News update
  • Gaza Begins Mass Cleanup to Restore Dignity and Normal Life     |     
  • BNP weighing review of some nominations amid grassroots unrest     |     
  • US presses for Gaza resolution as Russia offers rival proposal     |     
  • 35 crude bombs, bomb-making materials found in Geneva Camp     |     
  • 8 Islamic parties want referendum before polls, neutral admin     |     

কুয়েতে চিরুনী অভিযান: আইন প্রয়োগ না আতঙ্কের ছায়া?

গ্রীণওয়াচ ডেস্ক প্রবাস 2025-11-13, 10:05am

rtyertretertre-a5ee7a47a5f302891a26d474e1ff6bfc1763006702.jpg




কুয়েতজুড়ে এখন আলোচিত বিষয় চিরুনী অভিযান। রাজধানী কুয়েত সিটি থেকে শুরু করে বিভিন্ন গভর্নরেট, শিল্প এলাকা, এমনকি দূরবর্তী আবাসিক অঞ্চল পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়েছে প্রশাসনের কঠোর নজরদারি। পুলিশের পাশাপাশি বাণিজ্য, পৌরসভা, শ্রম ও অভ্যন্তরীণ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারাও সক্রিয়ভাবে মাঠে রয়েছেন।

বহু প্রবাসী এই অভিযানের খবর শুনে উদ্বিগ্ন, কেউ কেউ আতঙ্কিত। আবার কেউ মনে করছেন এটি একটি প্রয়োজনীয় উদ্যোগ। যা দীর্ঘদিনের অনিয়ম, দুর্নীতি ও অবৈধ কর্মকাণ্ডের অবসান ঘটাবে।

সত্যি বলতে কী, কুয়েতে বসবাসরত প্রবাসীদের জীবনযাত্রার ভেতরে এমন কিছু চিত্র রয়েছে, যা দীর্ঘদিন ধরেই প্রশাসনের চোখ এড়িয়ে চলছিল। কুয়েতের আইন অনুযায়ী, আবাসিক ভবনে বাণিজ্যিক কার্যক্রম সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। কিন্তু বাস্তব চিত্র অন্যরকম। বহু ভবনে রেস্টুরেন্ট, বাকালা (মুদির দোকান), গ্যারেজ বা ছোটখাটো ওয়ার্কশপ চালু আছে বছরের পর বছর।

এসব প্রতিষ্ঠানে বিভিন্ন দেশের শ্রমিকরা কাজ করেন, অনেকেই বৈধ অনুমতি ছাড়াই। কুয়েতের আইন অনুযায়ী যেখানে বসবাসের অনুমতি, সেখানে ব্যবসা নয়। অথচ বাস্তবে এই লঙ্ঘন এতটাই সাধারণ হয়ে উঠেছিল যে, কেউ আর একে আইনভঙ্গ হিসেবেই ভাবতেন না।

এখন সেই চিরাচরিত ধারণা ভেঙে দিচ্ছে প্রশাসনের অভিযান। অন্য একটি বড় সমস্যা হচ্ছে আবাসিক ভবনের অতিরিক্ত জনসংখ্যা। অনেকে মেয়াদোত্তীর্ণ ভিসায় বসবাস করছেন, কেউ বা অন্যের নামে ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়ে অতিরিক্ত ভাড়ায় অন্যদের সাবলেট দিয়েছেন। অনেক পুরনো, ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে এক কক্ষে পাঁচ ছয়জন গাদাগাদি করে থাকেন, যা শুধু অস্বাস্থ্যকরই নয়, বড় বিপদের কারণও বটে।

সম্প্রতি এক ভবনে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে বহু প্রাণহানির পর প্রশাসন বিষয়টিকে গুরুত্ব সহকারে দেখছে। বলা যায়, এই ঘটনাই চিরুনী অভিযানের তীব্রতা বাড়িয়ে দিয়েছে। বাণিজ্য ও শিল্প মন্ত্রণালয়ের বাণিজ্যিক নিয়ন্ত্রণ ও ভোক্তা সুরক্ষা বিভাগ সম্প্রতি এক অভিযানে ১,০০০ এর বেশি জাল পণ্য জব্দ করেছে। প্রশাসনের দাবি, এসব অভিযান প্রতিদিন চলবে, যতদিন না বাজার ভেজালমুক্ত হয়। এই পদক্ষেপ নিঃসন্দেহে ভোক্তা ও অর্থনীতির জন্য ইতিবাচক।

কারণ জাল ও ভেজাল পণ্য শুধু ক্রেতার ক্ষতি করে না, বরং দেশের সুনামকেও কলঙ্কিত করে। তবে এর মাঝেই দেখা যাচ্ছে বহু দোকান বা গুদামঘরে কাজ করা শ্রমিকরা জানেনই না তারা যে পণ্য বিক্রি করছেন তা আইনবহির্ভূত।

চলমান অভিযানে ট্রাফিক আইনেও কঠোরতা এনেছে কুয়েত সরকার। ফলাফলও মিলছে, দুর্ঘটনা অনেকাংশে কমে এসেছে। তবে কিছু প্রবাসী অভিযোগ করছেন, সামান্য ভুলেও বড় অংকের জরিমানা গুনতে হচ্ছে। কঠোর আইন হয়তো অনেকের কাছে অসুবিধার, কিন্তু এটা অস্বীকার করার উপায় নেই যে শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠার প্রথম শর্তই হলো আইন মেনে চলা।

এর পরিপ্রেক্ষিতে প্রবাসী সমাজে এখন দুটি ভাবধারা স্পষ্ট। এক দল বলছে, অভিযানটি প্রবাসীদের মনে ভয়ের পরিবেশ তৈরি করেছে। অন্য দল বলছে, এই ভয়টাই দরকার ছিল, যাতে সবাই আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়। প্রশাসনেরও বক্তব্য স্পষ্ট আইনের প্রতি শ্রদ্ধা থাকলেই ভয়ের কারণ নেই।

তারা চান, কুয়েত যেন নিরাপদ, শৃঙ্খলাপূর্ণ ও আধুনিক রাষ্ট্রে পরিণত হয়  যেখানে কেউ অবৈধভাবে বসবাস বা ব্যবসা করার সুযোগ না পায়।