News update
  • Nations finalize historic pandemic deal after 3 yrs of talks     |     
  • NCP May Boycott Polls Without Major Reforms: Nahid      |     
  • Yunus Named in TIME’s 100 Most Influential     |     
  • BNP Urges US to Keep Bangladesh Tariffs Fair     |     
  • BB Seeks Detailed List of Wilful Defaulters with Identities     |     

চুরির আগেই ঠেকানোর ব্যবস্থা করতে হবে, পরে বুদ্ধি বাড়িয়ে লাভ নেই : গভর্নর

গ্রীণওয়াচ ডেস্ক ব্যাঙ্কিং 2025-04-12, 7:16am

gbhrnr_chbi-d12ff75eb2ff5574a20bf4da8cc03c0f1744420610.jpg




বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর বলেছেন, বাংলাদেশ মানি লন্ডারিংয়ে একটা বড় ভিকটিম। আমাদের দেশের ব্যাংকিং খাতে কতিপয় পরিবার বা গোষ্ঠী মানি লন্ডারিং করে সম্পদ চুরি করে বাইরে নিয়ে গেছে। আমরা সেই সম্পদ ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করছি। প্রিভেনশন ইজ বেটার দেন কিউর, রোগের উৎপত্তি রোধ করা প্রধান দায়িত্ব। রোগ সারানো হচ্ছে পরে। চুরির আগেই ঠেকানোর ব্যবস্থা করতে হবে, পরে বুদ্ধি বাড়িয়ে লাভ নেই। ভবিষ্যতে যেন আর কোনোভাবেই না হয়।

শুক্রবার (১১ এপ্রিল) বিকেলে মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ কার্যক্রম এবং সমসাময়িক ব্যাংকিং নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের চট্টগ্রাম কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর এ মন্তব্য করেন।

আদালতের মাধ্যমে না গিয়ে আলোচনার মাধ্যমে টাকা ফেরানোর চেষ্টা জানিয়ে গভর্নর আহসান এইচ মনসুর বলেন, ‘সব বিষয় আদালতের মাধ্যমে নয়, আউট অব কোর্ট সেটেলমেন্ট বলে একটা কথা আছে। তার আগে সব তথ্য নিতে হবে। যখন সব তথ্য থাকবে তখন তারা নেগোসিয়েশনে আসবে। নেগোসিয়েশন গেলে সব তথ্য নিয়েই যাওয়া লাগবে। না হলে তো আমরা ঠকে যাব। ভবিষ্যতে এমন কোনো কিছু যেন না হয়, তা আমরা ঠিক করতে আসছি। এজন্য আমরা প্রয়োজনীয় রেগুলেটরি সংশোধন করতে চাই।’

পাচার হওয়া অর্থ দেশে ফেরানোর প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘পাচার হওয়া অর্থ ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ একেবারেই নতুন। এটি দেশের আইনে নয়, বিদেশের আইনের সঙ্গে সংযোগ করে করতে হবে। কোথায় কী আছে সে তথ্য আগে আনতে হবে। আগামী ছয় মাসের মধ্যে এস্টেট ফ্রিজ করা হবে। এটিই হবে প্রাথমিক সফলতা। এস্টেট ফ্রিজ করার পর আদালতের মাধ্যমে বাকি প্রক্রিয়া হবে। সঠিক তথ্য না পেলে আদালতে টিকবে না। কাজেই আমাকে সেইভাবে তথ্য নিয়ে আসতে হবে। সেই জন্য বিদেশি অ্যাসেট ট্রেসিং ফার্মের মাধ্যমে তাদের ব্যাংক হিসাব, কোম্পানি ও সম্পদ শনাক্ত করতে হবে। আমরা যথেষ্ট সহযোগিতা পাচ্ছি বিদেশিদের কাছ থেকে। তারপরেও জিনিসটা এত সহজ নয়, সময়সাপেক্ষ ব্যাপার। আমাদের লক্ষ্য ছয় মাসের মধ্যে বেশ কয়েকটি দেশে সম্পদ শনাক্ত করা। এরপর আদালতে যেতে হবে।

সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ ব্যাংক গভর্নর আহসান এইচ মনসুর বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের মূল দায়িত্ব অর্থনীতির ভারসাম্য ফিরিয়ে আনা। ইতোমধ্যে বেশকিছু সাফল্য আমার অর্জন করেছি। এখন আর্থিক ঘাটতি নেই, রিজার্ভ স্থিতিশীল, রফতানি বেড়েছে ১১ থেকে ১২ শতাংশ, উৎসাহব্যঞ্জক রেমিট্যান্স প্রবৃদ্ধি ২৬ থেকে ২৭ শতাংশ। স্বস্তির জায়গায় এসেছি কোনো সংকট নেই মন্তব্য করেন তিনি।

দেশে আগে মুদ্রাস্ফীতি কমিয়ে দেখানো হত জানিয়ে আহসান এইচ মনসুর বলেন, ‘খাদ্য মুদ্রাস্ফীতি ৯-১০ শতাংশ দেখানো হত। কিন্তু প্রকৃতভাবে দেখা গেছে ১৩-১৪ শতাংশ। গত মাসে সেটি দেখা গেছে ৮-৯ শতাংশে আছে। সামগ্রিকভাবে মুদ্রাস্ফীতি স্বস্তির দিকেই আছে। আগামী বছর সেটিকে ৫ শতাংশ বা তার নিচে নামিয়ে আনতে পারব বলে ধারণা করছি।’

কী পরিমাণ অর্থ পাচার হয়েছে সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে গভর্নর বলেন, ‘সব মিলিয়ে আমার ধারণা আড়াই থেকে তিন লাখ কোটি টাকা পাচার করেছে। চট্টগ্রামেরই বড় গ্রুপের অন্ততপক্ষে সোয়া লাখ কোটি টাকা থেকে দেড় লাখ কোটি টাকা নিয়েছে ব্যাংকিং খাত থেকে। বেক্সিমকোর পাচার হওয়ার অর্থ ৫০ হাজার কোটি টাকার মতো। আরও কিছু গ্রুপ আছে। ২০, ৪০, ৫০ হাজার কোটি টাকা নিয়েছে। আমার ধারণা বড় গ্রুপগুলোর আড়াই-তিন লাখ কোটি টাকা হতে পারে। ছোটগুলো বাদে। সেগুলোও আদায় করতে হবে অর্থঋণ আদালতসহ অন্যান্য আইনি প্রক্রিয়ায়।

পলিসি রেসপন্সে সময় লাগে উল্লেখ করে গভর্নর আহসান এইচ মনসুর বলেন, ওষুধ দিলেই সব রোগী ভালো হয়ে যায় না, সময় লাগে। আমরা সর্বাত্মক চেষ্টা করেছি সব সার যেন সময়মতো আসে। বোরো ধান বুনতে যেন কোনো অসুবিধা না হয় কৃষকের। বিদ্যুতের সরবরাহ যেন বিঘ্নিত না হয়। বৈদেশিক মুদ্রার সংকট থাকা সত্ত্বেও আমরা তা করতে পেরেছি। আমাদের নিজের টাকাতেই করেছি।

অর্থ পাচারে বাংলাদেশ ব্যাংকের অনেকে জড়িত আছেন সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে গভর্নর বলেন, ‘অমূলক তথ্যের ভিত্তিতে কাউকে চাকরিচ্যুত করার পক্ষে আমি নই। সুনির্দিষ্ট তথ্য প্রমাণ থাকলে আমরা ব্যবস্থা নেব। দুদক বা রাষ্ট্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা যদি তথ্য প্রমাণ দেয় যে কেউ জড়িত আছে আমরা ব্যবস্থা নেব। যাদের বিরুদ্ধে তথ্য আছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।’

বাংলাদেশ ব্যাংক চট্টগ্রামের উপপরিচালক মো. জোবাইর হোসেনের সঞ্চালনায় সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংক চট্টগ্রামের নির্বাহী পরিচালক মো. জামাল উদ্দিন, বাংলাদেশ ফাইন্যান্স ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের পরিচালক মো. আনিসুর রহমান, বাংলাদেশ ব্যাংক চট্টগ্রাম অফিসের পরিচালক মো. সালাহ উদ্দীন, মো. আরিফুজ্জামন, মো. আশিকুর রহমান, স্বরুপ কুমার চৌধুরী। বাসস।