চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শেষ ষোলার প্রথম লেগে ১০ জনের দল নিয়েও জয়লাভ করেছে বার্সেলোনা।
বুধবার (৫ মার্চ) রাতে ১-০ গোলে জিতেছে হান্সি ফ্লিকের দল। সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে মৌসুমে নিজের ২৫তম গোলে ব্যবধান গড়ে দিয়েছেন রাফিনিয়া।
বেনফিকার মাঠের এই ম্যাচে বার্সেলোনার হয়ে ক্যারিয়ারের প্রথম লাল কার্ড দেখে ২২তম মিনিটে মাঠ ছাড়েন তরুণ ডিফেন্ডার পাউ কুবার্সি। বাকি সময়ে প্রতিকূলতা পাড়ি দিয়েও দারুণ এক জয় তুলে নেয় বার্সেলোনা।
খেলায় প্রায় ৫২ শতাংশ সময় বল দখলে রেখে গোলের জন্য ২৬টি শট নেয় বেনফিকা। এর আটটি ছিল লক্ষ্যে, যেগুলো ঠেকিয়ে সফরকারীদের জয়ের নায়ক স্ট্যান্সনি। অন্যদিকে, বার্সেলোনার ১০ শটের পাঁচটি ছিল লক্ষ্যে পৌঁছালেও ভেদ করতে পারেনি।
ম্যাচের ২০ সেকেন্ডের মাথায় প্রথম সুযোগ তৈরি করে বেনফিকা। কেরেম আকতুর্কোগ্লুর শট ঝাঁপিয়ে ঠেকিয়ে দেন স্ট্যান্সনি। প্রথম মিনিটে আরেকটি সুযোগ পায় বেনফিকা। তবে বার্সেলোনার রক্ষণের কারণে বিশ্বকাপজয়ী আর্জেন্টাইন ডিফেন্ডার নিকোলাস ওতামেন্দির হেড প্রতিহত হয়। পরের মিনিটে প্রথম সুযোগ তৈরি করে বার্সেলোনা। রাফিনিয়ার কাছ থেকে বল পেয়ে একটুর জন্য বাঁকানো শট লক্ষ্যে রাখতে পারেননি দানি ওলমো।
এ ছাড়া, নবম মিনিটে কুবার্সির হেড ঠেকিয়ে দেন বেনফিকা গোলরক্ষক আনাতোলি ত্রুবিন। তিন মিনিট পর কয়েক সেকেন্ডের ব্যবধানে তিনি ব্যর্থ করে দেন ওলমো, রবের্ত লেভানদোভস্কি ও লামিনে ইয়ামালের তিনটি শট। ষোড়শ মিনিটে শট লক্ষ্যে রাখতে পারেননি ভানজেলিস পাভলিদিস। ছয় মিনিট পর তাকে ঠেকাতে গিয়ে মরিয়া চেষ্টায় ফাউল করে বসেন কুবার্সি। তরুণ ডিফেন্ডারকে সঙ্গে সঙ্গে লাল কার্ড দেখান রেফারি।
সেই ফ্রি কিক থেকে গোল প্রায় পেয়েই যাচ্ছিল বেনফিকা। ওরকুন কোকুর ফ্রি কিক ঝাঁপিয়ে কর্নারের বিনিময়ে রক্ষা করেন স্ট্যান্সনি। রক্ষণ মজবুত করে নিতে ২৮তম মিনিটে ওলমোর জায়গায় রোনাল্দ আরাউহোকে নামান ফ্লিক। পুরোপুরি রক্ষণে গুটিয়ে না গিয়ে এক জন কম নিয়েও আক্রমণাত্মক ফুটবলে লড়াই চালিয়ে যায় বার্সেলোনা।
তবে একজন বেশি থাকার সুবিধা ও গতিময় ফুটবলে মাঝমাঠের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে বার্সেলোনার রক্ষণে প্রবল চাপ তৈরি করে বেনফিকা। প্রথমার্ধের শেষ দিকে সফরকারীদের তাদের অর্ধ থেকেই বের হতে দেয়নি তারা। ৪৩তম মিনিটে খুব কাছ থেকেও তৎপর স্ট্যান্সনিকে পরাস্ত করতে পারেননি আকতুর্কোগ্লু। হাত ছড়িয়ে হেড ঠেকিয়ে বার্সেলোনাকে সমতায় রাখেন অভিজ্ঞ গোলরক্ষক।
বার্সেলোনা প্রথমার্ধে ৬০ শতাংশ সময় বল দখলে রেখে আটটি শট নিলেও এর চারটি ছিল লক্ষ্যে। এই সময়ে বেনফিকা ১১ শটের তিনটি রাখতে পারে লক্ষ্যে। দ্বিতীয়ার্ধেও গোলের জন্য প্রথম শট বেনফিকাই নেয়। ৪৭তম মিনিটে ডি বক্সের বাইরে থেকে গড়ানো শটে স্ট্যান্সনিকে চমকে দিয়েছিলেন কোকু। অনেক দেরিতে বল দেখতে পেলেও ঠিকঠাক ঝাঁপিয়ে বল নিয়ন্ত্রণে নেন বার্সেলোনা গোলরক্ষক। তিন মিনিট পর ছয় গজ দূর থেকে উপর দিয়ে মেরে দারুণ সুযোগ হাতছাড়া করেন পাভলিদিস।
৫১তম মিনিটে ফের বার্সেলোনার ত্রাতা স্ট্যান্সনি। ফেডরিক অরসেন্সের শট ঝাঁপিয়ে কোনোমতে ফেরান পোলিশ গোলরক্ষক। ফিরতি বলে শট নিতে পাভলিদিসকে ছুটে আসতে দেখে পা বাড়িয়ে কোনোমতে নাগালের বাইরে পাঠান তিনি! ৬১তম মিনিটে বেনফিকার উপহার কাজে লাগিয়ে বার্সেলোনাকে এগিয়ে নেন রাফিনিয়া। স্বাগতিকদের অর্ধে আন্তোনিও সিলভার একটি দুর্বল ব্যাক পাস নিয়ন্ত্রণে নিয়ে ডি বক্সের বাইরে থেকে গতিময় শটে পোস্ট ঘেঁষে জালে পাঠান তিনি। ছন্দে থাকা ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ডের চলতি আসরে এটি নবম গোল।
একের পর এক আক্রমণ করে গেলেও সেভাবে পরিষ্কার সুযোগ তৈরি করতে পারছিল না বেনফিকা। ৭৭তম মিনিটে ডি বক্সে বল পেয়ে শট নেন আকতুর্কোগ্লু। ম্যাচে তৃতীয়বারের মতো তার শট ঠেকিয়ে দেন বার্সেলোনা গোলরক্ষক। ৮২তম মিনিটে পেনাল্টির বাঁশি বাজিয়েছিলেন রেফারি। ডি বক্সে আন্দ্রেয়া বেলোত্তিকে ফাউল করে বসেছিলেন স্ট্যান্সনি। কিন্তু আক্রমণের শুরুতে ইতালিয়ান ফরোয়ার্ড অফসাইডে থাকায় ভিএআরের সহায়তায় সিদ্ধান্ত পাল্টান রেফারি। এর সাথে শেষ ম্যাচটিও অর্থাৎ ১-০ গোলে জিতেছে হান্সি ফ্লিকের দল।আরটিভি