
প্রত্যাহারের পর আবারও কর্মবিরতি চালুর ঘোষণা দিয়েছেন আন্দোলনরত নেত্রী ও বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির (শাহিন-লিপি) সাধারণ সম্পাদক খায়রুন নাহার লিপি।
রোববার (৯ নভেম্বর) রাত সাড়ে ১০টার দিকে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে উপস্থিত শিক্ষকদের উপস্থিতিতে তিনি এ ঘোষণা দেন।
এসময় খায়রুন নাহার লিপি বলেন, আমরা নেতৃবৃন্দের কথা রাখতে পারিনি। আগামীকাল কর্মবিরতি চলবে। এসময় উপস্থিত শিক্ষকরা তার সঙ্গে সংহতি জানান।
লিপি বলেন, আমার চাকরি চলে যায় যাক, আগামীকাল কর্মসূচি প্রত্যাহার মানি না। আজকে রাতে যারা আছেন, তারা আমাদের সঙ্গে শহীদ মিনারে থাকবেন, কথা দিন। একজনও যেতে পারবেন না।
তিনি বলেন, আমাদের নেতৃবৃন্দ রোষানলে পড়ে কর্মসূচি স্থগিত করেছে, কিন্তু আমরা স্থগিত করে রাখতে পারলাম না। আমার চাকরি যায় যাক, কর্মসূচি চলবে।
এর আগে, রোববার রাত সাড়ে নয়টায় সচিবালয়ে সরকারের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠকের পর শিক্ষক নেতারা প্রথমে কর্মবিরতি স্থগিতের ঘোষণা দিয়েছিলেন। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব আবু তাহের মো. মাসুদ রানা।
বৈঠকে উপস্থিত প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক ঐক্য পরিষদের কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক মোহাম্মদ শামসুদ্দিন মাসুদ জানিয়েছিলেন, বৈঠকে তিনটি প্রধান দাবি তুলে ধরা হয়। সেগুলো হচ্ছে— সহকারী শিক্ষকদের বর্তমান বেতন স্কেল ১৩তম গ্রেড থেকে ১০ম গ্রেডে উন্নীত করা, চাকরির ১০ ও ১৬ বছর পূর্তিতে উচ্চতর গ্রেড প্রাপ্তির জটিলতা নিরসন, এবং সহকারী শিক্ষক থেকে প্রধান শিক্ষক পদে শতভাগ বিভাগীয় পদোন্নতির ব্যবস্থা করা। বিষয়গুলো নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা শেষে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় আশ্বাস দেয় যে, অর্থ মন্ত্রণালয়কে বিষয়গুলো জানানো হবে এবং দ্রুততম সময়ে সমাধানের উদ্যোগ নেওয়া হবে। এ পরিপ্রেক্ষিতে আমরা চলমান কর্মবিরতি কর্মসূচি স্থগিতের ঘোষণা দিচ্ছি। শুধুমাত্র শহীদ মিনারে অবস্থান কর্মসূচী চলবে।
শনিবার (৮ নভেম্বর) বিকেলে রাজধানীর শাহবাগে ‘কলম বিসর্জন’ কর্মসূচিতে পুলিশের সাউন্ড গ্রেনেড, টিয়ারশেল ও রাবার বুলেট নিক্ষেপে বহু শিক্ষক আহত হন। সাউন্ড গ্রেনেডে অনেক শিক্ষক অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে তারা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে গিয়ে অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেন।
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, দেশে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সংখ্যা ৬৫ হাজার ৫৬৭টি। কর্মবিরতি শুরুর পর থেকে এসব বিদ্যালয়ের পাঠদান কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে।
চলতি বছরের এপ্রিল মাসে সরকার প্রধান শিক্ষকদের বেতন ১১তম থেকে ১০ম গ্রেডে উন্নীত করলেও সহকারী শিক্ষকদের গ্রেড ১৩তম থেকে ১২তম করার প্রস্তাব দেয়। এতে বৈষম্যের অভিযোগ তুলে শিক্ষকরা আন্দোলনে নামেন।