
গত অক্টোবর মাসে সারা দেশে সড়ক দুর্ঘটনা আশঙ্কাজনকভাবে বেড়েছে। এই সময়ে ৪৬৯টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৪৬৯ জন নিহত এবং ১ হাজার ২৮০ জন আহত হয়েছেন।
বুধবার (১২ নভেম্বর, ২০২৫) বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী সই করা প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়।
সংগঠনটি বহুল প্রচারিত ও বিশ্বাসযোগ্য জাতীয়, আঞ্চলিক ও অনলাইন সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত দুর্ঘটনার সংবাদ মনিটরিং করে এই প্রতিবেদনটি তৈরি করেছে।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, অক্টোবরে শুধু সড়কেই নয়, রেল ও নৌপথেও উল্লেখযোগ্য সংখ্যক দুর্ঘটনা ঘটেছে। রেলপথে ৫২টি দুর্ঘটনায় নিহত ৪৭ জন, আহত হন ৩০ জন। আর নৌপথে ১১টি দুর্ঘটনায় নিহত ১২ জন, নিখোঁজ ১ হন জন। সব মিলিয়ে মোট ৫৩২টি দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন ৫২৮ জন এবং আহত ১ হাজার ৩১০ জন।
অক্টোবরে বিভাগ অনুযায়ী সবচেয়ে বেশি দুর্ঘটনা ঘটেছে ঢাকা বিভাগে– ১২৬টি দুর্ঘটনায় ১৩০ জন নিহত ও ৩৪৩ জন আহত হয়েছেন। অন্যদিকে, সবচেয়ে কম দুর্ঘটনা ঘটেছে ময়মনসিংহ বিভাগে– ২০টি দুর্ঘটনায় ২৭ জন নিহত ও ৩৭ জন আহত হয়েছেন।
সবচেয়ে বেশি দুর্ঘটনা ঘটেছে মোটরসাইকেল। মাসটিতে ১৭০টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় ১৭৬ জন নিহত ও ১৩৭ জন আহত হয়েছেন।
দুর্ঘটনার শিকার হওয়া মোট ৭৭২টি যানবাহনের পরিচয় পাওয়া গেছে। এর মধ্যে রয়েছে মোটরসাইকেল (২৫.৯০%), ট্রাক-পিকআপ-কাভার্ডভ্যান ও লরি (২১.২৪%), বাস (১৬.০৬%), ব্যাটারিচালিত রিকশা ও ইজিবাইক (১২.৮০%), সিএনজিচালিত অটোরিকশা (৪.২৭%), নছিমন-করিমন-মাহিন্দ্রা-ট্রাক্টর ও লেগুনা (৮.৪১%), কার-জিপ-মাইক্রোবাস (৪.৭৯%)।
দুর্ঘটনায় নিহত ও আহতদের মধ্যে সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষ রয়েছেন। এর মধ্যে রয়েছেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য (৪ জন পুলিশ, ১ জন র্যাব, ১ জন বিজিবি), চালক (১৩৩ জন), পথচারী (৯৯ জন), নারী (৫৮ জন), শিশু (৩৫ জন), শিক্ষার্থী (৩৫ জন), শিক্ষক (১৩ জন), অন্যান্য পেশাজীবী (১ জন আইনজীবী, ৩ জন প্রকৌশলী, ১৪ জন রাজনৈতিক নেতাকর্মী)।
দুর্ঘটনা প্রতিরোধে সংগঠনটি বেশ কিছু সুপারিশ করেছে। এর মধ্যে রয়েছে: ক্ষতিগ্রস্ত সড়ক-মহাসড়ক দ্রুত মেরামত করা, রাতে জাতীয় ও আঞ্চলিক মহাসড়কে আলোকসজ্জার ব্যবস্থা করা, দক্ষ চালক তৈরির উদ্যোগ গ্রহণ ও যানবাহনের ডিজিটাল ফিটনেস প্রদান, সড়কে চাঁদাবাজি বন্ধ করা, চালকের বেতন ও কর্মঘণ্টা সুনিশ্চিত করা এবং মোটরসাইকেল ও ব্যাটারিচালিত রিকশার আমদানি ও নিবন্ধন নিয়ন্ত্রণ করা।