
নতুন পোশাক পরিধান করে মাঠে নেমেছেন বাংলাদেশ পুলিশের সদস্যরা। এর মাধ্যমে মহানগর ও বিশেষায়িত ইউনিটে কর্মরত পুলিশ সদস্যদের জন্য নতুন লৌহবর্ণের পোশাকের সূচনা হলো। তবে পুলিশের এই পোশাক নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন নেটিজেন ও সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাক্টিভিস্টরা। কেউ বলছেন আগের পোশাকই ভালো ছিল, আবার কেউ বলছেন, নতুন পোশাকের ডিজাইন হয়েছে অসাধারণ। কেউ আবার প্রশ্ন তুলেছেন, পোশাক বদলালেই কী চাঙ্গা হবে পুলিশের মনোভাব?
শনিবার (১৫ নভেম্বর) থেকে ঢাকা মহানগর পুলিশসহ (ডিএমপি) দেশের সব মহানগর পুলিশ ও বিশেষায়িত ইউনিটের কর্মকর্তারা আনুষ্ঠানিকভাবে এই নতুন পোশাক পরিধান করেছেন। তবে জেলা পর্যায়ের পুলিশ ইউনিট এখনো নতুন পোশাক পায়নি। তবে তারাও পর্যায়ক্রমে নতুন পোশাক পাবেন বলে জানিয়েছেন পুলিশ কর্মকর্তারা।
নতুন পোশাক পরিধান করে অনেক পুলিশ সদস্যই সোশ্যাল মিডিয়ায় ছবি আপলোড করেছেন। অনেক নেটিজেনরাও দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যদের ছবি তুলে আপলোড করেছেন সোশ্যাল মিডিয়ায়। তাতে নানা মন্তব্য করছেন নেটিজেনরা।
কথা সাহিত্যিক ও পুলিশ সুপার রহমান শেলী (মিজানুর রহমান) নতুন পোশাকে ছবি তুলে ফেসবুকে একটি ছবি আপলোড করেছেন। সেখানে ওয়াহিদ খান নামের একজন লিখেছেন, ‘নতুন পোশাক দিয়ে কি পুলিশের মনোবল চাঙ্গা করা যাবে? পুলিশ ও মানুষ কারো বাবা কারো ভাই, তাদেরও দেশের সকল নাগরিকের মতো অধিকার নিশ্চিত করতে হবে। এবং অবশ্যই পুলিশের বেতন বৃদ্ধি করা লাগবে সেটা করা সম্ভব না হলে ঝুঁকি ভাতা বৃদ্ধি করে তাদের চলার মতো ব্যবস্থা করে দিতে হবে। তাহলে আশা করি পুলিশ মানুষের সেবক হতে পারবে। আর এটা তো ইন্ডিয়ান পুলিশের পোশাক এর কালারের কাছাকাছি হলো।’
আবুল কাশেম নামে নামের একজন পুলিশ সদস্য লিখেছেন, ‘স্যার পোশাকটাতে কি যেন কমতি থেকেই গেল, আগেরটা বেস্ট ছিল।’
শাহীন মোহাম্মদ ফয়সাল নামের একজন লিখেছেন, ‘বন্ধু আগেরটা থেকে এই ড্রেসটি অনেক উন্নত মানের। আমার কাছে পছন্দ হয়েছে, ভালো লাগছে দেখতে।’
আখতার খান নামের একজন লিখেছেন, কালার হয়তো আরও ভালো করা যেত। কিন্তু আমার পছন্দ হয়েছে। পছন্দ হয়েছে কারণ আমার প্রত্যাশা হচ্ছে, পুরনো ড্রেস বদলের সাথে সাথে পুরনো সব ধ্যান-ধারণা, বদ অভ্যাস সবকিছুই বদলে যাবে। পুলিশকে যেমন বদলাতে হবে, ঠিক তেমনি জনগণকেও তাদের পুরনো অভ্যাস বদলাতে হবে। মনে রাখতে হবে, দিন শেষে আমাদের সবার নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দায়িত্ব কিন্তু পুলিশেরই। আমরা সবাই যদি নিজ নিজ খারাপগুলো ত্যাগ করতে পারি, নিশ্চয়ই সুদিন আসবেই ইনশাআল্লাহ। তোমার জন্য, তোমাদের জন্য দোয়া রইলো।
অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট পিনাকী ভট্টাচার্য ফেসবুকে পুলিশের জন্য একটি পোশাক প্রস্তাব করে লিখেছেন, ‘পুলিশের নতুন পোশাক যাচ্ছেতাই হইছে। আমাদের আমলারা একেবারেই যে বুদ্ধিহীন এই পোশাক তার প্রমাণ। এদের না আছে বাহিনীর প্রতি ভালোবাসা, দরদ না আছে চিন্তার ক্ষমতা। খাকি বা নীল পোশাকে ঘাম আর ধুলা দেখা যায়। পুলিশের পোশাক এমন হইতে হবে যা একইসাথে আরামদায়ক, পরিচ্ছন্ন ও সাইকোলজিক্যাল ইম্প্যাক্ট তৈরি করতে পারে।’
তিনি লেখেন, ‘আমার মতে টিল কালার সবচেয়ে ভালো হবে বাংলাদেশের জন্য। ঘাম, ধুলার দাগ দেখা যায় না, তাপ শোষণ করে কম। আমাদের স্কিন টোনের সাথে ভালো কন্ট্র্যাস্ট তৈরি করে, শরীরের আউটলাইন ভালো দেখা যায়। স্মার্ট, পরিপাটি ও পরিচ্ছন্ন লুক দেয়, ক্যামেরা ফ্রেন্ডলি, রংটা ক্যামেরায় খুব স্পষ্ট আসে। খুব উজ্জ্বল রঙ পুলিশে মানায় না, খুব গাঁঢ় কালো দেখলে অনেকের চোখে ভীতিকর লাগে। টিল রঙ—দুই দিকের মাঝামাঝি। অথরিটির ভাব আনে আবার জনবান্ধব মনে হয়।’
তিনি আরও লেখেন, ‘রঙ মানুষের মস্তিষ্কে প্রভাব ফেলে। এই কারণেই টিল রঙ এর এই পোশাকে পুলিশকে বিশ্বাসযোগ্য, পেশাদার, দক্ষ আর জনবান্ধব বলে মনে হতো। আমারে জিগাইতেন। কইয়া দিতাম। বিনা পয়সায়। আর কিছু না পারি দুনিয়া সেরা লাইফস্টাইল ব্র্যান্ড নিয়া তো কাজ করি। খুব বেশী বাঙ্গুর তো এই অভিজ্ঞতা নাই। আছে কি?
তার ওই স্ট্যাটাসের কমেন্ট বক্সে আমিন খান নামের একজন লেখেন, ‘পোশাক পরিবর্তনের চেয়ে মানসিকতা পরিবর্তন বেশি জরুরি👍👍’
নূরে আলম নামের একজন লেখেন, পুলিশের পোশাক কালার চেঞ্জ করলে হবে না করতে হবে যেটা সেটা হলো কোন পকেট থাকতে পারবে না।
রেজওয়ান হোসাইন নামের একজন লেখেন, ‘এটা আসলেই সুন্দর লাগছে, মনে হচ্ছে ইউরোপের কোন এক দেশের।’
জহিরুল ইসলাম আকাশ নামের একজন লেখেন, ‘বর্তমানের পোশাকটাই সেরা ছিল। এটা পরিবর্তন করার কোনো মানে হয় না।’