News update
  • Inqilab Monch Seeks Home Adviser’s Exit     |     
  • UN Calls for Calm in Bangladesh After Protest Leader’s Killing     |     
  • DMP issues 7 traffic directives for Osman Hadi’s Janaza     |     
  • Vested quarter fuelling chaos to impose new fascism: Fakhrul     |     
  • Hadi’s namaz-e-janaza at 2:30pm Saturday     |     

ছোটবেলা থেকে শিখেও ইংরেজিকে ভয় কেন?

গ্রীণওয়াচ ডেস্ক গবেষণা 2023-03-23, 5:01pm

d6262d70-86cc-11ed-90a7-556e529f9f89-7111b8916df12230ca03bd40c87cea7c1679569286.jpg




বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে এসেও ইংরেজিতে কথা বলতে বা লিখতে বেশ অস্বস্তিতে ভোগেন মুকিত হাসান। সঠিকভাবে ভাষাটি না শেখানো এবং পরীক্ষা পাশের জন্য কেবল পড়ার কারণেই এই পর্যায়ে এসেও এমনটা বোধ করেন বলে মনে করেন এই শিক্ষার্থী।

পড়াশোনা শেষে চাকরির জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন মিজ রিয়া। এসময় ইংরেজিতে বিশেষ জোর দিতে হচ্ছে বলে জানান তিনি।

স্কুল-কলেজে ইংরেজি পছন্দের বিষয় ছিল তার। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে যেকোনো ভাষায় পরীক্ষায় অংশ নেয়ার সুযোগ থাকায় বাংলাকেই বেছে নেন তিনি। কমে যায় ইংরেজির চর্চা।

ফলে এখন এসে আবার অনেকটা আগে থেকেই শুরু করতে হচ্ছে বলে জানান তিনি।

অদক্ষ শিক্ষক

বিদ্যালয়ের প্রাথমিক পর্যায় থেকেই ইংরেজি ভাষা শিক্ষা বাংলাদেশে বাধ্যতামূলক। উচ্চশিক্ষার আগে দীর্ঘ ১২ বছর শিক্ষার্থীদের ইংরেজি বিষয়টি পড়তে হয়।

কিন্তু তারপরও লিখা, পড়ে বোঝা ও যোগাযোগের ক্ষেত্রে দক্ষভাবে ভাষাটি ব্যবহারে তারা অনেকটাই পিছিয়ে।

এমনকি মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ে শিক্ষার্থীদের অকৃতকার্য হওয়ার বড় একটি কারণই ইংরেজি বিষয়। এতদিনের প্রস্তুতির পরও কেন শিক্ষার্থীরা দক্ষ হয়ে উঠছে না?

শিক্ষাবিদ ড. মঞ্জুর আহমেদ শিক্ষার্থীদের ইংরেজিতে দক্ষ না হবার কারণ হিসেবে বিদেশি ভাষা শেখার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা না থাকার বিষয়টি উল্লেখ করেন।

তিনি বলেন, একইসঙ্গে যারা শেখাবেন সেই শিক্ষকদেরই যথাযথ ভাষা দক্ষতা নেই।

তারা শ্রেণীকক্ষে পড়ান ঠিকই, কিন্তু শিক্ষার্থীরা শিখল কি না সেদিকে খেয়াল করেন না।

ফলে শিক্ষার্থীরা এত লম্বা সময় ধরেও ভাষাটি পাঠ্যপুস্তকে পড়লেও বাস্তব জীবনে কাজে লাগাতে পারছে না।

মুখস্ত-নির্ভর ইংরেজি শিক্ষা

অনেকটা একই বিষয়গুলোকে ইংরেজি অদক্ষ হবার কারণ হিসেবে চিহ্নিত করেছেন শিক্ষাবিদ সৈয়দ মঞ্জুরুল ইসলাম। তার মতে বেশ কিছু কারণে বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরা ইংরেজিতে দক্ষ হয়ে উঠছে না।

এর প্রথম কারণ হিসেবে মুখস্ত-নির্ভর ইংরেজি শিক্ষার কথা বলেন তিনি।

''একেবারে শুরু থেকে যেভাবে শেখানো উচিৎ সেভাবে মোটেও আমাদের দেশে শেখানো হয় না। আর যে বিষয়টা জীবন থেকে আহরিত না হয়ে মুখস্ত করা হয়, সে বিষয়টা মাথা থেকে খুব দ্রুত চলে যায়,'' তিনি বলেন।

''প্রয়োজনীয় শব্দটিও ব্যবহারের সময় খুঁজে পায় না।''

একই সঙ্গে শিক্ষকদের দুর্বলতার কারণেও শিক্ষার্থীরা ভাষাটিতে দক্ষ হয়ে উঠছে না বলে মনে করেন তিনি।

“প্রাইমারি স্কুলে যারা ইংরেজি শেখান তাদের অনেকেরই সেই সক্ষমতা নেই, যা থাকলে তারা ভালোভাবে পড়াতে পারবেন সেকারণে দুর্বলতাটা থেকেই যায়,'' বলেন অধ্যাপক ইসলাম।

“ভালো শিক্ষক না হলে ভালো শিক্ষার্থী হওয়া সম্ভব না,'' তিনি বলেন।

এছাড়া বলা, লিখা, শোনা ও পড়া- এই চার দক্ষতা এক সঙ্গে অর্জন না করাকে ইংরেজিতে দুর্বল ও ভাষাভীতির তৃতীয় কারণ হিসবে উল্লেখ করেন তিনি।

অফিস-আদালত থেকে ইংরেজির শ্রেণীকক্ষেও এর চর্চা নেই উল্লেখ করে চতুর্থ কারণ হিসেবে বাস্তব জীবনে ভাষাটির প্রয়োগ না থাকার কথা জানান।

''স্কুলে শেখা হচ্ছে ঠিকই, কিন্তু কথা না বললে ইংরেজিতে দক্ষ হওয়া সম্ভব না,'' অধ্যাপক ইসলাম বলেন।

পদক্ষেপ ফলপ্রসূ নয় কেন?

ইংরেজিতে শিক্ষার্থীদের সঠিকভাবে দক্ষ করার জন্য বিভিন্ন সময়ে নানা পদক্ষেপের কথা শোনা যায়। এরমধ্যে ইংরেজির ক্লাসে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ইংরেজিতেই কথা বলাসহ বিভিন্ন প্রকল্প বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।

তবে এই ধরনের প্রকল্পনির্ভরতায় প্রকৃত অর্থে ইংরেজি শেখা সম্ভব নয় বলে মনে করেন সৈয়দ মঞ্জুরুল ইসলাম।

''বিদেশি একটি ভাষা শেখার জন্য উপযুক্ত শ্রেণীকক্ষ এবং শিক্ষক তৈরি করতে হবে,'' তিনি বলেন। ''তা যদি সম্ভব না হয় তাহলে পদক্ষেপ নিয়ে কোন লাভ নেই।''

এছাড়া যে প্রকল্প নেয়া হয় তার পরবর্তী ফলোআপ করা হয় না।

বাংলাদেশের সাবেক সেনাপ্রধান ও রাজনীতিবিদ হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি থাকাকালীন ষষ্ঠ শ্রেণীর বদলে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শুরু থেকেই ইংরেজি বিষয়কে পাঠ্যপুস্তকে অন্তর্ভূক্ত করেন।

ড. মঞ্জুর আহমেদের মতে, নতুন ভাষা যুক্ত করলেও সেই পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের শেখানোর জন্য প্রয়োজনীয় শিক্ষক এবং কাঠামো তৈরি করতে পারেননি।

ফলে দিনের পর দিন বিষয়টি থাকলেও শিক্ষার্থীরা তা কেবলই পরীক্ষা পাশের জন্য পড়েছেন, কিন্তু ভাষা হিসেবে কোন দক্ষতা অর্জন করতে পারেননি।

ইংরেজি সমস্যার সমাধান কী?

এই পরিস্থিতি থেকে বের হওয়া কঠিন উল্লেখ করে অধ্যাপক ইসলাম বলেন, পদক্ষেপের বদলে ধারাভিকভাবে এই চর্চা চালিয়ে নিতে হবে।

এছাড়া অনেকে কথা বলার চর্চায় লাজুক হয়। সেটা কাটিয়ে যদি নিজ জায়গা থেকে চর্চা চালিয়ে নেয়া যায় তাহলেও ভাষা দক্ষতা অর্জন সম্ভব বলে তিনি মনে করেন।

অন্যদিকে দায়বদ্ধতা ও জবাদিহিতা নিশ্চিত করা গেলে পরিস্থিতির পরিবর্তন সম্ভব  বলে মনে করেন শিক্ষাবিদ মঞ্জুর আহমেদে।

তার মতে, যাচাই করতে হবে কেন উদ্যোগগুলো ফলপ্রসূ হচ্ছে না কিংবা পদক্ষেপ কেন ঠিকমতো নেয়া হচ্ছে না।

এছাড়া উপযুক্ত শিক্ষক ও লেখাপড়ার পরিবেশ তৈরি ও বিদেশি ভাষা শেখার পদ্ধতি ঠিকমতো প্রয়োগ করা গেলেও ইংরেজি ভাষা-দক্ষতা অর্জন সম্ভব বলে মনে করেন তিনি। তথ্য সূত্র আরটিভি নিউজ।