News update
  • Sikaiana Islanders Face Rising Seas and Uncertain Future     |     
  • BD Election Commission to begin political dialogue this week     |     
  • Climate summit hears countries suffering from global warming      |     
  • How to Visit Saint Martin’s Island in This Tourist Season 2025-26     |     
  • Khulna-Mongla dream rail line struggles for freight flow     |     

ডলার সংকটে ৪৫ ফ্লাইট কমিয়েছে বিদেশি এয়ারলাইনস

গ্রীণওয়াচ ডেস্ক বানিজ্য 2025-03-04, 7:36pm

sdfewre-9584e6a0324900951b95c7ff98853a361741095365.jpg




ডলার সংকটের কারণে নিজ দেশে টাকা নিতে না পারায় ঢাকা ও চট্টগ্রাম থেকে ৪৫টি ফ্লাইট কমিয়েছে বিদেশি এয়ারলাইনসগুলো। এর ফলে আসন সংখ্যা কমেছে এবং যাত্রীর চাপ থাকায় হুহু করে বাড়ছে ভাড়া। 

এভিয়েশন খাতের বিশেষজ্ঞরা জানান, টিকিটের দাম হঠাৎ করে বেড়ে যাওয়ার পেছনে কারসাজি আছে। 

এ ছাড়া উচ্চ ভ্রমণ কর, গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং চার্জ, ল্যান্ডিং ও পার্কিং চার্জসহ ডলার সংকটকে দায়ী করেছেন তারা। একই সঙ্গে গ্রুপ টিকিট বিক্রি নিয়ে মন্ত্রণালয়ের জারিকৃত পরিপত্র যোগ করেন। পরিকল্পিতভাবে এটা জারি করে ভাড়া নিয়ে অরাজক পরিস্থিতির সৃষ্টি করা হয়েছে, এমন অভিযোগ উঠেছে। 

পরিপত্রে বলা হয়, এখন থেকে কোনো বিমান সংস্থা তিন দিন বা ৭২ ঘণ্টার বেশি কোনো টিকিটের বুকিং রাখতে পারবে না। বুকিং দেওয়া টিকিট তিন দিনের মধ্যে যাত্রীর নামে ইস্যু করতে হবে। 

টিকিট বুকিংয়ে সংশ্লিষ্ট যাত্রীর নাম, পাসপোর্ট নম্বর ও পাসপোর্টের ফটোকপিসহ বুকিং সম্পন্ন করতে হবে। তিনদিনের মধ্যে টিকিট ইস্যু না হলে এয়ারলাইনকে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ওই টিকিট বাতিলের ব্যবস্থা করতে হবে। আকাশপথে ভ্রমণে টিকিটের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি রোধে এই নির্দেশনা জারি করেছে বেসামরিক বিমান পরিবহণ ও পর্যটন মন্ত্রণালয়।

সরকারের এই সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ এয়ারলাইনসগুলো। তাদের ভাষ্য, দেশে প্রতিদিনই টিকিটের চাহিদা বাড়ছে। ডলার সংকটে টিকিট বিক্রির ২ হাজার কোটি টাকার বেশি অর্থ দেশের ব্যাংকগুলোতে আটকে আছে। 

বিদেশি এয়ারলাইনসগুলো এই অর্থের ‘কস্ট অব ফান্ড’ সমন্বয়ে টিকিটের মূল্য বাড়িয়ে দিয়েছে। এ ছাড়া টিকিট বিক্রির অর্থ দেশে নিতে না পেরে ঢাকা ও চট্টগ্রাম থেকে ৪৫টি ফ্লাইট কমিয়ে দিয়েছে এয়ালাইনসগুলো। এর মধ্যে ঢাকা থেকে ২১টি ও চট্টগ্রাম থেকে ২৪টি কমিয়েছে। এর ফলে সপ্তাহে ৯ হাজারের বেশি আসনের ক্যাপাসিটি কমেছে।

টিকিটের চাহিদা অনুসারে সরবরাহ কমে যাওয়ায় এখন এয়ার টিকিটের দাম হুহু করে বেড়ে চলছে। বিষয়টি নিয়ে মন্ত্রণালয় ও এয়ারলাইন মালিকদের সংগঠন ‘বোর্ড অব এয়ারলাইন রিপ্রেজেন্টেটিভস বাংলাদেশ’ (বার) একাধিক বৈঠক করেও কোনো সমাধান করতে পারেনি। পরে বাধ্য হয়ে গ্রুপ টিকিট নিয়ে মন্ত্রণালয়ের পরিপত্রটি বাতিল বা সংশোধন করতে বারের পক্ষ থেকে মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেওয়া হয়েছে। 

এতে বলা হয়, এ ধরনের পরিপত্র আন্তর্জাতিক সিভিল এভিয়েশন আইনপরিপন্থি। এ সেক্টরে এমন কোনো বিধিনিষেধ আরোপ করা উচিত হবে না; যা এয়ারলাইনের স্বাভাবিক বাণিজ্যিক সিদ্ধান্ত গ্রহণের স্বাধীনতাকে বাধাগ্রস্ত করে। কারণ, এটি বিমান পরিবহণ পরিষেবার অর্থনৈতিক টেকসই ব্যবস্থাকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে যা বাংলাদেশের ভ্রমণ বাজার এবং সামগ্রিক অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে।

বিশেষজ্ঞরা জানান, মন্ত্রণালয় কর্তৃপক্ষ চিন্তা-ভাবনা ছাড়াই গ্রুপ টিকিট নিয়ে একতরফা পরিপত্র জারি করায় টিকিটের দাম হুহু করে বেড়ে চলছে। 

ব্যবসায়ীরা জানান, পরিপত্রের কারণে দেশীয় ট্রাভেল এজেন্সির কাছে অগ্রিম গ্রুপ বুকিং ও বিক্রি বন্ধ রয়েছে। এতে বাংলাদেশের ট্রাভেল ইন্ডাস্ট্রির পুরো ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ চলে গেছে বিদেশি অনলাইন ও ট্রাভেল এজেন্সির হাতে। কারণ সরকারের এই পরিপত্র শুধু স্থানীয়ভাবে কার্যকর হলেও আন্তর্জাতিকভাবে এটি বাস্তবায়ন করা সম্ভব নয়।

বারের চিঠি পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে বেসামরিক বিমান পরিবহণ ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব (সিএ) অনুপ কুমার তালুকদার জানান, গত সপ্তাহের বৃহস্পতিবার চিঠিটি তারা পেয়েছেন। চিঠিতে সরকারি পরিপত্রের কিছু শর্ত নিয়ে তাদের মধ্যে মতপার্থক্য রয়েছে বলে তারা জানিয়েছেন। এ বিষয়ে মন্ত্রণালয়ের পরবর্তী বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। 

বারের জেনারেল সেক্রেটারি আহমেদ রেজা স্বাক্ষরিত চিঠি বেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব অনুপ কুমার তালুকদারকে দেওয়া ওই চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, গ্রুপ টিকিট বিক্রি নিয়ে যে পরিপত্র জারি করা হয়েছে তা আন্তর্জাতিক বিমান চলাচল আইন লঙ্ঘনজনিত অপরাধ। বাংলাদেশ সরকার যদি মনে করে তাহলে শুধু বাংলাদেশ থেকে বহির্গামী যাত্রীদের জন্য এই আইন করতে পারে। কিন্তু বাস্তবে দেখা গেছে এটি বহির্গামী ও আগমনী যাত্রীদের জন্যও করা হয়েছে।

বিভিন্ন এয়ারলাইনের বুকিং ক্লাসের জন্য আলাদা নীতি আছে, সেহেতু সব টিকিটের জন্য ৭২ ঘণ্টার প্রয়োগ করা সম্ভব নয়। কারণ বেশির ভাগ বাংলাদেশি যাত্রীকে বিদেশ ভ্রমণের আগে তাদের ভিসা অনুমোদন হয়েছে কিনা তা নিশ্চিত করতে হয়। প্রায় সব ক্ষেত্রে, এই অনুমোদন পেতে ৭২ ঘণ্টার বেশি সময় লাগে।

গ্রুপ বুকিংয়ের জন্য, টিকিটের প্রকৃত বিক্রয়মূল্য বেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটন মন্ত্রণালয়কে জানানো প্রসঙ্গে চিঠিতে বলা হয়, এই ধরনের তথ্য প্রকাশ করা হলে এটি প্রাইজ ফিক্সিংয়ের কারণ হতে পারে, যা বাংলাদেশ এবং আন্তর্জাতিক উভয় প্রতিযোগিতা ও অ্যান্টি-ট্রাস্ট আইনের স্পষ্ট লঙ্ঘন। 

আহমেদ রেজা তার চিঠিতে বলেন, আমাদের সদস্য এয়ারলাইনগুলো কোনোভাবেই টিকিট সংরক্ষণের পক্ষে নয়, যা বাজারে মূল্য বিকৃতি ঘটায়।

জানা গেছে, পরিপত্রের পর বাংলাদেশের ট্রাভেল এজেন্টরা এখন গ্রুপ টিকিটের জন্য দ্বারস্থ হচ্ছে বিদেশি ট্রাভেল এজেন্সির কাছে। এর ফলে পুরো টাকা হুন্ডির মাধ্যমে বিদেশে চলে যাচ্ছে। 

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এটি অব্যাহত থাকলে আকাশপথের ৪০ হাজার কোটি টাকার টিকিট ব্যবসার পুরো অর্থই বিদেশে পাচার হওয়ার শঙ্কা রয়েছে। তাই দ্রুত এ বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়া দরকার। আরটিভি/