Charmonai Pir Shaheb Mufti Syed Muhammad Rezaul Karim addressing a meeting of the Islami Muktijoddha Parishad at IAB auditorium on Saturday 23 Dec 2023.
ইসলামী মুক্তিযোদ্ধা পরিষদের আলোচনা সভায় পীর সাহেব চরমোনাই, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ-এর আমীর মুফতী সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম পীর সাহেব চরমোনাই বলেছেন, বর্তমান সরকার মুক্তিযুদ্ধের চেতনার নামে ব্যবসা করছে। চেতনার নামে সাংবিধানিক সকল প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করে দিয়েছে।
স্বাধীনতাযুদ্ধে নেতৃত্বদানকারী সংগঠন আওয়ামী লীগ মানুষের নাগরিক ও ভোটাধিকার কেড়ে নিয়েছে। যে স্বপ্ন ধারণ করে স্বাধীনচেতা মানুষ নিজেদের জীবন বিলিয়ে দিয়ে দেশকে পাকিস্তানীদের হাত থেকে রক্ষা করেছেন স্বাধীনতার দীর্ঘ ৫৩ বছর পরও দেশবাসীর স্বপ্ন পুরণ হয়নি। শোষণ, বঞ্চনা ও বৈষম্যের বিরুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধ হলেও এখন সর্বক্ষেত্রে চরম বৈষম্য বিরাজ করছে।
দেশবাসী একটি লাল-সবুজ পতাকা ছাড়া আর কিছুই পায়নি। বরং স্বাধীনতাকে ভারতের গোলামীর মাধ্যমে প্রশ্নবিদ্ধ করা হয়েছে। পীর সাহেব চরমোনাই বলেন, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের যখন বলেন, ‘ভারত আছে তো আমরা আছি’ তখন আমাদের শঙ্কা হয় আমাদের স্বাধীনতা নিয়ে। সরকারের অতি তাঁবেদারির কারণে ভারত বাংলাদেশকে তাদের অঙ্গরাজ্য মনে করে যাইচ্ছে তাই করছে।
স্বাধীনতার পূর্বে ভোটাধিকার কেড়ে নেয় পাক হানাদার বাহিনী, আর এখন ভাত ও ভোটাধিকার কেড়ে নেয়, বতমান সরকার। তিনি বলেন, পাকিস্তান আমলে মানুষ ভোট
দিতে পারতো, এখন মানুষ ভোটও দিতে পারছে না। ধনী-দরিদ্রের বৈষম্য এখন অনেক
বেশি। সামাজিক ন্যায় বিচার, মানবিক মূল্যবোধ ও অর্থনৈতিক বৈষম্য থেকে মুক্তির লক্ষে যুদ্ধ হয়েছিলে। তিনি পাতানোর নির্বাচন বাতিল করে দেশকে ভয়াবহ সংঘাতের হাত থেকে রক্ষার আহ্বান জানান।
আজ রবিবার বিকেলে পুরানা পল্টনস্থ আইএবি মিলনায়তনে ইসলামী মুক্তিযোদ্ধা পরিষদ বাংলাদেশের উদ্যোগে ‘বিজয়ের ৫৩ বছর; প্রাপ্তি ও প্রত্যাশা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। সংগঠনের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব আব্দুল ওয়াদুদের সভাপতিত্বে এবং সেক্রেটারী বীর মুক্তিযোদ্ধা খালেকুজ্জামানের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন, দলের মহাসচিব প্রিন্সিপাল হাফেজ মাওলানা ইউনুছ আহমাদ, সহকারি মহাসচিব মাওলানা মুহাম্মদ ইমতিয়াজ আলম, কেন্দ্রীয় প্রচার ও দাওয়াহ সম্পাদক মাওলানা আহমদ আবদুল কাইয়ূম। অন্যান্যের মধ্যে মাওলানা আবুল কালাম আজাদ, মাওলানা কেএম শরীয়াতুল্লাহ, ইসলামী মুক্তিযোদ্ধা পরিষদের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মালেক, সাংগঠনিক সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা জিএম কিবরিয়া, মুক্তিযোদ্ধা গাজী আইনুল ইসলাম, বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল হোসেন।
পীর সাহেব চরমোনাই বলেন, সরকার জনগণের ভোটাধিকার কেড়ে নিয়েছে। বিরোধী
দলবিহীন একতরফা নির্বাচনের নামে দেশকে ভয়াবহ বিপর্যয়ের দিকে ঠেলে দিচ্ছে।
সরকার নির্বাচন নির্বাচন খেলার নামে দেশের হাজার হাজার কোটি টাকা নষ্ট করছে। এভাবে দেশের সম্পদ নষ্টের কোন মানে হয় না। তিনি পাতানোর নির্বাচন থেকে ফিরে আসার আহ্বান জানান। পীল সাহেব চরমোনাই পাতানোর নির্বাচনে দেশবাসীকে কোনভাবেই সহযোগিতা করা থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, দেশপ্রেমিক ঈমানদার জনতা ভোটকেন্দ্র যাবে না এবং ভোট দিবে না।
মাওলানা মুহাম্মদ ইমতিয়াজ আলম বলেন, সরকার মুক্তিযুদ্ধের চেতনার ব্যবসা করে দেশকে ধ্বংস করছে। অর্থ পাচার, লুটপাট করছে। রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, মানবাধিকারসহ রাষ্ট্রের সকল সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করে দিয়েছে।
স্বাধীনতা সংগ্রামের মৌলিক শ্লোগান সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও ন্যায় থেকে জাতি বঞ্চিত। দেশে বিচার নেই, সর্বত্র দলীয়করণ চলছে। সর্বত্র সাম্যের বিপরীত বৈষম্য সৃষ্টি করে রেখেছে সরকার। তিনি বলেন, বাক-স্বাধীনতা কেড়ে নিলে দেশে অশুভ শক্তি মাথাচাড়া দিয়ে উঠে।
মাওলানা আহমদ আবদুল কাইয়ূম বলেন, সরকার দেশকে দুর্ভিক্ষের দিকে নিয়ে যাচ্ছে। সরকারের অনেক মন্ত্রীরাও স্বীকার করেন, দেশ খাদের কিনারায় পৌঁছেছে। তিনি স্বাধীনতার চেতনার ব্যবসা বন্ধ করে দেশকে অনিবার্য ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষার দাবি জানান। তিনি তামাশার নির্বাচন বন্ধ করার দাবি জানিয়ে বলেন, ২০১৪ ও ২০১৮ সালের মতো দলবাজ ও পদলেহী ইসি ৭ জানুয়ারি তামাশার নির্বাচনের আয়োজন করছে।
সভাপতির বক্তব্যে বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব আব্দুল ওয়াদুদ বলেন, সরকার মুক্তিযুদ্ধে চেতনার নামে মানুষের অধিকার কেড়ে নিয়েছে। সর্বত্র দলীয়করণ করেছে। ৫৩ বছরে মানুষ ভাত ও ভোটের অধিকার ফিরে পায়নি।আমরা মানুষের এ করুণ দৃশ্য দেখতে জীবনবাজি রেখে যুদ্ধ করিনি। মানুষ এখনও অধিকার ফিরে পাবে না, ইসলাম ও মানবতা ভুলন্ঠিত হবে জানলে যুদ্ধই করতাম না। তিনি বিতর্কিত সংসদ ভেঙে দিয়ে জাতীয় সরকারের অধীনে একটি নির্বাচনের ব্যবস্থা করে দেশকে মহাসঙ্কট থেকে বাচানোর আহ্বান জানান। তিনি সরকারকে ভোট চুরি, ভোট-ডাকাতির পথ থেকে সরে দাড়ানোর আহ্বান জানান।
বার্তাপ্রেরক - আহমদ আবদুল কাইয়ূম, প্রচার ও দাওয়াহ বিষয়ক সম্পাদক, ০১৭১১৪৬২৪৩২