ছয় দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে আগামীকাল শুক্রবার কাফন মিছিল করার নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করেছে কারিগরি ছাত্র আন্দোলন।
বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) প্রকাশিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে কারিগরি ছাত্র আন্দোলনের পক্ষ থেকে এ তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, আগামীকাল শুক্রবার (১৮ এপ্রিল) সারা বাংলাদেশের সকল পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট বাদ জুমা একযোগে ‘৮৭ এর কাফন আন্দোলন’ এর ন্যায় কাফনের কাপড় মাথায় বেঁধে গণ মিছিলের আয়োজন করবে।
এর আগে, বিকেলে ছয় দফা দাবিতে আন্দোলনরত কারিগরির শিক্ষার্থীরা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলোচনায় অসন্তোষ প্রকাশ করে আরও কঠোর কর্মসূচি দেয়ার ঘোষণা দেন। এর পরপরই এই কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে।
এ ছাড়া, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে ডেকে নাটকীয় বৈঠকের নামে প্রতারণা এবং কুমিল্লায় আন্দোলনকারীদের ওপর হামলার প্রতিবাদে মশাল মিছিল করেছেন পলিটেকনিক (কারিগরি) ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা।
এর আগে, বুধবার তারা তেজগাঁওয়ে সাত রাস্তা অবরোধ করেন। ঢাকার শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সংহতি জানিয়ে সারাদেশে জেলায় জেলায় সড়ক অবরোধ কর্মসূচি পালন করেন শিক্ষার্থীরা। পরে বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) সরকারি-বেসরকারি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা রেলপথ অবরোধ ও অসহযোগ আন্দোলনেরও ডাক দেয় তারা।
শিক্ষার্থীদের ছয় দফা দাবির মধ্যে প্রথমে রয়েছে– জুনিয়র ইন্সট্রাক্টর পদে ক্রাফট ইন্সট্রাক্টরদের অবৈধ পদোন্নতির রায় হাইকোর্ট কর্তৃক বাতিল করতে হবে। পাশাপাশি, ক্রাফট ইন্সট্রাক্টর পদবি পরিবর্তন এবং মামলার সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের স্থায়ীভাবে চাকরিচ্যুত করতে হবে। ২০২১ সালে রাতের আঁধারে নিয়োগপ্রাপ্ত ক্রাফট ইন্সট্রাক্টরদের নিয়োগ সম্পূর্ণভাবে বাতিল এবং সেই বিতর্কিত নিয়োগবিধি অবিলম্বে সংশোধন করতে হবে।
শিক্ষার্থীদের দ্বিতীয় দাবি হলো- ডিপ্লোমা ইন-ইঞ্জিনিয়ারিং কোর্সে যে কোনো বয়সে ভর্তির সুযোগ বাতিলসহ উন্নত বিশ্বের আদলে চার বছর মেয়াদী মানসম্পন্ন কারিকুলাম নিশ্চিত করে একাডেমিক কার্যক্রম পরবর্তী প্রবিধান থেকে পর্যায়ক্রমিকভাবে সম্পূর্ণ ইংরেজি মাধ্যমে চালু করতে হবে।
তৃতীয় দাবি হলো- উপসহকারী প্রকৌশলী ও সমমানের (দশম গ্রেড) পদ চার বছর মেয়াদি ডিপ্লোমা ইন ইঞ্জিনিয়ারিং ও মনোটেকনোলজি (সার্ভেয়িং) থেকে পাসকৃত শিক্ষার্থীদের জন্য সংরক্ষিত থাকা সত্ত্বেও যেসব সরকারি, রাষ্ট্রায়ত্ত, স্বায়ত্তশাসিত ও স্বশাসিত প্রতিষ্ঠানে ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের নিম্নস্থ পদে নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে, তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
চতুর্থ দাবি হলো- কারিগরি সেক্টর পরিচালনায় পরিচালক, সহকারী পরিচালক, বোর্ড চেয়ারম্যান, উপসচিব, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক, অধ্যক্ষসহ সংশ্লিষ্ট সব পদে কারিগরি শিক্ষাবহির্ভূত জনবল নিয়োগ নিষিদ্ধ করতে হবে এবং তা আইনানুগভাবে নিশ্চিত করতে হবে। এ পদগুলোতে অনতিবিলম্বে কারিগরি শিক্ষায় শিক্ষিত জনবল নিয়োগ এবং সব শূন্য পদে দক্ষ শিক্ষক ও ল্যাব সহকারী নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করতে হবে।
পঞ্চম দাবি হলো- কারিগরি শিক্ষায় বৈষম্য ও দুরবস্থা দূর করার পাশাপাশি দক্ষ জনসম্পদ তৈরিতে কারিগরি ও উচ্চশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নামে স্বতন্ত্র মন্ত্রণালয় প্রতিষ্ঠা করে দ্রুত সময়ের মধ্যে কারিগরি শিক্ষা সংস্কার কমিশন গঠন করতে হবে।
ষষ্ঠ দাবি হলো- পলিটেকনিক ও মনোটেকনিক ইনস্টিটিউট থেকে পাসকৃত শিক্ষার্থীদের উচ্চশিক্ষার সুযোগের লক্ষ্যে একটি উন্নতমানের টেকনিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করতে হবে। পাশাপাশি, নির্মাণাধীন চারটি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে (নড়াইল, নওগাঁ, খাগড়াছড়ি ও ঠাকুরগাঁও) পলিটেকনিক ও মনোটেকনিক থেকে পাসকৃত শিক্ষার্থীদের জন্য অস্থায়ী ক্যাম্পাস ও ডুয়েটের আওতাভুক্ত একাডেমিক কার্যক্রম পরিচালনার মাধ্যমে আগামী সেশন থেকে শতভাগ সিটে ভর্তির সুযোগ নিশ্চিত করতে হবে।
আরটিভি