
বাঙালি জাতির জন্য গৌরবের দিন মহান ১৬ ডিসেম্বর আজ। ১৯৭১ সালের এই দিনে পাক হানাদার বাহিনীর আত্মসমর্পণের পর প্রতি বছর ১৬ ডিসেম্বর বিশেষভাবে পালিত হয়। নয় মাস দীর্ঘ এই যুদ্ধের শেষ দিকে যোগ দেয় ভারতীয় সেনাবাহিনী। এ কারণে তারাও বাংলাদেশের বিজয় দিবসকে নিজেদের বিজয় দিবস হিসেবে পালন করে থাকে।
১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর আত্মসমর্পণের দলিলে সই করেন পাকিস্তানি বাহিনীর পূর্বাঞ্চলীয় কমান্ডের অধিনায়ক লে. জেনারেল এ এ কে নিয়াজি (ডানে)। তার পাশে মিত্রবাহিনীর লে. জেনারেল জগজিৎ সিং অরোরা।
মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) এ উপলক্ষে সামাজিক মাধ্যম এক্স-এ একটি বিবৃতি দিয়েছে ভারতীয় সেনাবাহিনী। এতে বলা হয়েছে, বিজয় দিবস কেবল একটি তারিখ নয় - এটি ১৯৭১ সালের যুদ্ধে ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনীর ঐতিহাসিক এবং চূড়ান্ত বিজয়ের প্রতীক।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, এটি এমন এক বিজয় ছিল যেখানে মুক্তিবাহিনী এবং ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনী কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়াই করেছে, যা একসাথে বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামকে এগিয়ে নিয়ে গেছে চূড়ান্ত স্বাধীনতার দিকে।
‘এটি এমন এক বিজয় যা ভারতের সামরিক ইতিহাসকে নতুন রূপ দিয়েছে, নতুন করে সাজিয়েছে দক্ষিণ এশিয়ার মানচিত্র এবং এক নতুন জাতির জন্ম দিয়েছে – বাংলাদেশ’, উল্লেখ করা হয় বিবৃতিতে।
এক্স-এ দেয়া ওই পোস্টে বলা হয়েছে, এটি (মুক্তিযুদ্ধ) পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর সমগ্র সম্প্রদায়ের ওপর চালানো নৃশংস অত্যাচার, নিপীড়ন এবং নিষ্ঠুরতারও অবসান ঘটায়।
এতে আরও বলা হয়, মাত্র ১৩ দিনে, ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনী অসাধারণ সাহস, অটল সংকল্প এবং ব্যতিক্রমী সামরিক দক্ষতা দেখিয়েছে, যার পরিণতি ৯৩ হাজার পাকিস্তানি সৈন্যের আত্মসমর্পণ - যা বিশ্ব ইতিহাসের বৃহত্তম সামরিক আত্মসমর্পণগুলোর মধ্যে একটি।
সবশেষে বলা হয়েছে, এই দিনটি (১৬ ডিসেম্বর) নিজের বন্ধুদের প্রতি ভারতের আনুগত্যের প্রমাণ এবং তার প্রতিপক্ষদের প্রতি একটি স্পষ্ট বার্তা যে – ভারত যখন ন্যায়ের পক্ষে দাঁড়ায়, বিজয় তখন অনিবার্য।
এদিকে, বিজয় দিবস উপলক্ষে মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) সকালে সামাজিক মাধ্যমে একটি পোস্ট দিয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। পোস্টে মুক্তিযুদ্ধকে ভারতের যুদ্ধ বলে দাবি করেছেন তিনি।
এমনকি পোস্টের কোথাও বাংলাদেশের নামই নেননি ভারতের প্রধানমন্ত্রী, বরং বলেছেন ‘ভারতের ঐতিহাসিক বিজয়।’