
ইসলামী চিন্তাবিদ ড. জাকির নায়েকের বাংলাদেশে আসার ব্যাপারে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সিদ্ধান্ত নেবে বলে জানিয়েছেন ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন।
রোববার (২ নভেম্বর) সচিবালয়ে শুরায়ে নেজাম ও সাদপন্থিদের সঙ্গে বৈঠক শেষে এ কথা জানান তিনি।
জাকির নায়েকের বাংলাদেশে আসার বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা বলেন, ডা. জাকির নায়েককে যারা আনতে চাচ্ছেন তাদের একটি প্রতিনিধি দল আমার সঙ্গে দেখা করেছেন। আমি ওনাদের বলেছি এটা আমার ব্যাপার নয়। এটা পররাষ্ট্র ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ব্যাপার। এ দুই মন্ত্রণালয় অনুমতি দিলে জাকির নায়েক বাংলাদেশে আসতে পারবেন।
তিনি আরও বলেন, এরইমধ্যে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেছেন, তিনি এ ব্যাপারে অবহিত নন। কোনো বিদেশি মেহমান যখন আসে, তখন এটি পররাষ্ট্র ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ডিল করে থাকে। ওনাদের সিদ্ধান্ত নিতে হবে তার (জাকির নায়েক) ব্যাপারে। ধর্ম উপদেষ্টা হিসেবে আমি এ বিষয়ে কোনো এখতিয়ার রাখি না। সিদ্ধান্ত আমি দিতে পারি না।
জাকির নায়েকের আসার ব্যাপারে আপনার সম্মতি আছে কি-না–এমন প্রশ্নের জবাবে আ ফ ম খালিদ হোসেন বলেন, না, আমার সম্মতি-অসম্মতি বড় কথা নয়। কোনো মেহমান দেশে আসবেন সেটি দেখভাল করবেন পররাষ্ট্র ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। উনারা যদি পারমিট করেন তবে উনি আসবেন।
এর আগে ড. জাকির নায়েকের সম্ভাব্য বাংলাদেশ সফর নিয়ে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্রের মন্তব্য বাংলাদেশের নজরে এসেছে বলে জানায় ঢাকার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র এস. এম. মাহবুবুল আলম শনিবার (১ নভেম্বর) বাসসকে বলেন, ‘ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র একজন বিশিষ্ট ইসলামি স্কলার বা ধর্মীয় ব্যক্তিত্বের সম্ভাব্য বাংলাদেশ সফর প্রসঙ্গে যে মন্তব্য করেছেন, তা আমাদের নজরে এসেছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরাও বিশ্বাস করি যে, কোনো দেশের অন্য দেশের কোনো অভিযুক্ত বা পলাতক ব্যক্তিকে আশ্রয় দেয়া উচিত নয়।’
এর আগে গত বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নিয়মিত প্রেস ব্রিফিংয়ে মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেন, ভারত আশা করে, জাকির নায়েক ঢাকা সফরে এলে তার বিরুদ্ধে বাংলাদেশ সরকার যথাযথ পদক্ষেপ নেবে এবং ভারতের নিরাপত্তা সংক্রান্ত উদ্বেগ দূর করবে।
ব্রিফিংয়ে এক সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘সে একজন পলাতক আসামি। ভারতে তার খোঁজ চলছে। তাই আমরা আশা করি, সে যেখানেই যাক, সেখানকার লোকেরা তার বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেবে এবং আমাদের নিরাপত্তার উদ্বেগগুলো পূরণ করবে।’
এর আগে গত ২৮ অক্টোবর পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন জানান, জাকির নায়েকের সফরের বিষয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় অবগত নয়।
জাকির নায়েক রাষ্ট্রীয় আমন্ত্রণে বাংলাদেশে আসছেন এবং বিভিন্ন জেলায় ঘুরে তার কর্মসূচি পালন করবেন এমন প্রশ্নে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, জাকির নায়েককে দাওয়াত দেয়া হয়েছে বলে আমি জানি না। আমি এরকম কিছু শুনিনি। এটা আপনার কাছ থেকেই প্রথম শুনলাম।
গত ১২ অক্টোবর স্পার্ক ইভেন্ট ম্যানেজমেন্টের কর্ণধার রাজ সময় সংবাদকে জানান, সবকিছু ঠিক থাকলে আগামী ২৮ নভেম্বর ঢাকায় আসবেন ড. জাকির নায়েক। তার নিজেরই একটি অনুষ্ঠানে উপস্থিত হবেন। প্রাথমিকভাবে ঢাকার আগারগাঁওয়ে অনুষ্ঠানটি করার চিন্তাভাবনা চলছে। এ বিষয়ে সংবাদ সম্মেলন করে পরে বিস্তারিত জানানো হবে।