News update
  • Dhaka's air quality in 'moderate' range on Saturday morning     |     
  • Deadly Floods Displace Over 100,000 in South Sudan     |     
  • Nepal has first woman Prime Minister as March elections set     |     
  • 50 Killed as Israel Intensifies Strikes on Gaza City     |     
  • UN General Assembly Endorses New York Declaration on Two-State Solution     |     

দেশটাকে পুনর্গঠন করাই লক্ষ্য: নাহিদ

গ্রীণওয়াচ ডেস্ক রাজনীতি 2025-07-11, 7:54am

687b3783b792a209874cd393eb6cd11831c34d523dee9ff4-737ba3903de09186ae5e232233c279ec1752198868.jpg




বিদ্যমান রাজনৈতিক দলগুলোর নেতৃত্বে দেশ পুনর্গঠন সম্ভব হলে নতুন দল করার প্রয়োজনই হত না বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম।

বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) সন্ধ্যায় নড়াইল শহরের পুরাতন বাস টার্মিনাল মুক্তমঞ্চে এনসিপির উদ্যোগে ‘দেশ গড়তে জুলাই পদযাত্রা’ শীর্ষক কর্মসূচিতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

এনসিপির আহ্বায়ক বলেন, 

গণ-অভ্যুত্থানের পর সাত থেকে আট মাস আমরা দেখেছি, দেশের রাজনৈতিক দলগুলো কিভাবে ক্ষমতার জন্য আসন ভাগবাটোয়ারার জন্য ব্যস্ত হয়ে পড়েছিল। একটা গণ-অভ্যুত্থানকে তারা গণ-অভ্যুত্থান বলেই স্বীকার করতে চায় না। তারা মনে করে, শুধু ক্ষমতার পরিবর্তনের জন্যই এই গণ-অভ্যুত্থান হয়েছিল।

নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘নতুন দল করা আমাদের লক্ষ্য ছিল না। আমাদের লক্ষ্য ছিল এই দেশটাকে পুনর্গঠন করা। এই দেশটাকে ভালো মতো তৈরি করা। বিদ্যমান রাজনৈতিক দলগুলোর নেতৃত্বে দেশ পুনর্গঠন হাওয়া সম্ভব হলে হয়তো আমাদের নতুন দল করার প্রয়োজনই হত না। কিন্তু আমরা আস্থা রাখতে পারিনি। আমরা মনে করি দেশ পুনর্গঠনের জন্য, একটি সমৃদ্ধ বৈষম্যহীন গণতান্ত্রিক বাংলাদেশের জন্য এই গণ-অভ্যুত্থান হয়েছিল। আপনার সন্তান, আমাদের ভাইয়েরা রাজপথে নেমেছিল। সেই নতুন দেশ গড়ার আহ্বান নিয়ে দুর্নীতিমুক্ত দেশ গড়ার প্রত্যায়ে আপনাদের দরজায় এসেছি।’

তিনি বলেন, ‘আজ আমরা মুক্তভাবে কথা বলতে পারছি, জুলাই অভ্যুত্থানে শহীদ ও আহতদের ত্যাগের ফলে। কিন্তু এক বছর হয়ে গেলেও আমরা সেসব শহীদ, আহতদের আত্মত্যাগকে যথাযথভাবে সম্মান দেখাতে পারিনি। নড়াইলের তিনজন শহীদ হয়েছেন, আরও অনেক ভাইবোন আহত হয়েছিলেন। এই জেলায় অনেক গুনী মানুষের জন্ম। এস এম সুলতান, বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদের এলাকা নড়াইল। শিল্প সৌন্দর্য, বিদ্রোহ সব কিছুর মিশেলে এই জেলা। তারাপরও আমরা দেখতে পাই নড়াইলে নানা অব্যবস্থাপনা, রাস্তাঘাট থেকে শুরু করে চাঁদাবাজ, সন্ত্রাস নানামুখী সমস্যায় জর্জরিত এ এলাকার বাসিন্দারা। আমরা আপনাদের এলাকার সমস্যা দূর করতে চাই। আপনারা যদি আমাদের ওপর আস্থা রাখেন, আমরা আপনাদের জন্য, বাংলাদেশের মানুষের জন্য কাজ করবো।’

নাহিদ আরও বলেন, গত ৫৪ বছরের বাংলাদেশ আমরা দেখেছি। গত ১৬ বছরের ফ্যাসিস্ট সময়ও আমরা দেখেছি। সব রাজনৈতিক দলকে আপনাদের দেখা হয়েছে। এই নতুন তরুণ নেতৃত্ব, বিকল্প নেতৃত্ব তৈরি হয়েছে, যারা আপনাদের কথা বলতে চায়। বাংলাদেশকে শক্তিশালী রাষ্ট্র হিসেবে বিশ্বের বুকে গড়ে তুলতে চায়। এখন আপনাদের সামনে সুযোগ এসেছে নতুন একটি শক্তির উত্থান ঘটাতে। আমরা চাই, আপনারা আমরা মিলে ঐকমত্যের ভিত্তিতে এই দেশটাকে গড়ে তুলব। আমরা চাই আগামীর বাংলাদেশে নতুন করে কোনো স্বৈরাচার যাতে না হতে পারে। আগামীর বাংলাদেশে আপনার আমার কথা বলার অধিকার থাকবে, ভাত-কাপড়ের অধিকার থাকবে, মেধা ও যোগ্যতার ভিত্তিতে চাকরির অধিকার থাকবে। থাকবে না কোনো বৈষম্য।

‘দেশ গড়তে জুলাই পদযাত্রা’ কর্মসূচির অংশ হিসেবে আজ দশম দিন বিকেলে মাগুরা থেকে নড়াইলে এসেছিলেন এনসিপির কেন্দ্রীয় নেতাকর্মীরা। সেখানে জেলা জাতীয় নাগরিক পার্টি এক সংক্ষিপ্ত সমবেশের আয়োজন করে। এতে সভাপতিত্ব করেন জেলার প্রধান সমন্বয়কারী অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট কর্নেল এম সাব্বির আহমেদ। 

সমাবেশে জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আগত কয়েক হাজার মানুষের সমাগম ঘটে। সেখানে এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম ছাড়াও দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ, উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম, মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী, জাতীয় যুবশক্তির কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সদস্য সচিব মাহমুদা সুলতানা রিমি ছিলেন।

আগের নির্বাচন কমিশনের সমালোচনা করে এনসিপির দক্ষিণাঞ্চলের মুখোসংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, ‘আগেও নির্বাচন কমিশন ছিল- হুদা নির্বাচন কমিশন, রকিব নির্বাচন। আমাদের নির্বাচন কমিশনাররা দিনের ভোট রাতে করে দিয়েছেন। তারা পুলিশ-সেনবাহিনীকে সাক্ষী রেখে রাতের বেলায়ই ভোট কেটে রেখেছিলেন। এমন শুনেছি, কবর থেকে মরা মানুষ ভোট দিয়েছিলেন। এগুলো ছিল হুদা কমিশনের কাজ। এই হুদা কমিশনের নুরুল হুদার পরিণতি কিন্তু আজকে জাতি দেখছে। জুতার মালা গলায় দিয়ে উনি কারাগারে নিক্ষিপ্ত হয়েছেন।’

এরপর হাসনাত আবদুল্লাহ বর্তমান নির্বাচন কমিশন প্রসঙ্গে বলেন, ‘আমাদের নির্বাচন কমিশন বলে দিয়েছে, শাপলা মার্কা নাকি আমাদেরকে দেয়া হবে না। আপনারা জেনে থাকবেন, তারা (নির্বাচন কমিশন) মিটিং করেছে। কিন্তু মিটিং হওয়ার আগেই তারা ফলাফল জানিয়ে দিয়েছেন। অর্থাৎ ভোটের আগের ফলাফলের মতো আমাদের এখনকার নির্বাচন কমিশন মিটিংয়ের আগেই ফলাফল জানিয়ে দেয়। আমরা ধিক্কার জানাই, এই নির্বাচন কমিশনের দ্বিচারিতাকে।’

এনসিপির উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম বলেন, ‘ভোটের আগে ৫০০ থেকে ১ হাজার টাকার জন্য নিজেদের ব্যক্তিত্ব বিক্রি করে নিজের, দেশ ও জাতির ক্ষতি করবেন না। আমরা যেন কোনো ব্যক্তির দাস না হয়ে যাই। আর একটা কথা মনে রাখবেন, নড়াইলে যেই চাঁদাবাজি করবে তার পরিচয় চাঁদাবাজ, সে যে দলেরই হোক। স্বপ্নের বাংলাদেশ গড়তে আমরা দেশের সব জেলায় যাব, জনগণের মতামত শুনে একটি গণতান্ত্রিক ইশতেহার তৈরি করবো।’