News update
  • Gaza aid flotilla activists say second boat hit by suspected drone     |     
  • Shibir-backed candidates win top DUCSU posts with big margin     |     
  • Female dorm Ruqayyah Hall comes up for Shibir this time      |     
  • Bangladesh 2024, Nepal 2025: Youth Movements Force Leaders Out     |     
  • Nepal PM resigns as 19 killed in social media ban, graft protests     |     

চিকিৎসাবিজ্ঞানে এআই ব্যবহার এখন সময়ের দাবি : বিএমইউ ভিসি

গ্রীণওয়াচ ডেস্ক শল্যচিকিৎসা 2025-09-03, 8:17am

biemiu-7d2302d4f5a09b7e986cb0f7ee1ff9621756865845.jpg




বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএমইউ) ও বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) যৌথভাবে চিকিৎসাবিজ্ঞানে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) ব্যবহারের নতুন দিগন্ত উন্মোচনে গবেষণা শুরু করেছে।

সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, আধুনিক চিকিৎসাবিজ্ঞানে এআই শুধু সময় ও খরচ কমাবে না, রোগ নির্ণয়ে এনে দেবে নির্ভুলতা, দ্রুততা ও কার্যকারিতা। ফলে রোগীরা যেমন উন্নত স্বাস্থ্যসেবার সুবিধা পাবেন, তেমনি চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদেরও কাজ হবে সহজ ও নির্ভরযোগ্য। আজ মঙ্গলবার (২ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর শাহবাগের সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতালের লেকচার হলে অনুষ্ঠিত সেমিনারে বক্তারা এসব তথ্য জানান।

বিএমইউ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এআই প্রযুক্তি চালু হলে রোগীরা যেমন দ্রুত রিপোর্ট পাবেন, তেমনি চিকিৎসার মানও উল্লেখযোগ্যভাবে উন্নত হবে। চিকিৎসা নিতে গিয়ে দীর্ঘ লাইনে দাঁড়ানো, রিপোর্ট পেতে দেরি হওয়া কিংবা ভুল রোগ নির্ণয়ের মতো সমস্যা অনেকটাই কমে আসবে।

সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন বুয়েটের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আবু বোরহান মোহাম্মদ বদরুজ্জামান। তিনি বলেন, আজকের বিশ্বে এআই চিকিৎসা বিজ্ঞানের একটি অপরিহার্য অংশ হয়ে উঠেছে। উন্নত দেশগুলোতে রেডিওলজি, অনকোলজি, প্যাথলজিসহ বিভিন্ন শাখায় এআই ব্যবহার রোগ নির্ণয়ের গতি বহুগুণে বাড়িয়ে দিয়েছে। তবে বাংলাদেশের বাস্তবতায় আমাদের জন্য নিজস্ব পরিবেশে উপযোগী এআই প্রযুক্তি তৈরি করা জরুরি। স্থানীয়ভাবে এআই উন্নয়ন না হলে আমরা কাঙ্ক্ষিত সুফল পাব না। তাই বিএমইউ ও বুয়েটের এই যৌথ উদ্যোগ সময়োপযোগী ও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

বুয়েট উপাচার্য বলেন, রেডিওলজির মতো জটিল শাখায় এক্স-রে, সিটি স্ক্যান, এমআরআই কিংবা আল্ট্রাসনোগ্রাফির ছবি থেকে রোগ শনাক্ত করতে এআই চিকিৎসকদের কার্যকর সহায়তা দিতে পারে। বিশাল ডেটা দ্রুত বিশ্লেষণ করে এআই যে ফলাফল দেয়, তা চিকিৎসকদের সিদ্ধান্ত গ্রহণকে আরও নির্ভুল ও নিরাপদ করে তোলে। শুধু তাই নয়, মেডিকেল রেকর্ড কিপিং, হাসপাতাল ব্যবস্থাপনা ও স্বাস্থ্যসেবার নানা ক্ষেত্রে এআই ব্যবহার রোগীর সেবা পাওয়ার প্রক্রিয়াকে করবে সহজতর।

সভাপতির বক্তব্যে বিএমইউর উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শাহিনুল আলম বলেন, চিকিৎসক ও ইঞ্জিনিয়ারদের সমন্বিত গবেষণার মাধ্যমে আমরা স্বাস্থ্যসেবায় এক নতুন যুগে প্রবেশ করতে যাচ্ছি। বাংলাদেশে চিকিৎসা প্রযুক্তির ব্যবহার যত বাড়বে, ততই রোগীর কল্যাণ নিশ্চিত হবে। এআই প্রযুক্তির ফলে রোগ নির্ণয়ে ভুল কমবে, চিকিৎসা হবে আরও দ্রুত ও কার্যকর। এতে শুধু রোগীরা নয়, চিকিৎসকরাও উপকৃত হবেন। দেশের স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থার সামগ্রিক মানোন্নয়নে এই ধরনের গবেষণা ও উদ্ভাবন বিরাট ভূমিকা রাখবে। তিনি বলেন, আমাদের দেশের স্বাস্থ্যসেবার প্রধান চ্যালেঞ্জ হলো সীমিত সম্পদ ও বিশাল জনগোষ্ঠীকে মানসম্মত সেবা দেওয়া। এআই যদি সঠিকভাবে ব্যবহার করা যায়, তাহলে সীমিত সময়ে বিপুল সংখ্যক রোগীকে সঠিক সেবা দেওয়া সম্ভব হবে। ডাক্তার-ইঞ্জিনিয়ারদের যৌথ গবেষণার মাধ্যমে নিত্যনতুন উদ্ভাবন হলে তা কেবল গবেষণাগারে সীমাবদ্ধ থাকবে না, বরং সাধারণ মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে যাবে।

সেমিনারে আরও বক্তব্য রাখেন বিএমইউর প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. মো. আবুল কালাম আজাদ, প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (গবেষণা ও উন্নয়ন) অধ্যাপক ডা. মো. মুজিবুর রহমান হাওলাদার, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. নাহরীন আখতার, রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ডা. মো. নজরুল ইসলাম ও ক্লিনিক্যাল অনকোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. সৈয়দ মো. আকরাম হোসেন। তারা সবাই এআই-এর সম্ভাবনা ও প্রাসঙ্গিকতা তুলে ধরে বলেন, উন্নত বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও এআই ব্যবহার শুরু হলে স্বাস্থ্যসেবায় বৈপ্লবিক পরিবর্তন আসবে।

মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বুয়েটের অধ্যাপক ড. তৌফিক হাসান ও অধ্যাপক ড. এম তারিক আরাফাত। তারা রেডিওলজিতে এআই-এর ভূমিকা ব্যাখ্যা করে বলেন, ইমেজ ডেটা বিশ্লেষণে এআই বর্তমানে মানুষের তুলনায় অনেক দ্রুত ও দক্ষ। এটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে রোগ নির্ণয়ের উপযোগী তথ্য বের করতে পারে, ফলে রিপোর্টিংয়ে ভুলের ঝুঁকি কমে যায়। এক্স-রে, সিটি স্ক্যান, এমআরআই কিংবা আল্ট্রাসনোগ্রাফির মতো পরীক্ষার ফলাফল যখন দ্রুত হাতে আসে, তখন চিকিৎসকরা সময়মতো সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারেন।

তাদের মতে, বাংলাদেশের রোগীদের স্বার্থে স্থানীয়ভাবে এআই চালু ও উন্নয়ন এখন আর বিলম্ব করার সুযোগ নেই।

সেমিনারে বিএমইউর শিশু অনুষদের ডিন অধ্যাপক ডা. মো. আতিয়ার রহমান, মেডিক্যাল টেকনোলজি অনুষদের ডিন অধ্যাপক ডা. এম. আবু হেনা চৌধুরী, ডেন্টাল অনুষদের ডিন সহযোগী অধ্যাপক ডা. সাখাওয়াৎ হোসেন সায়ন্তসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনুষদের শিক্ষক, চিকিৎসক ও কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন। পাশাপাশি বুয়েটের উপ-উপাচার্য ও সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলীরাও অংশ নেন।