্দ করেন কোল্ড ড্রিংকস। কিন্তু আপনি কি জানেন, কোল্ড ড্রিংকস খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর?
অনেকের আবার গরম থেকে বাঁচতে ঠাণ্ডা পানির পরিবর্তে কোল্ড ড্রিংকস খাওয়ার অভ্যাস রয়েছে। এ অভ্যাস স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কোল্ড ড্রিংকসে প্রচুর পরিমাণে চিনি থাকে। এটি শরীরকে ভারী করে দেয়। কিডনি ড্যামেজ, ফ্যাটি লিভারের সমস্যাসহ দাঁত ও মাড়ির ক্ষতি কারণ এ কোল্ড ড্রিংকস।
খাওয়ার পরেই কোল্ড ড্রিংকস বয়ে আনে যেসব ক্ষতি
চিকিৎসকরা বলছেন, কোল্ড ড্রিংকসে এক ধরনের সোডা থাকে, যা খাবার হজমে সাহায্য করে। কিন্তু খাবার হজমের পাশাপাশি এই সোডা শরীরে রক্তচাপ বাড়িয়ে দেয়। যা আমাদের মৃত্যুর কারণ হতে পারে।
এছাড়া অকাল বার্ধক্য, ডায়াবেটিস, হৃদপিণ্ডের সমস্যা, হাঁপানি এমনকি মানুষের মনে হিংস্রতা তৈরি করতে পারে এ পানীয়।
তাই কোল্ড ড্রিংকস নয়, ঈদের ভারী খাবার খাওয়ার পর দ্রুত হজমের জন্য বেছে নিতে পারেন দইকে। দইয়ে মানবশরীরের জন্য উপকারী ব্যাকটেরিয়া থাকে। আসুন এক নজরে জেনে নিই, নিয়মিত দই খাওয়ার কিছু স্বাস্থ্য উপকারিতা প্রসঙ্গে-
১. দই প্রোবায়োটিকের কাজ করে। হজমপ্রক্রিয়া এবং অন্ত্রের স্বাস্থ্য বজায় রাখার জন্য প্রোবায়োটিক কার্যকরী। শুধু তাই নয়, দই পেট ফোলা, বদহজম কিংবা ডায়রিয়ার সমস্যা থেকে রেহাই দিতে সাহায্য করে।
২. ওজন নিয়ন্ত্রণ করতে হলে দই একটি ভালো বিকল্প। দইয়ে প্রচুর প্রোটিন থাকে তাই অনেকক্ষণ ক্ষুধা লাগে না। অতিরিক্ত খাওয়ার ইচ্ছেও আপনার কমে যাবে। ফলে ওজন নিয়ন্ত্রণ অনেক সহজ হয়।
৩. রোগ সৃষ্টিকারী জীবাণুর বিরুদ্ধে লড়াই করতে দইয়ের উপাদান কার্যকর। দইয়ের ম্যাগনেশিয়াম, জিঙ্ক এবং সেলেনিয়ামের কারণে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও অনেক বেড়ে যায়।
৪. পেটের সমস্যা নিরসনে দই দারুণ ভূমিকা রাখে। বিশেষজ্ঞরা বলেন, নিয়মিত দই খেলে পেটের সমস্যা কমে, শরীর ঠাণ্ডা থাকে এবং ওজন নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে।
৫. দইয়ের পটাশিয়াম, ভিটামিন বি ১২ এবং ম্যাগনেশিয়াম শরীরের উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে। ত্বকের যত্নেও দুর্দান্ত কাজ করে দই।
৬.দইয়ে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে পুষ্টি ও খনিজ পদার্থ। যা আপনাকে এনার্জি দেয়। সেই সাথে দাঁত ও মাড়ির সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করতে পারে।
৭. মজবুত হাড় গঠনে দই খুব কার্যকর। এক কাপ দইয়ে অন্তত ২৭৫ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম পাওয়া যাবে।
তাই ভুঁড়িভোজের পর কোল্ড ড্রিংকস না খেয়ে দই খাওয়ার অভ্যাস করুন। সুস্বাস্থ্য নিশ্চিতে প্রতিদিন এক কাপ দই খাওয়ার অভ্যাস থাকাটা ভালো। তবে মনে রাখবেন, দইয়ের সব পুষ্টিগুণ পেতে চাইলে মিষ্টি দইয়ের তুলনায় টক দইকে প্রাধান্য দিতে হবে।