News update
  • UN Chief Urges Leaders to Curb Warming, Protect Planet     |     
  • Tk 3.38cr Project to Restore Sonadia’s Biodiversity     |     
  • Global Emissions Fall Slowly, Experts Urge Renewables Push     |     
  • Hurricane Melissa: UN Appeals $74M to Aid 2.2M in Cuba     |     
  • Doha Summit Stresses Urgent Investment in People and Peace     |     

শেরপুরে সন্ধ্যা হলেই পাহাড় থেকে নেমে আসছে হাতির পাল

গ্রীণওয়াচ ডেস্ক বন্যপ্রানী 2025-10-20, 8:03am

rferwerwer-5c550fa93e08e76fe6ac504ea720acb71760925804.jpg




ধান পাকার সময় ঘনিয়ে আসছে। আর এমন সময়ে শেরপুরের শ্রীবরদী, ঝিনাইগাতী ও নালিতাবাড়ী উপজেলায় শুরু হয়েছে বন্যহাতির আক্রমণ। সন্ধ্যা হলেই পাহাড় থেকে নেমে আসে তারা।

পাহাড়ে পর্যাপ্ত খাদ্য না থাকায় ক্ষুধার্ত হাতিগুলো খাবারের সন্ধানে নেমে আসছে ফসলের মাঠে। খেয়ে-মাড়িয়ে সাবাড় করছে অসহায় কৃষকের ধানক্ষেত। ক্ষেতের চারপাশে আগুন জ্বালিয়ে, মশাল হাতে রাত জেগে ঢাকঢোল পিটিয়ে আর পটকা ফুটিয়ে ফসল রক্ষা করা যাচ্ছেনা ঘাম ঝড়ানো কষ্টের ফসল রক্ষার চেষ্টা করছেন কৃষকরা।

বনবিভাগ সূত্রে জানা গেছে, প্রায় দেড় দশক আগে সীমান্ত অতিক্রম করে প্রায় শতাধিক বন্যহাতির দল বাংলাদেশে ঢুকে পড়ে। তখন থেকেই হাতির পালটি শেরপুরের তিনটি উপজেলার পাহাড়ী অঞ্চলগুলোতে বসবাস করা শুরু করে। এই হাতিগুলো অন্তত তিনটি ভাগে বিভক্ত হয়ে উপজেলাগুলোর সীমান্ত এলাকার পাহাড়ী জঙ্গলে আস্তানা গাড়ে। 

একটা সময় হাতিদের জন্য পাহাড়ী বনে পর্যাপ্ত খাবারের জোগান থাকলেও ভূমিদস্যুরা দিনদিন পাহাড় কেটে সমতল সৃষ্টি করে বসতি গড়ে তোলায় হাতির আবাসন সংকট দেখা দিয়েছে। শুধু আবাসন সংকটই নয়, পাহাড়ের বনাঞ্চলের মানুষের আনাগোনায় বিশালদেহী এই প্রাণীগুলোর খাদ্যের সংকটও তৈরি হয়েছে।

ফলে হাতি তার নিজস্ব আবাসনসহ খাবার হারিয়ে দিশেহারা হয়ে লোকালয়ে হানা দেয়। এলাকাবাসীরা জানান, সন্ধ্যা হলেই শ্রীবরদী, ঝিনাইগাতী ও নালিতাবাড়ীর পাহাড়ী সীমান্তবর্তী এলাকার ধান ক্ষেতগুলোতে নেমে আসে ৪০ থেকে ৫০টি বন্যহাতির পাল। তারা খেয়ে আর পায়ে মাড়িয়ে নষ্ট করে একরের পর একর ফসলের ক্ষেত।

এতে বিপাকে পড়েছেন স্থানীয় কৃষকরা। আর তাই হাতি তাড়াতে তারা নানা কৌশল অবলম্বন করছেন। দিনে বা রাতে হাতির পাল লোকালয়ে হানা দিলে ঢাক-ঢোল পিটিয়ে, মশাল জ্বালিয়ে আর হই-হুল্লোর করে ফসল রক্ষা করছেন তারা। কিন্তু এই কৌশলে ব্যাপক ঝুঁকি রয়েছে।

হাতি ও মানুষের যুদ্ধে কখনও প্রাণ হারাচ্ছে হাতি, কখনওবা মানুষ। হাতি তাড়াতে গিয়ে হাতির পায়ে পিষ্ট হয়ে এখন পর্যন্ত দেড় শতাধিক মানুষ মারা গেছে। হাতিও মারা গেছে প্রায় শতাধিক। এ কারণে নিজেদের ফসল রক্ষায় কয়েক দশক ধরে চলা যুদ্ধের নিরসন চায় পাহাড়ী জনপদের মানুষগুলো।

স্থানীয় কৃষক মোতালেব জানান, কয়েকদিন থেকে শ্রীবরদীর বালিজুড়ি রেঞ্জের অফিস পাড়া ও খ্রিষ্টান পাড়াসহ আশেপাশের এলাকায় প্রায় অর্ধশতাধিক বন্যহাতির একটি দল অবস্থান করছে। দিনে-রাতে যেকোনো সময় এই পালটি ফসলের ক্ষেতে নেমে ধানগাছ খেয়ে সাবাড় করে দিচ্ছে। পা দিয়ে মাড়িয়ে নষ্ট করছে। আমরা এখন এই হাতির পালের কাছে অসহায়। আমরা শান্তিতে বাঁচতে চাই।

হাতির আক্রমণে ফসল হারানো এই কৃষক কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, প্রতিবছর কয়েকবার করে হাতির আক্রমণে আমরা নিঃস্ব হয়ে যাচ্ছি। ধার-দেনা করে ফলস ফলিয়েছি। কিন্তু গতকাল রাতে হাতির পাল এসে সব ধানগাছ খেয়ে এবং পা দিয়ে মাড়িয়ে নষ্ট করে দিয়ে গেছে। এখন আমার স্ত্রী-সন্তান নিয়ে কি খাব, কোথায় যাব।

এমন পরিস্থিতিতে হাতির আক্রমণে ধান বা সবজিক্ষেতের বা ঘরবাড়ির ক্ষতি হলে সরকারিভাবে ক্ষতিপূরণ দেয়ার আশ্বাস দিয়েছেন ময়মনসিংহ বনবিভাগের বালিজুরী রেঞ্জের বিট কর্মকর্তা মোঃ মাজহারুল হক। বনবিভাগের তথ্যমতে, ২০১৪ সাল থেকে এপর্যন্ত হাতির আক্রমণে ৩০ জন মানুষের মৃত্যু হয়েছে। অপরপক্ষে মারা গেছে ২৮টি হাতি। হাতির আক্রমণে হতাহত এবং ফসলসহ ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ দেয়া হয়েছে প্রায় এক কোটি টাকা।