গেল দশকে উন্নয়ন প্রকল্পের নামে বিলীন হয়েছে দেশের বিস্তীর্ণ বনাঞ্চল। এই থাবা থেকে রক্ষা পায়নি সুন্দরবনও। দখল হওয়া বন পুনরুদ্ধারের পাশাপাশি উন্নয়ন প্রকল্পের নামে উচ্ছেদ হওয়া বন পুনরুদ্ধারে মাঠে নেমেছে অন্তর্বর্তী সরকার। ভবিষতে বন ধ্বংস এড়াতে আইন প্রয়োগের সঙ্গে তদারকি বাড়ানোর পরামর্শ বিশেষজ্ঞদের।
এক সময়ে সবুজে ঘেরা থাকলেও এখন নগরীতে সবুজ যেন অমাবস্যার চাঁদ। জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার সূচকে বলা হয়েছে টেকসই নগর ও জনপদের কথা। কিন্তু অতিরিক্ত নগরায়নের প্রভাবে নির্বিচারে বনভূমি ও বনজ সম্পদ ধবংস করে, বেঁচে থাকার ভিত্তি পরিবেশকে ছিন্নভিন্ন করে ফেলা হচ্ছে। যার ফল স্বরূপ নিজেদের অভিশাপের দিকে ঠেলে দিচ্ছে এক শ্রেণির মানুষের লোভ, দখল, খামখেয়ালিপনাসহ নানা অনাচার।
একটি দেশে মোট ভূখণ্ডের ২৫ শতাংশ বনভূমি থাকার কথা থাকলেও দেশে তা মাত্র ১৫.৫৮ শতাংশ। খোঁদ বন অধিদফতরের হিসাব বলছে, বর্তমানে মোট বনভূমির পরিমাণ ২৫ লাখ ৭৫ হাজার হেক্টর।
সারা বিশ্বের বন কেমন আছে? এর খোঁজ মেলে গ্লোবাল ফরেস্ট ওয়াচে চোখ বোলালে। ২০০১ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ ২৪৬ কিলোহেক্টর বন হারিয়েছে, যা ১৩৩ মিলিয়ন টন কার্বন ডাইঅক্সাইড নিঃসরণের সমান। তাদেরই পরিসংখ্যান বলছে, গত দুই দশকে বিশ্বে গড় বনভূমি প্রায় সাড়ে ৭ শতাংশ হ্রাস পেলেও বাংলাদেশে সেই হার সাড়ে ৮ শতাংশের বেশি।
প্রাকৃতিক বন উজাড়ের ক্ষতিপূরণ কোনোভাবেই সামাজিক বনায়নের দ্বারা মোকাবিলা করা সম্ভব নয় বলেও মত দিয়েছেন স্ট্যামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ড. আহমেদ কামরুজ্জামান মজুমদার।
তিনি বলেন, ‘আমরা সময়ে সময়ে শুধু পিকনিকের জন্য জঙ্গল খুঁজি। কিন্তু সার্বিকভাবে আমরা সবুজের কথা বলে যাই। এই মুহূর্তে সারা বাংলাদেশে বনের জায়গাগুলোকে সরকারের আয়ত্তে আনা দরকার। সেইসঙ্গে দখলদারদের উচ্ছেদও করতে হবে।’
দখল হওয়া বন পুনরুদ্ধারের পাশাপাশি গেল দশকে বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের নামে উচ্ছেদ হওয়া বন পুনরুদ্ধারের কাজ শুরু করেছে অভ্যুত্থান পরবর্তী সরকার।
পরিবেশ ও বন উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, ‘গত সময়ে যেসব বন বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পে দিয়ে দেয়া হয়েছিল, সেগুলো আমরা আবার ফিরিয়ে আনা শুরু করেছি।’
এরই মধ্যে প্রায় ৯ হাজার একর বন দখলদার মুক্ত করা সম্ভব হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি। সময়