
ইউক্রেন যুদ্ধ অবসানে যুক্তরাষ্ট্রের শান্তি পরিকল্পনা নিয়ে কিয়েভের মিত্ররা উদ্বেগ প্রকাশ করার পর, প্রস্তাবিত শান্তি চুক্তি যুদ্ধ অবসানের চূড়ান্ত প্রস্তাব নয় বলে মন্তব্য করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প।
গত সপ্তাহে ইউক্রেন বা এর ইউরোপীয় মিত্রদের ছাড়াই মার্কিন ও রুশ কর্মকর্তারা প্রস্তাবটির খসড়া প্রস্তুত করেছেন। এক্সিওসের এক প্রতিবেদন অনুসারে, বৃহস্পতিবার (২০ নভেম্বর) মার্কিন সেনাসচিব ড্যানিয়েল ড্রিসকল ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির কাছে লিখিত পরিকল্পনাটি পৌঁছে দেন।
ট্রাম্প বলেছেন, কিয়েভ যেন এক সপ্তাহের মধ্যে এটি মেনে নেয়। শুক্রবার ফক্স নিউজ রেডিওকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, কিয়েভকে এই পরিকল্পনা মেনে নেয়ার জন্য আগামী বৃহস্পতিবার (২৭ নভেম্বর) পর্যন্ত সময় দেয়া হয়েছে। এটাই উপযুক্ত সময়সীমা।
স্থানীয় সময় শনিবার হোয়াইট হাউসে ট্রাম্পের কাছে জানতে চাওয়া হয়, প্রস্তাবিত পরিকল্পনাটি ইউক্রেনের জন্য চূড়ান্ত প্রস্তাব কিনা? জবাবে তিনি বলেন, ‘না, এটি আমার চূড়ান্ত প্রস্তাব নয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘যেভাবেই হোক আমাদের (যুদ্ধ) শেষ করতে হবে, আমরা এটি নিয়ে কাজ করছি।’
শনিবার ইউরোপ, কানাডা ও জাপানের নেতারা বলেছেন, মার্কিন-রুশ প্রস্তাব নতুন শান্তি আলোচনার ভিত্তি হতে পারে, কিন্তু এতে এখনও অনেক পরিমার্জনা প্রয়োজন।
রোববার সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় ব্রিটেন, ফ্রান্স, জার্মানি, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউক্রেনের নিরাপত্তা কর্মকর্তারা বৈঠক করবেন বলে জানা গেছে। এই আলোচনায় মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও ও ট্রাম্পের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফও অংশ নেয়ার কথা রয়েছে।
এদিকে শনিবার জি-২০ সম্মেলনের ফাঁকে ইউক্রেন ইস্যুতে বৈঠকে বসেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টার্মার, ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ এবং জার্মান প্রেসিডেন্ট ফ্রিডরিখ মের্জ। এসময়, যেকোনো সমাধানে কিয়েভকে সম্পৃক্ত করার পাশাপাশি ইউক্রেনের সার্বভৌমত্ব নিশ্চিতের ওপর জোর দেন তারা। পরবর্তীতে জি-সেভেনভুক্ত দেশগুলোর সঙ্গেও বৈঠক করেন তারা।
পশ্চিমা দেশগুলো যখন যুদ্ধ থামাতে ব্যস্ত, তখন ইউক্রেনজুড়ে ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়ে যাচ্ছে রুশ বাহিনী। কিয়ার্সন, দিনিপ্রো, ওডেসাসহ ইউক্রেনের পূর্ব–দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন এলাকায় রাশিয়ার হামলায় আবাসিক ভবন, বিদ্যুৎকেন্দ্র ও অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
কিয়েভ জানায়, কয়েকটি শাহেদ ড্রোন ভূপাতিত করা হলেও কিছু তাদের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ভেদ করে ঢুকে পড়ে। ফলে বাড়ছে হতাহতের সংখ্যা। সীমান্তজুড়ে আর্টিলারি গোলাবর্ষণও অব্যাহত রয়েছে উভয় পক্ষের।
শীতের আগমনে রুশ বাহিনী কিয়েভের জ্বালানি স্থাপনাগুলোকে প্রধান টার্গেট করায় বহু এলাকায় বিদ্যুৎ ও পানি সরবরাহ ব্যাহত হচ্ছে। একইদিন, পাঁচটি রুশ অঞ্চল, ক্রিমিয়া ও কৃষ্ণসাগরের আকাশে ৩৩টি ইউক্রেনীয় ড্রোন ভূপাতিত করা হয়েছে বলে জানায় রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়।