মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প নিজেকে যতটা ক্ষমতাবান মনে করেন আদতে তিনি তা নন বলে গুঞ্জন শুরু হয়েছে বিভিন্ন গণমাধ্যমে। বরং তার স্বেচ্ছাচারী পররাষ্ট্রনীতি বিশ্বনেতাদের মধ্যে বিরক্তির উদ্রেক করছে। বলা হচ্ছে, এমন উচ্চাভিলাষী মনোভাব শুধুমাত্র ট্রাম্পের মধ্যেই নয়, দেখা গেছে তার কয়েকজন পূর্বসূরির মধ্যেও।
৪৭তম মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে নিয়ে একটি বিশ্লেষণধর্মী প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে সিএনএন। সেই প্রতিবেদনে দাবি করা হয়, তথাকথিত মহাপরাক্রমশালী যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের গদিতে বসে নিজেকেও পরাক্রমশালী ভাবতে শুরু করেছেন ট্রাম্প।
প্রতিবেদন মতে, গোটা বিশ্বকে মার্কিনদের আঙুলের ইশারায় নাচানোর উদ্দেশ্য নিয়েই হোয়াইট হাউসের মসনদে বসেন ট্রাম্প। ক্ষমতায় বসেই, চীন, রাশিয়া ও ইউরোপীয় দেশগুলোর ওপর একের পর এক শুল্ক ও নিষেধাজ্ঞার বাণ ছুড়তে থাকেন। বাণিজ্য যুদ্ধকে ঘিরে গড়ে ওঠা শঙ্কাকে পুঁজি করে বাগিয়ে নিতে থাকেন সুবিধামতো নানা চুক্তি।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ট্রাম্পের ক্ষমতার ঘোর এখনো কাটতে ঢের বাকি বলেই মনে করা হচ্ছে। এরমধ্যেই তাকে নিয়ে বিশ্বনেতাদের মাঝে দেখা দিতে শুরু করেছে বিরক্তি। অনেক নেতাই এখন বিশ্বাস করেন যে ট্রাম্প যত যাই বলুক, করার বেলায় ঠিকই পিছিয়ে যাবেন তিনি।
ক্ষমতায় এসে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে বন্ধুত্বের নজির স্থাপনের চেষ্টা চালালেও নিজের নীতি বদলেছেন ট্রাম্প। এতে, পুতিনের মনোভাবেও পরিবর্তন দেখা যাচ্ছে। মার্কিন প্রেসিডেন্টের হুঁশিয়ারিকে এখন এড়িয়েই চলতে দেখা যাচ্ছে পুতিনকে।
ট্রাম্পের হুমকি-ধমকির তোয়াক্কা করছে না চীনও। এমনকি চড়া শুল্কারোপ করেও চীনকে বাগে আনতে পারছেন না মার্কিন প্রেসিডেন্ট। চীনের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটকে ট্রাম্প বুঝতে ভুল করেছেন, এমন দাবি গণমাধ্যমের।
‘এক চীন’ নীতিতে বিশ্বাসী বেইজিং যে মার্কিন ক্ষমতার সামনে মাথা নত করবে না, তা আঁচ করতে পারায় বিরক্তি দেখা যাচ্ছে মার্কিন প্রশাসনেও। ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গেও ঘটেছে অনেকটা একই ঘটনা। এ অবস্থায়, ট্রাম্প আসলে ‘যতটা গর্জে ততটা বর্ষে না’ বলে ব্যঙ্গ করছেন বিভিন্ন কূটনীতিক ও বিশ্লেষকরা।
সিএনএনের দাবি, নিজেকে শক্তিমান ভাবার এ ধারা হোয়াইট হাউসে নতুন নয়। এ ধরনের উচ্চাশা দেখা গেছে জর্জ ওয়াশিংটন বুশ, বারাক ওবামা ও জো বাইডেনের মতো অনেক প্রেসিডেন্টের মধ্যেই।