টাঙ্গাইলের মধুপুরে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে অশালীন আচরণের অভিযোগ এনে আব্দুল জব্বার নামে এক প্রধান শিক্ষককে জুতাপেটা ও লাঞ্ছিত করা হয়েছে। তবে প্রধান শিক্ষকের দাবি তার মেয়েকে স্থানীয় এক যুবক উত্যক্ত করায় তাকে শাসন করার জেরে সেই ছেলে ষড়যন্ত্র করে এ ঘটনা ঘটিয়েছে।
বুধবার (৩০ এপ্রিল) দুপুরে উপজেলার আকাশি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অফিস কক্ষে এ ঘটনা ঘটে। পরে ওই শিক্ষককে বহিষ্কার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন মধুপুর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. শফিকুল ইসলাম।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত বছর এপ্রিল মাসে যোগদান করেন আব্দুল জব্বার। বুধবার দুপুরে হঠাৎ করেই বহিরাগত বিক্ষুব্ধ একদল নারী তার কক্ষে প্রবেশ করে তার ওপর আক্রমণ চালিয়ে জুতাপেটা করাসহ লাঞ্ছিত করে। এ সময় সহকারী শিক্ষিকা সাজেদা বেগমসহ কয়েকজন তাদের হাত থেকে প্রধান শিক্ষককে রক্ষা করার চেষ্টা করলে তাদের ওপর ক্ষিপ্ত হন আক্রমণকারীরা।
এ সময় শিক্ষার্থীদের বিক্ষুব্ধ অভিভাবক জাহিন, সুমি ও ঝুমা বেগম বলেন, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল জব্বার পড়ানোর সময় আমাদের মেয়ের স্পর্শকাতর স্থানে স্পর্শ করেছে। তাই তার বিচার ও শাস্তির দাবি করছি।
এ ব্যাপারে সহকারী শিক্ষক সাজেদা বেগম বলেন, আমি বিষয়টি সকালেই জানতে পেরে স্যারকে জানিয়ে ছিলাম। স্যার তখন অফিস কক্ষেই ছিলেন। আমরা কিছু বুঝে ওঠার আগেই হামলাকারীরা অফিসে প্রবেশ করে হামলা করেন। একপর্যায়ে জুতা দিয়ে পেটাতে থাকেন। আমরা অনেক কষ্টে তাকে হামলাকারীদের হাত থেকে উদ্ধার করি বলেও জানান তিনি।
এ ব্যাপারে ভুক্তভোগী প্রধান শিক্ষক আব্দুল জব্বার বলেন, আমার মেয়েকে স্থানীয় এক যুবক উত্যক্ত করায় তাকে বিভিন্ন সময়ে বুঝানো হয়েছে। তবে কথা না শুনায় তাকে শাসন করা হয়েছিল। সেই ছেলে ষড়যন্ত্র করে এই ঘটনা ঘটিয়েছে। তদন্ত করলে সত্য ঘটনা বেরিয়ে আসবে। আমি শিক্ষার্থীদের সন্তানের মতো দেখি। সে ভাবেই আদর-শাসন করি। তদন্ত করে সঠিক বিষয়টি বের করার জন্য ঊর্ধ্বতনদের আহ্বান জানান তিনি।
এ ঘটনার খবর পেয়ে মধুপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার প্রতিনিধি হিসেবে সহকারী কমিশনার (ভূমি) রিফাত আনজুম পিয়া ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেন। এ সময় তিনি বিক্ষুব্ধ অভিভাবকদের শান্ত করে বলেন, তদন্তে সাপেক্ষে অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ বিষয়ে মধুপুর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি জেনে সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা জহিরুল ইসলাম ও নাজমুল ইসলামকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। তাদের তথ্যের ভিত্তিতে ওই শিক্ষককে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। পরবর্তীতে এ ব্যাপারে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে লিখিতিভাবে রিপোর্ট দেওয়া হবে বলেও জানান তিনি। আরটিভি।