
নবম গ্রেডে বেতন নির্ধারণ, দ্রুত স্বতন্ত্র মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদফতর গঠনসহ চার দাবিতে চলমান কর্মবিরতির কর্মসূচি স্থগিত করেছেন সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা। ফলে বুধবার (৩ ডিসেম্বর) থেকে নিয়মিত সূচি অনুযায়ী বার্ষিক পরীক্ষা চলবে।
আর্থিক সুবিধা, পদোন্নতিসহ চার দফা দাবিতে সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা আন্দোলন করছেন। সোমবার (১ ডিসেম্বর) থেকে বাংলাদেশ সরকারি মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির ব্যানারে এ কর্মসূচি শুরু হয়। এর ফলে ঢাকাসহ দেশের অধিকাংশ বিদ্যালয়ে সোমবার ও মঙ্গলবার বার্ষিক পরীক্ষা হয়নি।
মঙ্গলবার (২ ডিসেম্বর) রাতে প্রকাশিত বাংলাদেশ সরকারি মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতি এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে,শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ সুরক্ষা ও শিক্ষাজীবনকে স্বাভাবিক ধারায় ফিরিয়ে আনা তাদের অন্যতম দায়িত্ব। তাই, আগামীকাল বুধবার (৩ ডিসেম্বর) থেকে সারা দেশের বিদ্যালয়ে সুষ্ঠুভাবে বার্ষিক পরীক্ষা গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট সবাইকে সহযোগিতা করার আহ্বান জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, সমিতির ন্যায্য দাবি–দাওয়াগুলো দ্রুত সমাধানের পথে এগিয়ে নিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কার্যকর উদ্যোগ চাওয়া হচ্ছে। যাতে ভবিষ্যতে আর কোনোভাবে শিক্ষা কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত না হয়। সংগঠনের পরবর্তী সিদ্ধান্ত আলোচনার মাধ্যমে শিগগিরই জানিয়ে দেয়া হবে।
এর আগে সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের কঠোর বার্তা দিয়েছেন শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. সি আর আবরার। তিনি বলেছেন, মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা দেশের বিভিন্ন স্থানে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা বন্ধের যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, সরকারি কর্মচারী বিধি লঙ্ঘনের দায়ে তাদেরকে শাস্তির মুখোমুখি হতে হবে।
সোমবার সন্ধ্যায় বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা-বাসসকে দেয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা আন্দোলনের নামে যা করছেন, তা সরকারি আচরণবিধি লঙ্ঘনের শামিল। সরকারি আচরণবিধি লঙ্ঘনের জন্য আপনাদের কিন্তু তৈরি থাকতে হবে। এখানে সরকার একেবারে দৃঢ়ভাবে তার অবস্থান জানিয়ে দিয়েছে।
উপদেষ্টা বলেন, আমরা অবশ্যই মনে করি যে, বার্ষিক পরীক্ষা নিয়ে মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা যে অবস্থান নিয়েছেন, যেমন অনেক স্কুলে পরীক্ষা হয়েছে আবার অনেক স্কুলে হয়নি, এটা একেবারেই অনভিপ্রেত একটি ঘটনা।
মাধ্যমিকের শিক্ষকদের দাবিগুলো হলো এক. সহকারী শিক্ষক পদকে বিসিএস (সাধারণ শিক্ষা) ক্যাডারভুক্ত করে নবম গ্রেডসহ পদসোপান ও মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদফতরের গেজেট প্রকাশ। দুই. বিদ্যালয় ও পরিদর্শন শাখায় কর্মরত শিক্ষকদের বিভিন্ন শূন্য পদে নিয়োগ, পদোন্নতি ও পদায়ন দ্রুত কার্যকর করা। তিন. সুপ্রিম কোর্টের রায়ের আলোকে বকেয়া টাইম স্কেল ও সিলেকশন গ্রেডের মঞ্জুরি আদেশ দেয়া। চার. ২০১৫ সালের মতো সহকারী শিক্ষকদের ২ থেকে ৩টি ইনক্রিমেন্টসহ অগ্রিম বর্ধিত বেতন-সুবিধা বহাল করে গেজেট প্রকাশ।