
বিএনপির চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া
বিএনপির চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া (৭৯) আর নেই (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।
মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) সকাল ৬টায় ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক অধ্যাপক এজেডএম জাহিদ হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
খালেদা জিয়ার ছেলে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, তারেকের স্ত্রী জুবাইদা রহমান, মেয়ে জাইমা রহমান, খালেদা জিয়ার প্রয়াত ছেলে আরাফাত রহমান কোকোর স্ত্রী সৈয়দা শামিলা রহমান, দুই মেয়ে জাহিয়া রহমান, জাফিয়া রহমান, খালেদা জিয়ার ছোট ভাই শামীম এস্কান্দার, তার স্ত্রী কানিজ ফাতেমা, প্রয়াত সাইদ এস্কান্দারের স্ত্রী নাসরিন এস্কান্দার, খালেদা জিয়ার মেজ বোন সেলিনা ইসলামসহ পরিবারের সদস্যরা এবং বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এ সময় হাসপাতালে ছিলেন।
সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীর মৃত্যুর খবরে তাৎক্ষণিকভাবে শোকের ছায়া নেমে আসে। হাসপাতালে চিকিৎসক, নার্সদের অনেককে কান্নায় ভেঙে পড়তে দেখা যায়।
উল্লেখ্য, আওয়ামী লীগের দীর্ঘ ১৬ বছরের শাসনামলে দীর্ঘদিন নির্যাতনের শিকার হয়েছিলেন খালেদা জিয়া, কারাভোগ করেছেন। চিকিৎসার সুযোগও দেওয়া হয়নি। ধীরে ধীরে অসুস্থ হয়ে পড়েন বেগম জিয়া। এরপর করোনার কারণে শর্তসাপেক্ষে মুক্তি দিলেও গুলশানের ভাড়া বাসা ‘ফিরোজা’য় বন্দি রাখা হয়।
আওয়ামী লীগের শাসনামলে চিকিৎসা না পাওয়ায় ধীরে ধীরে হৃদরোগ, ডায়াবেটিস, আর্থ্রাইটিস, লিভার সিরোসিস, কিডনির জটিলতাসহ নানা শারীরিক অসুস্থতা দেখা দেয় খালেদা জিয়ার।
এরমধ্যে ২০২৪ সালের জুলাইতে কোটা সংস্কার আন্দোলন দাবিতে দেশজুড়ে শুরু হয় আন্দোলন, যা শেষ পর্যন্ত সরকার পতনের আন্দোলনে গড়ায়। টানা ৩৫ দিনের রক্তক্ষয়ী আন্দোলনে পর ৫ আগস্ট দেশ ছেড়ে ভারতে পালিয়ে যায় শেখ হাসিনা। পরদিন ৬ আগস্ট খালেদা জিয়াকে মুক্তি দেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন।
এরপর উন্নত চিকিৎসার জন্য চলতি বছরের ৭ জানুয়ারি লন্ডনে যান খালেদা জিয়া। ১১৭ দিন লন্ডনে অবস্থান শেষে গত ৬ মে তিনি দেশে ফেরেন। তার স্বাস্থ্যের অনেকটা উন্নতি হয়েছিল। তবে নানা রোগে জটিলতা ও শরীর–মনে ধকল সহ্য করে তিনি দুর্বল হয়ে পড়েছিলেন। বয়সও ছিল প্রতিকূল। প্রায়ই গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়তেন। হাসপাতালে ভর্তি করানো হতো।
সবশেষে গত ২৩ নভেম্বর তাকে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে নেওয়া হয়। এক মাসের কিছু বেশি সময় তিনি সেখানেই চিকিৎসাধীন ছিলেন।