বাঁচা-মরার ম্যাচে ব্যর্থতার করায়াত্ত ভেঙে রানে ফিরেছেন লিটন দাস। শামীম হোসেনকে নিয়ে লড়াইয়ের পুঁজি এনে দিয়েছিলেন দলকে। এরপর শ্রীলঙ্কাকে পেস আগুনে পুড়িয়েছে শরিফুল-সাইফউদ্দিনরা। স্পিনাররাও ছড়ি ঘুরিয়েছেন লঙ্কানদের ওপর। ফলে এদিনে আর জয় অধরা থাকেনি। বড় ব্যবধানে হারিয়ে সিরিজে সমতা ফেরাল বাংলাদেশ।
রোববার (১৩ জুলাই) ডাম্বুলায় দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে আগে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে ১৭৭ রানের পুঁজি দাঁড় করায় বাংলাদেশ। লক্ষ্য তাড়ায় নেমে ১৫.২ ওভারে ৯৪ রান তুলতেই গুটিয়ে গেছে শ্রীলঙ্কা। ৮৩ রানের বড় জয়ে তিন ম্যাচ সিরিজে ১-১ ব্যবধানে সমতা ফেরাল টাইগাররা।
বোলিংয়ে নেমে দ্বিতীয় ওভারেই বাংলাদেশকে ব্রেক-থ্রু এনে দেন শামীম হোসেন। দুর্দান্ত এক থ্রোতে ফেরান বাংলাদেশের মাথাব্যাথার কারণ কুশাল মেন্ডিসকে। ফেরার আগে ৫ বলে ৮ রান করেন তিনি।
পরের ওভারেই লঙ্কান শিবিরে হানা দেন শরিফুল ইসলাম। দুর্দান্ত ক্যাচ নেন রিশাদ হোসাইন। রানের খাতা খোলার আগেই ফেরেন কুশাল পেরেরা। আভিস্কা ফার্নান্দোকেও উইকেটে দাঁড়াতে দেননি শরিফুল। পরের ওভারে এসে শামীম হোসেনের ক্যাচ বানান তাকে। ফেরার আগে ৫ বলে ২ রান করেন তিনি।
এরপর পাওয়ার-প্লের আগের ওভারে অধিনায়ক চারিথ আসালাঙ্কাকে ফিরিয়ে লঙ্কানদের ব্যাকফুটে ঠেলে দেন সাইফউদ্দিন। উইকেটের পেছনে ক্যাচ নেন লিটন দাস। প্রথমে আম্পায়ার আউট না দিলেও রিভিউ নিলে সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করেন আম্পায়ার।
বাকিদের যাওয়া-আসার ভিড়ে পঞ্চম উইকেটে ৪১ রানের জুটিতে প্রতিরোধ গড়ার চেষ্টা করেন দাসুন শানাকা আর পাথুম নিশাঙ্কা। ১১তম ওভারে নিশাঙ্কাকে ফিরিয়ে সেই আশায় জল ঢেলে দেন রিশাদ হোসাইন। ফেরার আগে ২৯ বলে ৩২ রান করেন তিনি।
ইনিংসে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান করা শানাকাকে ফিরিয়ে লঙ্কানদের কোমড় ভেঙে দেন মেহেদী হাসান মিরাজ। বাকিরা বাংলাদেশের বোলিং তোপে আর দাঁড়াতেই পারেনি উইকেটে। গুটিয়ে যায় ৯৪ রানে।
এর আগে টসে হেরে ব্যাট করতে নেমে এদিনও শুরুটা ভালো হয়নি বাংলাদেশের। রানের খাতা খোলার আগেই ফিরে যান ওপেনার পারভেজ হোসেন ইমন। ম্যাচের দ্বিতীয় ওভারে একই পথে হাটেন আরেক ওপেনার তানজিদ হাসান তামিম। ৮ বলে ৫ রান করে ফেরেন তিনি।
তৃতীয় উইকেটে লিটন দাস আর তাওহিদ হৃদয়ের ৫৫ বলে ৬৯ রানের জুটিতে সেই ধাক্কা কাটিয়ে ওঠে বাংলাদেশ। এরপর অবশ্য আরও একটি বিপর্যয় দেখে বাংলাদেশ। ১২তম ওভারের প্রথম বলেই ২৫ বলে ৩১ রান করে ফেরেন হৃদয়। চতুর্থ বলে স্কুপ করতে গিয়ে ১ রান করে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন মেহেদী হাসান মিরাজ।
একপ্রান্ত আগলে রাখা লিটন এরপর জুটি বাঁধেন শামীম হোসেনের সঙ্গে। পঞ্চম উইকেট জুটিতে খোলস থেকে বেড়িয়ে চালিয়ে খেলেন দুজন। ৩৯ বলে ৭৭ রান আসে এই জুটিতে। ৫০ বলে ৭৬ রান করে লিটন ফিরলে ভাঙে এই জুটি। হাত খুলে খেলতে থাকা শামীম শেষ ওভারে ফেরার আগে করেন ২৭ বলে ৪৮ রান।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
বাংলাদেশ: ২০ ওভারে ১১৭/৭ (ইমন ০, তামিম ৫, হৃদয় ৩১, মিরাজ ১, লিটন ৭৬, জাকের ৩, শামীম ৪৮, রিশাদ ০*, সাইফউদ্দিন ৬*; থুষারা ৪-০-৩০-১, বিনুরা ৪-০-৩১-৩, শানাকা ২-০-২৩-০, থিকসানা ৪-০-৩০-১, ভ্যানডেরসি ৪-০-৪০-০, করুনারত্নে ২-০-১৮-০)
শ্রীলঙ্কা: ১৫.২ ওভারে ৯৪/১০ (নিশাঙ্কা ৩২, কুশাল মেন্ডিস ৮, কুশাল পেরেরা ০, আভিস্কা ২, আসালাঙ্কা ৫, শানাকা ২০, করুনারত্নে ০, ভ্যানডারসি ৮, থিকসানা ৬, বিনুরা ৬, থুষারা ০*; শরিফুল ৩-০-১২-২, সাইফউদ্দিন ৩-০-২১-২, মুস্তাফিজ ৩-০-১৪-১, মিরাজ ৩-০-২৬-১, রিশাদ ৩.২-০-১৮-৩)