News update
  • 3 killed, 10 injured in Pabna Bus-truck collision     |     
  • UN Chief Appalled as Gaza Crisis Deepens, Aid Blocked     |     
  • Dhaka’s air quality ‘moderate’ also on Friday morning     |     
  • Russia 1st country to recognize Taliban rule in Afghanistan     |     
  • New report seeks reforms for free, pluralistic media in BD     |     

রাষ্ট্রপতির সাধারণ ক্ষমার সীমা নির্ধারণে একমত সব দল

গ্রীণওয়াচ ডেস্ক খবর 2025-07-03, 7:53pm

img_20250703_195053-3e5407761f03f05e9ce52aec0bb372491751550803.jpg




জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর দ্বিতীয় পর্যায়ের আলোচনা চলছে। এরই মধ্যে রাষ্ট্রপতি কর্তৃক সাধারণ ক্ষমার বিষয়ে সীমা নির্ধারণে ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে একমত হয়েছে রাজনৈতিক দলগুলো। কোন কোন ক্ষেত্রে রাষ্ট্রপতি সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করতে পারবেন, তার একটি বিস্তারিত তালিকাও করা হয়েছে। 

বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর দ্বিতীয় পর্যায়ের আলোচনায় এসব ঐকমত্য তৈরি হয়েছে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের।

এদিন বিকেলে আলোচনা শেষে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, রাষ্ট্রপতি কর্তৃক সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার বিষয়ে একটা সীমাবদ্ধতা তৈরিতে একমত হয়েছে রাজনৈতিক দলগুলো। ইনসাফ ও সুষ্ঠু ন্যায় বিচারের স্বার্থে এটি করা হচ্ছে, ক্ষমার ফাঁকে যেন কোনো দুর্বৃত্ত বা দাগি, কোনো খুনি বা আসামি ছাড়া পেয়ে না যায়।

মোহাম্মদ তাহের বলেন, রাষ্ট্রপতি ক্ষমা করতে পারবেন, তবে সেটা ভুক্তভোগী পরিবারের সম্মতির ভিত্তিতে। কোন কোন ক্ষেত্রে রাষ্ট্রপতি বা কমিটি ক্ষমা করতে পারবেন, তা নির্ধারণ করা হয়েছে। এজন্য একটা বডি করা হয়েছে, যার সুপারিশক্রমে রাষ্ট্রপতি ক্ষমা করতে পারবেন। কোন কোন ক্রাইটেরিয়ায় ক্ষমা করতে পারবেন, তার একটা বিস্তারিত তালিকাও করা হয়েছে।

জামায়াতের শীর্ষস্থানীয় নেতা বলেন, আজকে নতুন একটি কথা যুক্ত করা হয়েছে জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে, যা অন্য দলগুলোও সমর্থন করেছে। তা হচ্ছে রাষ্ট্রপতি বা কমিটি রাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্কিত বা সাধারণ যেসব অপরাধ আছে, সেসব ক্ষেত্রে ক্ষমার জন্য চাইলে সুপারিশ করতে পারবেন। কিন্তু, ব্যক্তিগতভাবে কোনো অপরাধের কারণে যদি শাস্তি হয়, যেমন কারো বাবাকে হত্যা করা হয়েছে, এই হত্যার বিচার হয়েছে ফাঁসি। এ ক্ষেত্রে কমিটি বা রাষ্ট্রপতি এককভাবে চাইলে ক্ষমা করতে পারবেন না। সেখানে আমরা বলেছি, ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে অবহিত করতে হবে। কারণ একজনের বাবা খুনের অপরাধে অপরাধীকে অন্য আরেকজন ক্ষমা করতে পারেন না। তবে, ভুক্তভোগীর পরিবার ও প্রতিষ্ঠিত ওয়ারিশ বা উত্তরাধিকারীদের সম্মতির ভিত্তিতে ক্ষমা করা যাবে। ন্যায় বিচার ও ইনসাফভিত্তিক বিচার নিশ্চিত করার জন্য এটি একটি নতুন ডাইমেনশন।

এছাড়া, উচ্চ আদালতের বিচার জনগণের কাছে পৌঁছে দেওয়ার জন্য হাইকোর্টের বেঞ্চকে বিভাগীয় পর্যায়ে সম্প্রসারণ করার ব্যাপারেও ঐকমত্য তৈরি হয়েছে আজকের আলোচনায়। বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের বলেন, আজ দীর্ঘ আলোচনার পর আমরা সবাই একমত হয়েছি যে সংবিধান অনুযায়ী কেন্দ্রীয়ভাবে ঢাকায় সুপ্রিম কোর্ট থাকবে। তবে হাইকোর্টকে ডিসেন্ট্রালাইজ করে বিভাগীয় শহরেও স্থায়ী বেঞ্চ সম্প্রসারণ করা হবে।

এ সম্পর্কে আলোচনার বিষয়বস্তু তুলে ধরে তিনি বলেন, বাংলাদেশে প্রায় ২০ কোটি মানুষ। এই নাগরিকদের পাশাপাশি তাদের সন্তানরা বিচারের আশায় ঢাকা আসেন। তাদের আসা-যাওয়া, থাকা-খাওয়া, অপেক্ষা করার মতো সুযোগ খুব কম মানুষের আছে। এ অবস্থায়, সময় ও জনদাবি অনুযায়ী এটা প্রতিষ্ঠিত যে, বিচার প্রক্রিয়াকে জনগণের দোরগোড়ায় নিয়ে যাওয়া উচিত। এখানে সবাই একমত হয়েছেন। 

তবে, এখানে ২-৩টি সমস্যার কথাও উঠে আসছে বলে জানিয়েছে জামায়াতের এ নেতা। তিনি বলেন, এক্ষেত্রে সমস্যাগুলো হচ্ছে, বিচার ব্যবস্থাকে ডিসেন্ট্রাল করার ক্ষেত্রে অধিক সংখ্যক বিচারপতি পাওয়া যাবে কি না! বিচারপতিরা ঢাকার বাইরে, এলাকায় যাবেন কি না, পটেনশিয়াল আইনজীবীরা এলাকায় গিয়ে প্র্যাকটিস করবেন কি না? এক্ষেত্রে জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, এই মুহূর্তে বিচারপতি ও পটেনশিয়াল আইনজীবী হয়তো কম হবে। তবে এই সংখ্যা যদি পাঁচগুণ বাড়িয়ে দিই, তাহলে বিচারপতি রিক্রুট করতে হবে। মেধাবী তো আছেই। এখন আইনজীবীর সংখ্যা কিন্তু কম নয়। এক কক্সবাজারেই কিন্তু শতাধিক আইনজীবী আছেন, যাদের কেউ কেউ ঢাকায় সুপ্রিম কোর্টে ও হাইকোর্টে প্র্যাকটিস করেন। সরকার যদি কোর্ট পর্যাপ্ত বাড়িয়ে পর্যাপ্ত বিচারপতি নিয়োগ করে, দেশে-বিদেশে প্রশিক্ষণ দেন, তাহলে এ সমস্যা থাকবে না। এজন্য আমরা বাজেট বাড়াতে বলছি। সরকারের তো উচিত মেধাবীদের নিয়োগ করা।

তাহের বলেন, একইভাবে যদি আইনজীবীরা দেখেন তাদের মেধা কাজে লাগানোর সুযোগ এলাকাতেই আছে এবং প্র্যাকটিস করতে পারছেন, তাহলে তো তারা রাজি হবেন। যেমন আগে ডাক্তাররা গ্রামে বা এলাকায় যেতে চাইতেন না, এখন তো যাচ্ছেন। রাষ্ট্র যদি সেই ব্যবস্থা করেন, তাহলে বিচারপতি ও আইনজীবীরাও যাবেন।

জামায়াতের এ নেতা আরও বলেন, সবাই দীর্ঘ আলোচনার পর আমরা একমত হয়েছি যে সংবিধান অনুযায়ী, একই ধরনের কেন্দ্রীয়ভাবে ঢাকায় সুপ্রিম কোর্ট থাকবে। তবে, হাইকোর্টকে ডিসেন্ট্রাল করে বিভাগীয় শহরেও স্থায়ী বেঞ্চকে সম্প্রসারণ করা হবে। ঐকমত্য কমিশনের আলোচনায় নিঃসন্দেহে এটা একটা বড় অর্জন। 

এ সময় এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সার্কিট বেঞ্চ কোনো সমাধান না, আমরা স্থায়ী বেঞ্চের কথা বলেছি। সংবিধানের ১০০ অনুচ্ছেদ সংশোধন করতে হবে। সেই সংশোধনীতে আজকের যে সিদ্ধান্ত, সেটা বাস্তবায়ন করা হবে।