
মেয়েদের শিক্ষার পথে প্রতিবন্ধকতা দূরীকরণ ও টেকসই সমাধান খুঁজে বের করতে কিশোরগঞ্জের মিঠামইন উপজেলায় অনুষ্ঠিত হয়েছে জেলা পর্যায়ের এক আলোচনা সভা। মালালা ফান্ডের অর্থায়নে এবং জাগো ফাউন্ডেশন ট্রাস্টের উদ্যোগে পরিচালিত ‘অদম্য (ODOMMO)’ প্রকল্পের আওতায় এই সভার আয়োজন করা হয়।
কিশোরগঞ্জ জেলার ১৩টি উপজেলার মধ্যে মিঠামইন একটি ঐতিহাসিক ও সংস্কৃতিতে সমৃদ্ধ অঞ্চল। তবে নারী শিক্ষা, বাল্যবিবাহ, সামাজিক বৈষম্য ও সহিংসতার মতো চ্যালেঞ্জ এখনো এখানে বিদ্যমান। এসব সমস্যা মোকাবিলায় ‘অদম্য’ প্রকল্প মাঠ পর্যায়ে কাজ করছে মেয়েদের শিক্ষার সুযোগ বৃদ্ধি, জেন্ডার সমতা ও কমিউনিটি সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে।
প্রকল্পের আওতায় বিদ্যালয়ে কন্যাশিশুদের ভর্তি বৃদ্ধি, নারী শিক্ষায় জেন্ডার বৈষম্য দূরীকরণে কমিউনিটি সচেতনতা সৃষ্টি এবং গার্লস ক্লাব গঠনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের STEM, SEL ও Competency-Based Learning এর মাধ্যমে শিক্ষাগত সহায়তা প্রদান করা হচ্ছে। শিক্ষক ও এসএমসি সদস্যদের জন্য আয়োজিত কর্মশালা ও প্রশিক্ষণ জেন্ডার-বান্ধব শিক্ষা পরিবেশ গড়ে তুলতে সহায়তা করছে।
এছাড়া, প্রকল্পের অংশ হিসেবে বাল্যবিবাহ, যৌন হয়রানি ও জেন্ডার ভিত্তিক সহিংসতা প্রতিরোধে সচেতনতামূলক কার্যক্রম চালানো হচ্ছে। কিশোরীদের স্যানিটারি ন্যাপকিন প্রদান ও মাসিক স্বাস্থ্যবিষয়ক সচেতনতা বৃদ্ধি কর্মসূচিও এর অন্তর্ভুক্ত।
আলোচনা সভায় জেলা শিক্ষা অফিসার শামছুন নাহার মাকছুদা বলেন, “সমাজে স্থায়ী পরিবর্তন আনতে হলে শিক্ষার প্রসার ও নারীর ক্ষমতায়ন অপরিহার্য। আমাদের মেয়েরা এখন অনেক এগিয়ে, তবে উন্নয়নের ভারসাম্য রক্ষায় ছেলেদের শিক্ষাকেও সমান গুরুত্ব দিতে হবে।”
জাগো ফাউন্ডেশন ট্রাস্টের সিনিয়র ম্যানেজার ইফতিখার উল করিম বলেন, “শিক্ষা হলো পরিবর্তনের সবচেয়ে শক্তিশালী হাতিয়ার। মানসম্মত শিক্ষা ব্যক্তিকে নয়, পুরো সমাজকেই উন্নয়নের পথে এগিয়ে নিয়ে যায়।”
উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যুরোর সহকারী পরিচালক একেএম বজলুর রশীদ তালুকদার বলেন, “মিঠামইনের মতো প্রত্যন্ত অঞ্চলে মেয়েদের শিক্ষার সুযোগ সীমিত। অদম্য প্রকল্প সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধি ও নিরাপদ শিক্ষার পরিবেশ তৈরিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।”
সভায় স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, শিক্ষা কর্মকর্তাবৃন্দ, শিক্ষক, শিক্ষার্থী এবং সামাজিক সংগঠনের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।