News update
  • UN Estimates $70 Billion Needed to Rebuild Gaza After War     |     
  • Mirpur garment factory, chemical godown fire kills 9     |     
  • Garbage pile turns Companiganj Bazar into an unhygienic town     |     
  • Put 'old feuds' aside for a new era of harmony in ME: Trump     |     
  • Rivers are Bangladesh's lifeblood, Rizwana at UN Water Convention      |     

বাংলাদেশের লাউয়াছড়া বনে যে অস্কারজয়ী সিনেমার শুটিং হয়েছিল

গ্রীণওয়াচ ডেস্ক সিনেমা 2025-10-14, 7:59pm

tetertert-8d5cf4613254902347ccf239befef6921760450342.jpg




মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার ঘন সবুজ অরণ্যের ভেতরে, আকাশে সূর্যের আলোর খোঁচা পড়ছে ঘন সবুজ পাতার মাঝে, দাঁড়িয়ে আছে লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান। গাছের ছায়া, পাখির কলতান আর দূরে রেললাইনের ধ্বনিতে যেন শোনা যায় এক পুরনো গল্পের প্রতিধ্বনি। গল্পের এই অধ্যায় অন্য সব বন থেকে আলাদা—কারণ এই বনের ভেতরেই শুট হয়েছিল হলিউডের ‘অ্যারাউন্ড দ্য ওয়ার্ল্ড ইন এইটি ডেইজ’।

রেললাইনের পাশের ছোট্ট বোর্ডটি আজও স্মরণ করিয়ে দেয় সেই সময়কে, যখন বিদেশি অভিনেতারা হাতির পিঠে চড়ে বনের ভেতর দিয়ে এগিয়ে যাচ্ছিলেন। যাদের চোখে ছিল উদ্যম, কল্পনায় ভরা সাহস—যারা ৮০ দিনে বিশ্বভ্রমণের বাজি জিততে চেয়েছিলেন। যারা এখানে আসে, তারা শুধু গাছপালা দেখে না; তারা সেই শুটিংয়ের নিঃশব্দ উপস্থিতি অনুভব করে।

সিনেমাটি নির্মিত হয়েছিল জুল ভার্নের কাহিনির ওপর ভিত্তি করে। এটি ছিল বাংলাদেশের মাটিতে শুট হওয়া প্রথম হলিউড সিনেমা। পরিচালনা করেছিলেন মাইকেল অ্যান্ডারসন। অভিনয় করেছিলেন ডেভিড নিভান ও ক্যান্টিনফ্লাস। বিশাল এই চলচ্চিত্রের শুটিং হয়েছিল ১৩টি দেশে, আর তার একটি অংশ ছিল আমাদের সিলেট অঞ্চলে।

বিশ্বভ্রমণের ভারত অধ্যায়ের রেলযাত্রা, হাতির দৃশ্য এবং বনের ভিতরের অভিযান—সবই ধারণ করা হয়েছিল শ্রীমঙ্গল রেলস্টেশন, সিলেটের চা-বাগান, কুশিয়ারা সেতু এবং লাউয়াছড়ার অরণ্যে। সেই সময় হাতির পিঠে বসে শিল্পীরা পার হচ্ছিলেন বনের ঘন সবুজ অরণ্য অতিক্রম করে। সিনেমার ক্যামেরা প্রতিটি মুহূর্তকে ধরে রেখেছিল, আর মুক্তির পর তা বিশ্বজুড়ে আলোড়ন সৃষ্টি করেছিল।

সেই সময় বনে হাতি চলাফেরা করত অবাধে। আজ আর নেই সেই হাতি, কিন্তু বনের সৌন্দর্য এখনও অপরূপ। এখানে আছে ১৬৭ প্রজাতির গাছপালা, ২৪৬ প্রজাতির পাখি এবং ২০ প্রজাতির স্তন্যপায়ী প্রাণী। বিলুপ্তপ্রায় উল্লুক, মুখপোড়া হনুমান আর মায়া হরিণ এখনো এই বনের গভীরে নিঃশব্দে ঘুরে বেড়ায়।

লাউয়াছড়া এখন শুধু একটি বন নয়। এই বন হয়ে গেছে ইতিহাসের সাক্ষী—সিনেমার ইতিহাস এবং প্রকৃতির মিলনের এক অনন্য স্থল। যারা এখানে আসে, তারা কেবল প্রকৃতির সৌন্দর্য উপভোগ করেন না; তারা অনুভব করেন এক সময়ের চলচ্চিত্রের উজ্জ্বল দৃশ্য, যেখানে সাহস, অভিযান আর প্রাকৃতিক নিখাদ সৌন্দর্য একত্রে জড়িয়ে ছিল।

নীরব সবুজ অরণ্যে আজও যেন শোনা যায় সেই শুটিংয়ের প্রতিধ্বনি। যেন বন নিজেই ফিসফিস করে বলে, ‘আমি একসময় এক গল্পের অংশ ছিলাম।’