
রাজশাহীর তানোরে গভীর নলকূপের পাইপে পড়ে যাওয়ার ১৮ ঘণ্টা পরেও দুই বছরের শিশু সাজিদকে উদ্ধারের শ্বাসরুদ্ধকর লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন নির্ঘুম হাজারও মানুষ।
উপজেলার প্রত্যন্ত গ্রামে মাত্র ৮ ইঞ্চি ব্যাসার্ধের সেই অন্ধকার গর্তে পড়ে যাওয়া ছোট্ট শিশুটিকে উদ্ধারে বুধবার (১০ ডিসেম্বর) দিবাগত ভোররাত ৬টার দিকেও ফায়ার সার্ভিসের পাঁচটি ইউনিট আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
এর আগে, দুপুর সোয়া ১২টার দিকে উপজেলার কোয়েলহাট পূর্বপাড়া গ্রামের ধানখড়ের মাঠে মা রুনা খাতুনের সঙ্গে গিয়ে হঠাৎ ৩৫ ফুট গভীর একটি গর্তে পড়ে যায় দুই বছর বয়সী শিশু সাজিদ।
এর আগে, শিশুটির অবস্থান শনাক্তে সেই গর্তে ফায়ার সার্ভিস ফেলেছিল বিশেষ ক্যামেরা। কিন্তু ৩৫ ফুট যাওয়ার পর আটকে যায় ক্যামেরা। তবে দেখা মেলেনি সাজিদের। ফায়ার সার্ভিস কর্মীদের ধারণা-হয়তো ৪০ ফুট নিচেই রয়েছে সাজিদ। তাই পরিকল্পনা অনুযায়ী, যেই গর্তে সাজিদ পড়ে গিয়েছে তার পাশেই রাতভর তিনটি এক্সকেভেটরের মাধ্যমে পুকুর খননের মত করা হয়েছে গভীর গর্ত। সেই ৪০ ফুট গর্ত থেকেই সুরঙ্গ করে ছোট্ট সাজিদের অনুসন্ধান করা হবে।
তবে স্থানীয়দের অভিযোগ প্রশাসনের উদাসীনতায় এবং গাফিলতির কারণে সাজিদকে উদ্ধারে বিলম্ব হচ্ছে। তারা বলেন, শিশুটি বুধবার দুপুর ১২টার দিকে গর্তে পড়ে যায়। কিন্তু ঘটনাস্থলে এক্সকেভেটর আসতে আসতে রাত আটটা বেজে যায়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে তানোর উপজেলা ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন ম্যানেজার আব্দুর রউফ বলেন, প্রথমে আমরা তানোর উপজেলায় খোঁজ করেছি, কোথাও এক্সকেভেটর পাইনি। পরে পাশের উপজেলা মোহনপুর থেকে দুটি এক্সকেভেটর নিয়ে এসে মাটি খননের কাজ শুরু করি। এরপর রাত পৌঁনে দুইটার দিকে আরেকটি উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন এক্সকেভেটর ঘটনাস্থলে আসে। সেটি দিয়ে দ্রুত মাটি খনন কাজ করা হচ্ছে। আমরা আশা করছি আর কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই উদ্ধার কাজ সম্পন্ন করতে পারব।
তিনি আরও বলেন, শিশুটি যে গর্তে পড়েছিল, আমরা সেই গর্তে ক্যামেরা ফেলেছিলাম। কিন্তু ৩৫ ফুট যাওয়ার ক্যামেরা আটকে যায়। ঘটনাস্থলে ফায়ার সার্ভিস আসার আগেই স্থানীয়রা শিশুটিকে উদ্ধারের চেষ্টা করেছিল। অসাধারণতা বসত ওই গর্তে মাটি এবং খরকুটা পড়ে যায়। ফলে ক্যামেরার মাধ্যমে শিশুটির সন্ধান পাওয়া যায়নি। যেহেতু ক্যামেরা ৩৫ ফুট মাটির নিচে গিয়ে আটকে গেছে, সেহেতু আমাদের ধারণা তার নিচেই শিশুটির অবস্থান। এ জন্য রাতভর তিনটি এক্সকেভেটর দিয়ে মাটি খনন করা হয়েছে। ইতোমধ্যেই প্রায় ৪০ ফুট গভীর গর্ত করা হয়েছে।