News update
  • UN Report Calls for New Thinking to Secure a Sustainable Future     |     
  • BNP moves to finalise seat sharing as alliance friction grows     |     
  • BNP plans universal 'Family Card' for all women: Tarique Rahman     |     
  • Tangail saree weaving gets recognition as intangible cultural heritage     |     
  • Chuadanga farmers thrive as cauliflower yields hit new high     |     

অতিথি পাখির বিচরণ আর দুষ্টুমিতে নান্দনিক হয়ে উঠেছে কুয়াকাটার চর বিজয়

বন্যপ্রানী 2025-12-07, 11:04pm

guest-birds-of-winter-flock-to-char-bijoy-in-kuakata-to-the-delight-of-turists-3397b64afe6909a2cb38e0669d0ff5471765127091.jpg

Guest birds of winter flock to Char Bijoy in Kuakata to the delight of turists.



পটুয়াখালী: অতিথি পাখির অবাধ বিচরণ আর দুষ্টুমিতে নান্দনিক হয়ে উঠেছে কুয়াকাটার চর বিজয়। প্রকৃতির হেয়ালিপনায় সমুদ্রের বুকে জেগে ওঠা চর বিজয়ে এখন তাদের যেন বসতি। পাখির মিষ্টি ডাকে সমুদ্র ও যেন সাড়া দেয় সেখানে। এজন্য কুয়াকাটায় বেড়াতে আসা পর্যটকরা ছুটে চলছেন সেখানে। 

শীতের তীব্রতা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সমুদ্রের বুকে জেগে ওঠা দ্বীপ চর বিজয়ে আসতে শুরু করেছে হরেক রঙের অতিথি পাখি। এসব পাখির কলকাকলিতে মুখরিত হয়ে এখন পটুয়াখালীর সাগরকন্যা কুয়াকাটার চর বিজয়। মানুষ এদের বিরক্ত না করায় নিরাপদ আশ্রয় হিসেবে চর বিজয়কে বেছে নিয়েছে অতিথি পাখিরা। 

নিজেদের মধ্যে খুনসুঁটি, দল বেঁধে নীল আকাশে উড়ে চলা। সমুদ্রের জলে জোড়ায় জোড়ায় লুটোপুটি। আবার কখনো বা খাবারের খোঁজে এদিক ওদিক ঘোরা ঘুরির দৃশ্য, পাখিপ্রেমীদের কাছে এক বিরল ছবি হয়ে উঠছে এখন কুয়াকাটার চর বিজয় ।

মানুষের খুব একটা বিচরণ না থাকায় শীতে কুয়াকাটা সংলগ্ন সমুদ্রের মাঝে জেগে ওঠা এ দ্বীপটিতে নানা প্রজাতির রং-বেরঙের পাখির আগম ঘটেছে। দেখলে মনে হবে যেন পাখির মেলা বসেছে। তারা দল বেঁধে উড়ে বেড়াচ্ছে এক  প্রান্ত  থেকে অপর প্রান্তে। একই সাথে এ দ্বীপটিতে রয়েছে লাল কাঁকড়ার অবাধ বিচরণ। এসব সৌন্দর্য উপভোগ করতে আগত পর্যটকরা প্রতি নিয়ত ছুঁটে যাচ্ছেন চর বিজয়ে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, প্রায় ৫ হাজার একর আয়তন নিয়ে বঙ্গোপসাগরের বুক চিরে জেগে ওঠে এ দ্বীপটি। কুয়াকাটা সৈকত থেকে প্রায় ৩০ কিলোমিটার পূর্ব-দক্ষিণে সাগরের মধ্যে এর অবস্থান। প্রতি বছরের ন্যায় এ বছরও শীতের শুরুতে এই দ্বীপটিতে আশ্রয় নিয়েছে জুলফি পানচিল, গাঙচিল, ধূসর মাথা টিটি, সিথি হাঁস, খুন্তে হাঁস, খয়রা চখাচোখি, ছোট পানকৌড়ী, ছোট বগা, বড় বগা, পিয়ং হাঁস, ধূসর বগা, পাতি হাঁস, কালো মাথা গাঙচিল, ছোট ধলাজিরিয়া, ছোট নর্থ জিরিয়া, গো বগা, মেটে রাজ হাঁস, পাতি বাটান, চেগা, সরালি, বড় সরালি, চখাচখি, শামুকখোল, পানকৌড়ি, মাথামোটা টিটি, হটটিটি, গাঙ কবুতর, জলমোরগ ও নানা  প্রজাতির বক সহ নানান প্রজাতির পাখি। সুদূর সাইবেরিয়াসহ দূর দূরান্ত থেকে আসা এসব অতিথি পাখি বছরের নভেম্বরের প্রথম দিকেই আসতে শুরু করে এবং মার্চ পর্যন্ত অবস্থান নেয় দ্বীপটিতে। নানা প্রজতির পাখি খাবারের খোঁজে ওড়াউড়ি করছে, পানিতে ডুব দিয়ে খাবার খুঁজছে। ক্লান্ত পাখিরা বিশ্রাম নিচ্ছে পুঁতে রাখা খুঁটি ও জেগে ওঠা চরে। একটু উষ্ণতার খোঁজে ছুটে আসা এসব নানা রঙের পাখির আগমনে তাই চর বিজয় হয়ে উঠেছে  পর্যটকদের কাছে আকর্ষণীয় স্থান । এসব পাখি শিকারকে নিরুৎসাহিত করতে  মাঠে রয়েছে স্থানীয় পরিবেশবাদী সংগঠন ও বন বিভাগ।

স্থানীয় পর্যটন কর্মীরা জানান, সমুদ্রের বুকে জেগে ওঠা দ্বীপটির নাম ‘চর বিজয়’ রাখা হলেও গভীর সাগরে মাছধরা জেলেদের কাছে এটি ‘হাইরের চর’ নামে পরিচিত। ইতোমধ্যে দ্বীপটিতে বন বিভাগ ও স্থানীয় সেচ্ছাসেবী সংগঠনের পক্ষ থেকে বেশ কিছু ম্যানগ্রোভ প্রজাতির চারা গাছ রোপন করা হয়েছে। মুলত ২০১৭ সাল থেকে এটি যোগ করেছে নতুন মাত্রা। এই চরের পাখি আর লাল কাঁকড়ার সমাগমে আকৃষ্ট হয় সব শ্রেণির পর্যটকরা। তবে চর বিজয় ভবিষ্যতে সেন্টমার্টিনের মতো জনপ্রিয়তা পাবে বলে মনে করেন তারা। 

দ্বীপটি ঘুরে এসে পর্যটকরা বলেন, চারদিকে সাগরের অথৈই পানি। এরই মধ্যে আকাশ আর মাটির যেন অদ্ভুত এক স্পর্শ, একটু ছুঁয়ে দেখা। 

ঢাকা থেকে কুয়াকাটায় বেড়াতে আসা পর্যটক আশরাফুল ইসলাম নূর জানান, কুয়াকাটায় এই প্রথমবার ভ্রমণে এসেছি। সমুদ্রের বুকে জেগে ওঠা চর বিজয় সম্পর্কে কোনো ধারণা ছিলনা। এসে দেখি, কুয়াকাটার ‘চর বিজয়’ দ্বীপটি পর্যটকদের কাছে ভীষণ দর্শনীয় স্থান । - গোফরান পলাশ